শব্দভিত্তিক বাগধারা

সর্বশেষ আপডেট:

অন্ধ:

  • অন্ধের নড়ি – অসহায়ের সহায়, অক্ষমের অবলম্বন
  • অন্ধের যষ্ঠি – অসহায়ের সহায়, অক্ষমের অবলম্বন

আকাশ:

  • আকাশকুসুম – অলীক কল্পনা
  • আকাশ ধরা – বৃষ্টি থেমে আসা
  • আকাশ ভেঙে পড়া – হঠাৎ মহাবিপদে পড়া
  • আকাশে তোলা – অতিরিক্ত প্রশংসা করা
  • আকাশের চাঁদ – দুর্লভ বস্তু

আগুন:

  • কুল কাঠের আগুন – তীব্র জ্বালা
  • ছাইচাপা আগুন – সুপ্ত প্রতিভা, গোপন গুণ
  • তুষের আগুন / তুষানল – (যা সহজে নেভে না) দীর্ঘস্থায়ী অন্তর্জ্বালা বা দুঃখ
  • মুখে আগুন – মৃত্যু কামনাসূচক তিরস্কার

আদা:

  • আদা জল খেয়ে লাগা – প্রাণপণ চেষ্টা করা
  • আদায়-কাঁচকলায় – পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন
  • আদার ব্যাপারী – ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সামান্য বিষয়ে ব্যস্ত ব্যক্তি

কচু:

  • কচুকাটা করা – কচুর মতো নির্বিচারে কাটা, নির্মূল করা
  • কচুপোড়া – অখাদ্য
  • কচুপোড়া খাওয়া – প্রত্যাশা করে বিফল হওয়া
  • কচু বনের কালাচাঁদ

কপাল, ললাট:

  • আটকপালে – অভাগা, হতভাগ্য, পোড়াকপালে
  • ইঁদুর কপালে – নিতান্ত মন্দ ভাগ্য
  • কপাল চাপড়ানো – নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা করা
  • কপাল পোড়া – নষ্ট হওয়া, দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটা। হতভাগ্য
  • কপাল ফাঁটা – অদৃষ্ট মন্দ হওয়া
  • কপাল ফেরা – অবস্থার উন্নতি হওয়া, সৌভাগ্যের সূচনা হওয়া, সৌভাগ্য লাভ
  • কপাল ভাঙা – দুর্ভাগ্যের কবলে পড়া
  • কপালজোর – ভাগ্যের আনুকূল্য
  • কপালের লিখন – ভাগ্যলিপি
  • খণ্ডকপালে – দুর্ভাগা
  • চাঁদকপালি/চাঁদকপালে – ভাগ্যবান
  • চোখ কপালে তোলা – বিস্মিত হওয়া
  • ছাই কপালে – ভাগ্যহীন, দুর্ভাগা
  • ললাটের লিখন / ললাটলিখন – ভাগ্যলিপি

কলা:

  • আদায়-কাঁচকলায় – পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন
  • কলা দেখানো – প্রতারণা করা, ফাঁকি দেওয়া
  • রথ দেখা ও কলা বেচা – একই যাত্রায় একাধিক উদ্দেশ্যসিদ্ধি (মেলায় গিয়ে একইসঙ্গে রথদর্শন করে পুণ্য অর্জন এবং কলা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন)
  • ষোলোকলা – সম্পূর্ণভাবে, পুরোপুরি

কাক:

  • কাকতালীয় – পরস্পর সম্বন্ধহীন দুটি ঘটনা একত্রে ঘটেছে এমন
  • কাকতালীয় ব্যাপার – কার্যকারণহীন ঘটনা
  • কাকনিদ্রা/কাকতন্দ্রা – সতর্ক ও অগভীর ঘুম, কপট ঘুম
  • কাকভূশণ্ডি – বয়োবৃদ্ধ অভিজ্ঞ ব্যক্তি। সম্পূর্ণ ভেজা
  • কাকভোর – খুব সকাল
  • কাকস্নান – অল্প জলে স্নান
  • ঝড়ো কাক – দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি
  • তীর্থের কাক / তীর্থকাক – অনুগ্রহের জন্য প্রতীক্ষমাণ ব্যক্তি, সাগ্রহে প্রতীক্ষাকারী
  • ভূশণ্ডি – বয়োবৃদ্ধ বহুদর্শী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি
  • ভূশণ্ডির কাক – দীর্ঘজীবী

কান, কর্ণ:

  • কানকথা – কানে কানে বলা কথা, গোপন মন্ত্রণা
  • কানকাটা – নির্লজ্জ, বেহায়া
  • কান খাড়া করা – একাগ্র হয়ে শোনার চেষ্টা করা, মনোযোগী হওয়া
  • কান দেওয়া – কর্ণপাত করা, মনঃসংযোগ করা
  • কানপাতলা – শোনাকথায় প্রভাবিত হয় এমন
  • কান পাতা – শোনার জন্য উদ্‌গ্রীব হওয়া। গোপনে শোনা, আড়ি পাতা
  • কানফাটা – কানের পর্দা ফাটানোর মতো উচ্চ আওয়াজবিশিষ্ট
  • কানভাঙানি – অন্যের সম্পর্কে কুপরামর্শ দান
  • কানভাঙানো – কুমন্ত্রণা দেওয়া
  • কান ভারী করা – কুপরামর্শ দেওয়া
  • কান মলা – কর্ণ মর্দন করা। অপমানিত করা, অপদস্থ করা
  • কানে কানে – চুপিচুপি, গোপনে
  • কানে খাটো – কানে কম শুনতে পায় এমন ব্যক্তি
  • কানে তুলো দেয়া – ভ্রুক্ষেপ না করা
  • কানে তোলা – কোনো কথা উত্থাপন করা
  • কানে লাগা – শ্রুতিকটু ঠেকা
  • চক্ষু কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন – নিঃসন্দেহ হওয়া
  • দুকান কাটা – নির্লজ্জ, বেহায়া

কাঁটা:

  • কাঁটা করা – ওজন করা
  • কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা – ব্যথার উপর ব্যথা দেয়া
  • কাঁটার জ্বালা – অসহ্য দুঃখ
  • কাঁটা তোলা – শত্রু দমন করা
  • কাঁটা দেওয়া – ভয়ে রোমাঞ্চিত বোধ করা
  • কাঁটায় কাঁটায় – যথাসময়ে
  • কাঁটা হওয়া – ভয়ে সংকুচিত হওয়া, শিউরে ওঠা
  • গায়ে কাঁটা দেওয়া – রোমাঞ্চের উদ্রেক হওয়া

কুমির:

  • খাল কেটে কুমির আনা
  • ঘরের ঢেঁকি কুমির – বলিষ্ঠ ও ভোজনপটু অথচ অলস
  • জলে কুমির ডাঙায় বাঘ – উভয়সংকট
  • টাকার কুমির – বিত্তশালী ব্যক্তি

গরু/গোরু, ষাঁড়, বলদ:

  • ক-অক্ষর গোমাংস – অশিক্ষিত ব্যক্তি, বর্ণপরিচয়হীন
  • গোবরগণেশ – গোবরের তৈরি গণেশমূর্তির মতো অকর্মণ্য। ব্যক্তিত্বহীন ও নির্বোধ
  • গোবরে পদ্মফুল
  • গোবৈদ্য – হাতুড়ে ডাক্তার। আনাড়ি চিকিৎসক (আক্ষরিক অর্থ পশুচিকিৎসক)
  • গোমূর্খ – গোরুর মতো নির্বোধ। অক্ষর পরিচয়হীন
  • গোরু খোঁজা
  • গোরু মেরে জুতা দান
  • বাঘে গোরুতে এক ঘাটে জল খাওয়া
  • কলুর বলদ – বলদের মতো নীরবে পরিশ্রম করে এমন চিন্তাশক্তিহীন ব্যক্তি। একটানা খাটুনি
  • চিনির বলদ – ভারবাহী কিন্তু ফল লাভের অংশীদার নয়, যে ব্যক্তি অন্যের সুখের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে কিন্তু নিজে সুখ ভোগ করতে পারে না
  • গোকুলের ষাঁড় – বৃন্দাবনের ষাঁড়ের মতো ঘুরে বেড়ায় এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি, ভবঘুরে
  • ধর্মের ষাঁড় – স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি, অকর্মণ্য
  • ষণ্ডামর্ক – বলিষ্ঠ ও গোঁয়ার প্রকৃতির ব্যক্তি, অতি দুর্বৃত্ত ব্যক্তি
  • ষণ্ডা মার্কা – (পাওয়া যায়নি)
  • ষাঁড়ের গোবর

গা (শরীর):

  • গা করা – গরজ করা, আগ্রহ প্রকাশ করা
  • গা কাঁপা – ভীত হওয়া
  • গা গতর – সর্বাঙ্গ, সমস্ত দেহ
  • গা গরম – অল্প জ্বর
  • গা গুলানো – বমির উদ্রেক হওয়া
  • গা ঘেঁষা – অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করা
  • গা ছমছম – ভয়ের অনুভূতি
  • গা-ছাড়া – আগ্রহহীন। ঢিলেঢালা ভাব
  • গা জুড়ানো – ক্লান্তি বা জ্বালাযন্ত্রণা দূর হওয়া। স্বস্তি পাওয়া। বমির উদ্রেক হওয়া, গা-গুলানো
  • গা-জুরি করা – গায়ের জোরে কথা বলা, অন্যায় কথা বলা
  • গা জ্বালা করা – ঈর্ষা বা বিরক্তির সৃষ্টি হওয়া
  • গা ঢাকা দেওয়া – আত্মগোপন করা, অদৃশ্য হওয়া
  • গা তোলা – শয্যাত্যাগ করা
  • গা ধোয়া – গোসল করা
  • গা-মোড়া – আড়মোড়া ভাঙা
  • গায়ে কাঁটা দেওয়া – রোমাঞ্চের উদ্রেক হওয়া। ভয়ে শিউরে ওঠা
  • গায়ে দেওয়া – পরিধান করা
  • গায়ে পড়া – অযাচিতভাবে আলাপ করা, অনধিকার চর্চা করা
  • গায়েপড়া – উপরপড়া
  • গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো – কোনো দায়িত্ব গ্রহণ না করা
  • গায়ে মাখা – গ্রাহ্য করা, আমলে নেওয়া
  • গায়ে মাংস/মাস লাগা – স্বাস্থ্য ভালো হওয়া
  • গায়ের জ্বালা – গাত্রদাহ, ঈর্ষা, হিংসা
  • গায়ে সওয়া – অভ্যস্ত হওয়া
  • গায়ে সহা – গায়ে সওয়া দ্রষ্টব্য
  • গায়েহলুদ – বিয়ের আগে পাত্রপাত্রীর গায়ে হলুদ লেপনের অনুষ্ঠানবিশেষ
  • গায়ে হাত তোলা – প্রহার করা, মারধর করা

ঘোড়া:

  • গরিবের ঘোড়া রোগ
  • ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া
  • ঘোড়ারোগ – সাধ্যাতীত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করার প্রবৃত্তি
  • ঘোড়ার ঘাস কাটা
  • ঘোড়ার ডিম – অলীক বস্তু, অসার বা অসম্ভব বস্তু, কিছুই না
  • রাজঘোটক

চাঁদ:

  • অর্ধচন্দ্র – গলাধাক্কা, অপমান করে বিতাড়ন
  • মুখচন্দ্র – চাঁদের মতো সুন্দর মুখ
  • অমাবস্যার চাঁদ – দুর্লভ বস্তু
  • আকাশের চাঁদ – দুর্লভ বস্তু
  • ঈদের চাঁদ – অতি আকাঙ্ক্ষিত বস্তু
  • কচু বনের কালাচাঁদ
  • চাঁদকপালি/চাঁদকপালে – ভাগ্যবান
  • চাঁদ হাতে পাওয়া – আশাতীত দুর্লভ বস্তু পাওয়া
  • চাঁদের হাট – প্রিয়জনের সমাগম। আনন্দের প্রাচুর্য
  • নদের চাঁদ – সুবেশধারী এবং অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তি, সুন্দর ব্যক্তি অথচ অপদার্থ, অহমিকাপূর্ণ নির্গুণ ব্যক্তি (আক্ষরিক অর্থ:- নদিয়ার চাঁদরূপ গৌরবময় ব্যক্তি)
  • লগন চাঁদ

চোখ, চক্ষু:

  • চক্ষু কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন – নিঃসন্দেহ হওয়া
  • চক্ষু চড়কগাছ – বিস্ময়ে চোখ বড় হওয়া
  • চক্ষুদান করা – চুরি করা
  • চক্ষুলজ্জা – লোকলজ্জা
  • চক্ষের পুতলি – আদরের ধন
  • চশমখোর – চক্ষুলজ্জাহীন (চশম অর্থ হলো চোখ, চক্ষু, আঁখি)
  • চোখ ওঠা/উঠা – চোখের প্রদাহজনিত ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হওয়া
  • চোখ ওলটানো/উলটানো – অকৃতজ্ঞতার ভাব প্রকাশ করা
  • চোখ কপালে তোলা – বিস্মিত হওয়া
  • চোখ খাওয়া – দৃষ্টিশক্তি হারানো
  • চোখ খোলা – জেগে ওঠা
  • চোখ ঘুরানো/ঘোরানো – রেগে তাকানো
  • চোখ ছলছল করা – অশ্রুসিক্ত হওয়া
  • চোখ ছানাবড়া – ভয় বা বিস্ময়জনিত চোখের স্ফীতি
  • চোখ ঝলসানো – তীব্র আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে ওঠা। রূপে মুগ্ধ হওয়া
  • চোখ ঝাঁ ঝাঁ করা – চোখ ঝলসানো দ্রষ্টব্য
  • চোখ টাটানো – চোখে বেদনা অনুভব করা। অন্যের শ্রীবৃদ্ধিতে ঈর্ষান্বিত হওয়া
  • চোখ টেপা – চোখ দিয়ে ইঙ্গিত করা
  • চোখ ঠারা – চোখ কুঁচকে ইশারা করা
  • চোখ দেওয়া – ঈর্ষার দৃষ্টিতে তাকানো। কুনজর দেওয়া
  • চোখ নাচা – চোখের পাতা স্পন্দিত হওয়া
  • চোখ পড়া – মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়া। (অসাধু উদ্দেশ্যে) কোনো কিছুর প্রতি নজর পড়া
  • চোখ পাকানো – ক্রুদ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করা, রেগে তাকানো
  • চোখ ফোটা – প্রকৃত অবস্থা জানতে পারা
  • চোখ বুলানো/বোলানো – মনোযোগ না দিয়ে দ্রুত পড়া
  • চোখ বোজা – মৃত্যুবরণ করা। আমলে না আনা
  • চোখ মটকানো – চোখ টিপে ইঙ্গিত করা
  • চোখ মারা – এক চোখ বন্ধ করে অশালীন ইঙ্গিত করা
  • চোখ রাখা – তত্ত্বাবধান করা। সতর্ক থাকা। মনোযোগী হওয়া
  • চোখ রাঙানো – রেগে কোনো কিছুর দিকে তাকানো। ভীতি প্রদর্শন করা
  • চোখে চোখে কথা – চোখের ইশারায় পরস্পর ভাববিনিময়
  • চোখে চোখে রাখা – সতর্ক পাহারায় রাখা
  • চোখে ঠুলি দেওয়া – দেখেও না দেখার ভান করা, উদাসীন থাকা
  • চোখে ধরা – পছন্দ হওয়া, মনে রেখাপাত করা
  • চোখে ধুলো দেওয়া – প্রকৃত তথ্য গোপন করে প্রতারণা করা
  • চোখের দেখা – ক্ষণিকের তরে দেখা
  • চোখের নেশা – কেবল চোখে দেখার বাসনা, রূপের মোহ
  • চোখের পর্দা / চোখের চামড়া – চক্ষুলজ্জা (চোখের পাতা)
  • চোখের পলক – নিমেষ, ক্ষণকাল
  • চোখের পাতা – চোখের ওপরের চামড়া। লজ্জা
  • চোখের বালি – শত্রু, চক্ষুশূল, অপ্রিয় ব্যক্তি
  • চোখের ভুল – দেখার ভুল
  • চোখের মণি – অত্যন্ত প্রিয় বস্তু
  • চোখের মাথা খাওয়া – দৃষ্টিশক্তি হারানো
  • চোখে সরষেফুল দেখা – বিপদে পড়ে দিশেহারা হওয়া
  • বাঘের চোখ

ছাই:

  • ছাই কপালে – ভাগ্যহীন, দুর্ভাগা
  • ছাইচাপা আগুন – সুপ্ত প্রতিভা

ঢেঁকি:

  • ঘরের ঢেঁকি কুমির – বলিষ্ঠ ও ভোজনপটু অথচ অলস
  • চাল না চুলো, ঢেঁকি না কুলো – নিতান্ত নিঃস্ব
  • ঢেঁকি গেলা – গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করতে বাধ্য হওয়া
  • ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে – সহজে মন্দভাগ্যের পরিবর্তন হয় না এই অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত প্রবাদ
  • ঢেঁকির কচকচি
  • বুদ্ধির ঢেঁকি – স্থূলবুদ্ধি, নির্বোধ

দশা:

  • ত্রিশঙ্কু দশা – অনিশ্চিত অবস্থা
  • নবমী দশা – মূর্ছা। মোহ
  • রাহুর দশা – দুঃসময়, অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা
  • শনির দশা – অতিশয় দুঃসময় বা অশুভকাল, দুর্দশা

দাঁত:

  • করাতের দাঁত – উভয়সংকট
  • দুধদাঁত – অল্প বয়সে গজানো অস্থায়ী দাঁত
  • দেঁতো হাসি – কৃত্রিম হাসি

পায়রা:

  • সুখের পায়রা
  • লঙ্কা পায়রা

পুতুল:

  • কাঠের পুতুল – নির্জীব, অসার
  • চিনির পুতুল – শ্রমকাতুরে
  • ননির পুতুল – শ্রমবিমুখ, অকর্মণ্য
  • হাতের পুতুল – যাকে দিয়ে ইচ্ছামতো কাজ করানো যায়

বাঘ:

  • কাগুজে বাঘ – কেবল কাগজেই আছে কিন্তু বাস্তবে অস্তিত্ব নেই এমন
  • জলে কুমির ডাঙায় বাঘ – উভয়সংকট
  • তুলসীবনের বাঘ – সাধুরূপে পরিচিত অসাধু ব্যক্তি, ভণ্ড
  • বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়া
  • বাঘের আড়ি – নাছোড়বান্দা, দুশমনি
  • বাঘের চোখ
  • বাঘের দুধ / বাঘের চোখ
  • বাঘের মাসি – আরামপ্রিয় ব্যক্তি
  • যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে রাত হয়
  • রায়বাঘিনি – বড়ো বাঘিনি। অতিশয় উগ্র ও তেজস্বী নারী

বিড়াল:

  • বিড়ালতপস্বী – সাধুর ছদ্মবেশে কপট ব্যক্তি, ভণ্ড লোক
  • বিড়ালের আড়াই পা
  • বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়া
  • বিদুরের খুদ – ভক্তিভরে প্রদত্ত দরিদ্রজনের দান (অশ্রদ্ধার সঙ্গে প্রদত্ত কুরুরাজ দুর্যোধনের রাজভোগ প্রত্যাখ্যান করে বিদুর প্রদত্ত যে খুদ কৃষ্ণ ভক্ষণ করেছিলেন)
  • ভিজাবিড়াল / ভিজে বিড়াল – আপাতদৃষ্টিতে বৃষ্টিতে ভেজা বিড়ালের মতো নিরীহ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে দুষ্টপ্রকৃতির লোক, ভণ্ড
  • মেনিমুখো – মুখচোরা। ভালো মানুষের ভান করে এমন, কপট (মেনি অর্থ বিড়ালী)

ব্যাঙ:

  • কুনো ব্যাং – সীমিত জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, ঘরকুনো ব্যক্তি
  • কূপমণ্ডুক – ঘরকুনো, সীমাবদ্ধ জ্ঞানসম্পন্ন, সংকীর্ণচেতা ব্যক্তি
  • ব্যাঙের আধুলি
  • ব্যাঙের ছাতা – ছত্রাকজাতীয় উদ্ভিদবিশেষ, মাশরুম, mushroom
  • ব্যাঙের সর্দি

মুখ:

  • ঘরমুখী/ঘরমুখো – গৃহাসক্ত
  • দু মুখো সাপ – দুজনকে দুরকম কথা বলে শত্রুতা সৃষ্টিকারী
  • পঞ্চমুখ – মুখর
  • মেনিমুখো – মুখচোরা। ভালো মানুষের ভান করে এমন, কপট (মেনি অর্থ বিড়ালী)
  • মুখ-আলগা – ভালোমন্দ নির্বিশেষে যা মুখে আসে তাই বলে এমন
  • মুখ উজ্জ্বল করা – গৌরবমণ্ডিত করা
  • মুখ খিঁচানো – ভ্যাংচানো। বিকৃত মুখভঙ্গি সহকারে তিরস্কার করা
  • মুখ খিস্তি – অশ্লীল বাক্য, গালাগালি
  • মুখ খোলা – প্রতিবাদ করা। প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা
  • মুখচন্দ্র – চাঁদের মতো সুন্দর মুখ
  • মুখ চলা – অনর্গল কথা বলা। বিরামহীনভাবে খাওয়া। তিরস্কার করা
  • মুখ চাওয়া – প্রত্যাশি হওয়া। সম্মান করা
  • মুখ চুন – মলিন মুখ
  • মুখচোরা – অল্প কথা বলে এমন, লাজুক
  • মুখ তোলা – প্রসন্ন দৃষ্টিপাত করা
  • মুখ থাকা – সম্মান রক্ষা হওয়া
  • মুখ দেখা – বিবাহে পাত্রী দেখে আশীর্বাদ করা
  • মুখ ফোটা – কথা বলা
  • মুখ ফোলানো – মুখ গোমড়া করা
  • মুখবন্ধ – ভূমিকা, অবতরণিকা
  • মুখ বুজে সহ্য করা – নীরবে সহ্য করা
  • মুখ ভার করা – মুখ গম্ভীর করা, বিরূপ ভাব প্রকাশ করা
  • মুখরক্ষা – সম্মান বা মর্যাদা রক্ষা
  • মুখ রাখা – সম্মান রক্ষা করা
  • মুখরোচক – সুস্বাদু
  • মুখ শুকানো – মুখমণ্ডল বিবর্ণ বা ম্লান হওয়া
  • মুখ সামলানো – সতর্ক হয়ে কথা বলা
  • মুখ সিটকানো – ঘৃণা বিতৃষ্ণা বা অপছন্দ হওয়ার কারণে মুখ বিকৃত করা
  • মুখ হওয়া – গালিগালাজ করতে অভ্যস্ত হওয়া
  • মুখিয়ে থাকা – ব্যাকুল হয়ে থাকা
  • মুখে আগুন – মৃত্যু কামনাসূচক তিরস্কার
  • মুখেমুখে – মৌখিকভাবে, অলিখিতভাবে। মুখের ওপর, তৎক্ষণাৎ
  • মুখের ওপর – সামনাসামনি। সঙ্গে সঙ্গে, তৎক্ষণাৎ
  • মুখোমুখি – সামনাসামনি
  • মুখে দুধের গন্ধ
  • মুখে ফুলচন্দন পড়া

মেঘ:

  • বিনা মেঘে বজ্রপাত – আকস্মিক বিপদ
  • মেঘ করা – মেঘে আকাশ ঢেকে যাওয়া
  • মেঘ না চাইতেই জল
  • মেঘে মেঘে বেলা হওয়া

লেজ:

  • লেজেগোবরে করা
  • লেজে পা পড়া
  • শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়া

সাপ:

  • অহিনকুল সম্পর্ক/ সম্বন্ধ – শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক
  • কেঁচো খুড়তে সাপ
  • দু মুখো সাপ – দুজনকে দুরকম কথা বলে শত্রুতা সৃষ্টিকারী
  • সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে
  • সাপে-নেউলে – পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন
  • সাপের ছুঁচো গেলা
  • সাপের ছুঁচো পা দেখা
  • সাপের পাঁচ পা দেখা

সেপাই:

  • তালপাতার সেপাই – লম্বা ও অত্যন্ত কৃশ ব্যক্তি, অতিশয় রোগা ও দুর্বল ব্যক্তি
  • নামকাটা সেপাই – কর্মচ্যুত ব্যক্তি

হাত:

  • কাঁচা হাত – অপক্ব
  • গায়ে হাত তোলা – প্রহার করা, মারধর করা
  • চাঁদ হাতে পাওয়া – আশাতীত দুর্লভ বস্তু পাওয়া
  • ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা
  • ছেলের হাতের মোয়া
  • ডান হাতের ব্যাপার – খাওয়া, ভোজন
  • বাম/বাঁ হাতের ব্যাপার – ঘুস গ্রহণ
  • মাথায় হাত – হতাশা বিস্ময় প্রভৃতি কারণে হতচকিতবোধ
  • মাথায় হাত বুলানো – কৌশলে বা ফাঁকি দিয়ে কার্যসিদ্ধির চেষ্টা করা। আদর করা
  • হাত আসা – অভ্যাস বা রপ্ত হওয়া
  • হাত ওঠানো – প্রহার করতে উদ্যত হওয়া
  • হাত কচলানো – ক্রমাগত দুই হাত রগড়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করা
  • হাত করা – বশে আনা, আয়ত্ত করা। হস্তগত করা
  • হাতকষা – কৃষণ
  • হাত কামড়ানো – বঞ্চিত হয়ে আফসোস করা
  • হাতখরচ – বিবিধ ব্যক্তিগত ব্যয়
  • হাতখালি – নিঃস্ব
  • হাতখালি করা – রিক্তহস্ত বা নিঃস্ব হওয়া
  • হাতখোলা – মুক্তহস্ত। দাতা, দানশীল
  • হাত গুটানো – নিরস্ত হওয়া, নিজেকে যুক্ত না করা
  • হাত গোনা – হাতের রেখা দেখে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা
  • হাত চলা – প্রহার করা
  • হাত চালা – চোর ধরার জন্য কল্পিত মন্ত্রবলে হাত চালনা করা
  • হাত চালানো
  • হাতচিঠা – প্রাপ্তিস্বীকারপত্র, রসিদ
  • হাত চুলকানো – কোনো কিছু করার জন্য আস্থিরতা প্রকাশ করা
  • হাতছাড়া – অধিকারচ্যুত, বেহাত
  • হাতছানি – হাত নেড়ে ইঙ্গিত প্রদান। আহ্বান
  • হাতজোড় করা – মিনতি করা।
  • হাত জোড়া থাকা
  • হাতটান – কৃপণতা, কিপটেমি। ছিঁচকে চুরির অভ্যাস
  • হাততোলা – প্রহার করতে উদ্যত হওয়া
  • হাত দিয়ে হাতি ঠেলা
  • হাত দেওয়া – সূচনা করা
  • হাত দেখা – হাতের তালুর রেখা দেখে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা
  • হাত ধরা – নির্ভর করা
  • হাতধরা – বশীভূত, অধীন, বশবর্তী
  • হাত ধুয়ে বসা
  • হাত ধোয়া – সংস্রব ত্যাগ করা
  • হাত পাকানো – অভ্যাসদ্বারা দক্ষতা অর্জন করা
  • হাত-পা ছেড়ে দেওয়া – নিশ্চেষ্ট হওয়া, হতাশ হওয়া
  • হাত পাতা – সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা চাওয়া
  • হাতবদল – হস্তান্তর
  • হাত বাড়ানো – লোভ করা
  • হাতভারী – কৃপণ, ব্যয়কুণ্ঠ
  • হাত লাগানো – কাজে প্রবৃত্ত হওয়া
  • হাতসাফাই – চুরি। হাতের ছলাকলা, হাতের পটুতা
  • হাতেকলমে – নিজ হাতে বা প্রত্যক্ষভাবে
  • হাতেখড়ি – কোনো কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা
  • হাতেখোলা – সর্বস্বান্ত হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন
  • হাতে গড়া – হাতে তৈরি করা
  • হাতে ধরা – বিশেষভাবে অনুরোধ বা মিনতি করা
  • হাতেনাতে – অপরাধের প্রমাণ-সহ
  • হাতে পাওয়া – আয়ত্তে পাওয়া
  • হাতের পাঁচ – শেষ সম্বল
  • হাতের পুতুল – যাকে দিয়ে ইচ্ছামতো কাজ করানো যায়
  • হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা
  • হাতে হাতে – সঙ্গে সঙ্গে, তৎক্ষণাৎ

হাড়:

  • হাড় কালি হওয়া – অত্যন্ত দুঃখকষ্ট ভোগ করা। অতিরিক্ত পরিশ্রমে নির্জীব হয়ে পড়া
  • হাড়কিপটে – অতি কৃপণ স্বভাববিশিষ্ট, হাড়কৃপণ
  • হাড়কৃপণ – অতি কৃপণ স্বভাববিশিষ্ট, হাড়কিপটে
  • হাড়জিরজিরে – কঙ্কালসার
  • হাড় জুড়ানো – স্বস্তি লাভ করা, শান্তি পাওয়া
  • হাড় জ্বালানো – ক্রমাগত জ্বালাতন করা
  • হাড়জ্বালানো – সারাক্ষণ জ্বালাতন বা উপদ্রব করে এমন
  • হাড়পাকা – পাকামিতে সিদ্ধহস্ত
  • হাড়ভাঙা – কঠোর ও শ্রমসাধ্য
  • হাড়হদ্দ – আগাগোড়া। নাড়িনক্ষত্র
  • হাড়হাভাতে – সম্পূর্ণ নিঃস্ব, লক্ষ্মীছাড়া
  • হাড়ে দূর্বা গজানো
  • হাড়ে বাতাস লাগা
  • হাড়ে হাড়ে চেনা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।