পানাহারের আদবসমূহ

সর্বশেষ আপডেট:

মানুষ, পশুপাখি সকল জীবই খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। একজন মুমিন-মুসলমানের সাথে অন্যদের খাবার খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পশুপাখিসহ সাধারণ মানুষের জন্য যেটা ক্ষুধা নিবারণের উপায় মাত্র, সেটা মুমিনের ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হয়। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নির্দেশ আর হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুযায়ী যেকোনো কাজই ইবাদত হিসেবে গণ্য আর সওয়াব লাভের উপায়।

শুরুর আগে:

আল্লাহ তাআলার আদেশ, “তোমরা খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।” (সূরা আ’রাফ, আয়াত ৩১)। সুতরাং আল্লাহর আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে এবং ইবাদত মনে করে খেতে হবে।

দু্ই, খাদ্য সংগ্রহের মাধ্যম, অর্থাৎ উপার্জন হালাল হতে হবে। এছাড়া উপকরণ, প্রক্রিয়াকরণ, রন্ধন ইত্যাদি সবকিছুই হালাল হতে হবে।

তিন, খাবারের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী খাবারের ওসিলায় আমরা শক্তি পেয়ে থাকি। এজন্য ক্ষুধা নিবারণের উদ্দেশ্যে যেনো খাওয়া না হয়। নিয়ত এরকম হতে পারে, খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাকে যে শক্তি দিবেন, তার দ্বারা আমি তাঁরই ইবাদত করবো।

খাওয়ার আগে কতিপয় আদব:

খাওয়া শুরুর আগে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়ার রাখতে হয়।

  1. দস্তরখান বিছিয়ে খানা খাওয়া।
  2. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া।
  3. বসে খানা খাওয়া।
  4. বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করা।

খাওয়াকালীন কতিপয় আদব:

খাওয়াকালীন আদবসমূহ নিচে দেয়া হলো।

  1. ডান হাতে খাওয়া।
  2. খাবারের দোষ না ধরা।
  3. খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ না থাকা। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভালো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
  4. খাবারের কোনো অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে, প্রয়োজনে পরিষ্কার করে খাওয়া।

খাওয়া শেষে কতিপয় আদব:

খাওয়া পরবর্তী কিছু আদব।

  1. খাবারের থালা আঙুল দিয়ে ভালোভাবে চেটে পরিষ্কার করে খাওয়া।
  2. আহার শেষে “খানা শেষের দুআ” পড়া।
  3. আহার শেষ করে উভয় হাত ধোয়া।
  4. কুলি করে মুখ পরিষ্কার করা।
  5. কারো মেহমান হয়ে খানা খেলে মেজবানের জন্যে দুআ করা।

পানি পানের কতিপয় আদব:

পানি পান করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। যেমন:

  1. পানির পেয়ালা ডানহাতে ধরে পান করা।
  2. বসে পান করা।
  3. বিসমিল্লাহ বলে পান শুরু করা।
  4. কমপক্ষে তিন শ্বাসে পান করা। পানির পাত্রে শ্বাস না ছাড়া।
  5. পাত্রের ভাঙ্গা দিক দিয়ে পান না করা।
  6. পাত্র যদি এমন বড় হয় যে ভিতরটা দেখা যায় না, সে পাত্রের মুখে মুখ লাগিয়ে পান না করা। কারণ, ঐ পাত্রের ভিতরে কোনো বিষাক্ত প্রাণী বা ক্ষতিকর বস্তু থাকতে পারে, যা পানকারীর ক্ষতি সাধন করতে পারে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।