ডোমেইন কেনার খুঁটিনাটি

সর্বশেষ আপডেট:

ইন্টারনেটে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়ার যথোপযুক্ত একটি উপায় হলো ডোমেইন। এই ডোমেইনটা কী, ডোমেইনের নাম কেমন হওয়া উচিত, ডোমেইন কিনতে গেলে কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো এ নিবন্ধে আলোচনা কর হবে, ইনশা-আল্লাহ্।

ডোমেইন কি:

ডোমেইন নাম বলতে সাধারণভাবে কোনো একটা ওয়েবসাইটের নামকে বোঝায়। অর্থাৎ, কোনো ওয়েবসাইটকে দেখতে হলে আমরা ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে যে ঠিকানা (টেক্সট) টাইপ করি সেটাই হলো ডোমেইন। উদাহরণস্বরূপ, এই ওয়েবসাইটের কয়েকটি URL বিবেচনা করা যাক।

  • https://www.iqbir.com/articles
  • http://www.iqbir.com
  • https://iqbir.com

প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে iqbir.com হলো ডোমেইন নাম। ডোমেইন নাম ক্লায়েন্ট কম্পিউটারকে ওয়েব সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। একটি ডোমেইন নাম সংক্রান্ত সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে ডোমেইন নেম সিস্টেম (DNS)।

ডোমেইন নাম কেন দরকার?

প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের জন্য একটি নির্দিষ্ট আইপি ঠিকানা থাকে। এ IP ঠিকানার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি ব্রাউজারে দেখা সম্ভব। কিন্তু আইপি দিয়ে অসংখ্য ওয়েবসাইটের ঠিকানা মনে রাখা কষ্টসাধ্য। তাই মনে রাখার সুবিধার্থে আইপি ঠিকানার পরিবর্তে ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এক বা একাধিক কম্পিউটারকে ইন্টারনেটে চেনার জন্যও ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়।

আবার ব্যবসায়িক দিক বিবেচনা করলে, সাধারণত ব্র্যান্ডের নাম কোনো নাম্বার দিয়ে বুঝানো হয় না। ব্র্যান্ডের নাম হয় টেক্সট ফরমেটে। ফলে ডোমেইন নাম দিয়ে ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়।

আবার কোনো ওয়েবসাইটের বিশ্বস্ততার ক্ষেত্রেও উপযুক্ত ডোমেইন নাম গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, বাংলাদেশের Walton ব্র্যান্ডের কোনো প্রোডাক্ট খুঁজতে যেকেউ walton.com ডোমেইনটিতে ঢুঁ মারবে। কেননা এটা সহজে বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু কোনো আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে যদি বলা হয়, এটা ওয়ালটন ব্র্যান্ডের, সেক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার ক্ষেত্রে ফাঁক রয়ে যাবে।

ডোমেইন নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয়:

আমরা যখন কোনো ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন নাম নির্বাচন (Select) করবো তখন কয়েকটি দিক বিবেচনা করতে হবে।

  • ব্র্যান্ডের নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। সাধারণভাবে আমরা যে কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করবো, ডোমেইন নামটি সেটাই হওয়া চাই।
  • নতুন নামের ক্ষেত্রে, ওয়েবসাইটটের মূল বিষয় বা থিমের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং বেশি সার্চ করা হয়, এমন কিওয়ার্ড দিয়ে নাম গঠন করতে হবে।
  • ৮-১০ অক্ষরের মধ্যে হলে ভালো হয়।
  • ড্যাশ না থাকাই ভালো। আমার মনে হয়, ড্যাশবিহীন ডোমেইন নাম বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি।
  • .com ডোমেইনকে বেশি গুরুত্ব (Priority) দেয়া। কেননা, সাধারণত ভিজিটররা ডট কম ডোমেইনকে প্রায়োরিটি দেয়।

ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয়:

ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হবে। কেননা, ভুল রেজিস্ট্রার সিলেক্ট করার কারণে একদিকে যেমন অনেক টাকা গচ্চা যেতে পারে, অন্যদিকে ডোমেইন হারিয়ে পুরো পরিশ্রম ব্যর্থ হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।

  • অনেক দিন ধরে ব্যবসা করছে, এমন রেজিস্ট্রার থেকে ডোমেইন কিনতে হবে। রেজিস্ট্রার যদি ভুয়া হয়, তাহলে ডোমেইন হারানোর ভয় থেকে যায়।
  • যত ধরনের টপ লেভেল ডোমেইন (TLD) আছে তার মধ্যে ডট-কম (.com) সবচে কম দামের মনে হয়েছে। রেজিস্ট্রারের Pricing List থেকে দেখে নিতে হবে।
  • অনেক হোস্টিং প্রোভাইডার ফ্রি ডোমেইন দিয়ে থাকে। তবে এতে একটা ফাঁকি থাকে যা ভালোভাবে লক্ষ্য না করলে বুঝা যায় না। আর তা হলো, ফ্রি ডোমেইনটা শুধু প্রথম বছরের জন্য হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে ডোমেইন রিনিউয়াল-এর জন্য অনেক বেশি দাম পরিশোধ করতে হয়। তাই হোস্টিং-সহ ডোমেইন কেনার সময় এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। চেক আউট পেজে বাৎষরিক ফি-এর পরিমাণ ছোটো করে হলেও দেয়া থাকে।
  • শুধু ডট-কম ডোমেই কেনার ক্ষেত্রে, রিনিউয়াল খরচ বিবেচনায় সবচে কমে পেয়েছি Innovative IT (৮৩৭ টাকা, ০১/০৬/২০২২)

ডোমেইন সংক্রান্ত তথ্য জানতে:

  1. Whois Lookup: whois.com/whois
  2. Domain History Checker: whoisrequest.com/history/

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।