সন্তান জন্মের পর করণীয়

সর্বশেষ আপডেট:

মা-বাবার কাছে সন্তান হলো আল্লাহর অশেষ বড় নিয়ামত। আবার সন্তান একটি আমানতও বটে। তার শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিষয়গুলো দেখভাল করা মা-বাবার অনেক বড় দায়িত্ব। তাই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর-পরই তার মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সারতে হয়। যেমন-

  1. আল্লাহর শুকরিয়া আদায়
  2. পরিষ্কার করা
  3. তাহনিক করানো।
  4. তা’যীন (ডান কানে আজান। বাম কানে ইকামত।)
  5. দুধপান।
  6. ভালো নাম রাখা।
  7. আকিকা করা।
  8. চুলের ওজন পরিমাণ সোনা বা রূপা সদকা করা।

আল্লাহর শুকরিয়া আদায়:

সন্তান আল্লাহ তাআলার বিশেষ নিয়মত। আল্লাহ তাআলা যাকে চান তাকে এ নিয়ামত দান করেন। কেউ চাইলেই সন্তান লাভ করতে পারে না। আবার সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা সম্পূর্ণ আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাধীন।

“তিনি যাকে ইচ্ছা মেয়ে দেন, যাকে ইচ্ছা ছেলে দেন।” (সূরা শুরা, আয়াত ৭)

এজন্য নবজাতক ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। পারলে শুকরিয়াস্বরূপ দু’রাকাত নফল নামায পড়া উচিত।

তাহনিক করানো:

শিশুর জন্মের পর কোনো দ্বীনদার ও বুজুর্গ ব্যক্তির মুখে চর্বিত খেজুর বা মিষ্টি জাতীয় জিনিসের রস শিশুর মুখের তালুতে লাগিয়ে দেয়া হয়। এটাকে তাহনিক বলে। শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর আগেই তাহনিক করানো ভালো। আল্লাহর কোনো নেক বান্দার লালা যদি সর্বপ্রথম শিশুর মুখে যায়, তবে এর দ্বারা বিশেষ বরকতের আশা করা যায়। নবজাতকের তাহনিক করা যায় এমন কোনো জিনিস প্রসবের আগমুহূর্তে প্রস্তুত করে রাখা ভালো।

তা’যীন:

তাহনিক-এর পর নবজাতকের ডান কানে আযান আর বাম কানে ইকামত দেয়া হয়। এটাকে তা’যীন বলা হয়।

দুধপান:

মায়ের দুধই নবজাতকের সর্বোত্তম খাদ্য। সেজন্যে মায়ের উচিত নবজাতককে অবশ্যই নিজের বুকের দুধ পান করানো, যদি না তা নবজাতকের জন্যে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। বিসমিল্লাহ বলে দুধ পান করানো শুরু করা উচিত।

ভালো নাম রাখা:

নবী, সাহাবা ও বুজুর্গদের নামে শিশুর নাম রাখা উচিত। শিশুর নাম যেনো সুন্দর অর্থপূর্ণ হয়। আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বোকৃষ্ট নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ। তেমনি আব্দুর রহমান ও আব্দুর রহিম নামও পছন্দনীয়। মুহাম্মাদ ও আহমাদ নামও আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়।

এক হাদিসে বলা হয়েছে, যে ঘরে ‘মুহাম্মাদ’ নামে কোনো শিশুর নামকরণ করা হয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ নামের বরকতে ওই ঘরবাসী সবাইকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। (নারী ঘরের রাণী, পৃষ্ঠা ১২৯)

তবে ভালো নামটি কাগজে কলমে রেখে, বাজে অর্থহীন আরেকটি ডাকনাম রেখে সে নামে ডাকার যে প্রচলন, তা কাম্য নয়। একাধিক নাম রাখলে প্রত্যেকটি নামই ভালো হওয়া উচিত।

আকিকা করা:

শিশুর জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা সুন্নত। ছেলে শিশুর জন্যে দুটি ছাগল, আর মেয়ে শিশুর জন্যে একটি ছাগল জবাই করতে হয়।

কৃতজ্ঞতা: এ নিবন্ধটি তৈরিতে সহায়ক গ্রন্থ ও লিংকসমূহ:

  • বেহেশতী জেওর (২য় ভলিউম), মূল: হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী চিশ্‌তী (রঃ) অনুবাদক: হযরত মাওলানা শামসুল হক (রঃ) ফরিদপুরী, এমদাদিয়া লাইব্রেরী, পৃষ্ঠা: ১৬৯-১৭০, ২০৩
  • নারী ঘরের রানী, ১ম সংস্করণ, মূল: মাওলানা জুলফিকার আহমাদ নকশাবন্দি, অনুবাদক: জহির উদ্দিন বাবর, প্রকাশনা: দিলরুবা। পৃষ্ঠা: ১১৯-১৩০
  • আহকামে যিন্দেগী, ৫ম সংস্করণ, মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন, মাকতাবাতুল আবরার।
  • সন্তান জন্ম গ্রহণের পর কানে আজান ও আকীকা প্রসঙ্গে

সন্তান জন্মের পর করণীয়” বিষয়ে একটি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।