১৭ মার্চ, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মের শতবর্ষ অতিবাহিত হবে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার ১৭ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৬ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে। মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিগুলো কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে নির্ধারিত সময়ে যথযাথভাবে করা সম্ভব না হওয়ায় পরবর্তীতে সরকার মুজিববর্ষের সময়কাল দুই ধাপে ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে (বর্তমান নাম জাতীয় প্যারেড স্কয়ার) মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার (Countdown) উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। এ জন্যই এ তারিখটিকে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার জন্যে বেছে নেয়া হয়।
মুজিববর্ষের লোগো
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধনের সাথে সাথে মুজিববর্ষের লোগোও উন্মোচন করেন। এ লোগোটির ডিজাইনার সব্যসাচী হাজরা। সঠিকভাবে ও সমভাবে লোগোটির ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১০টি নির্দেশনা (Guideline) দেয়া হয়েছে।
একনজরে মুজিববর্ষ
মুজিববর্ষের ঘোষণা | ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ঘোষিত হয় ‘মুজিববর্ষ’। |
লোগো ডিজাইনার | সব্যসাচী হাজরা |
মুজিববর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনা উদ্বোধন এবং লোগো উন্মোচন | ১০ জানুয়ারি ২০২০ |
মুজিববর্ষের ব্যাপ্তি (প্রথম ঘোষিত) | ১৭ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৬ মার্চ, ২০২১ |
মুজিববর্ষের ব্যাপ্তি (করোনার কারণে বর্ধিত সময়) | ১৭ মার্চ, ২০২০ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ [প্রজ্ঞাপন জারি ১৪/১২/২০২০] |
মুজিববর্ষের ব্যাপ্তি (করোনার কারণে দ্বিতীয়বার বর্ধিত সময়) | ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত [প্রজ্ঞাপন জারি ০৮/০১/২০২২] |
মুজিববর্ষের থিম সং | তুমি বাংলার ধ্রুবতারা, তুমি হৃদয়ের বাতিঘর |
থিম সং-টির গীতিকার | ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী |
থিম সং-টির সুরকার ও সংগীত পরিচালক | নকিব খান |
- মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে অমর একুশে বইমেলা ২০২০ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়।
- মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করা হয়।
- মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বংলাদেশ ব্যাংক ১৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে প্রথমবারের মতো ২০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে একাদশ জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশন ছিল দেশের ইতিহাসে প্রথম বিশেষ অধিবেশন। ৮-১৯ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত মোট ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ৯-১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৫ কার্যদিবস বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রদত্ত ভাষণ, ৪ নভেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদে প্রদত্ত ভাষণ, ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ এ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে প্রদত্ত ভাষণগুলো শুনানো হয়।
বৈশ্বিক উদযাপন
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গসংগঠন ইউনেসকোর ৪০তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে মুজিব বর্ষ পালনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৯ সালের ১২-২৭ নভেম্বরে প্যারিসে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ২৫ নভেম্বরে ইউনেসকোর সকল সদস্যের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
https://www.banglanews24.com/national/news/bd/764558.details
জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিদেশে তিনটি বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
https://www.ittefaq.com.bd/national/122867/একটি-স্বপ্ন-বাস্তবায়নে-কাজ-করছি–প্রধানমন্ত্রী
দ্বিবার্ষিক অ্যানিভার্সারি প্রোগ্রামের আওতায় ইউনেসকো কোনো বিশেষ ঘটনার বা বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্মের ৫০তম বা তদূর্ধ্ব, অর্থাৎ ৭৫তম বা ১০০তম বা ১৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করে থাকে। এই প্রোগ্রামের আওতায় ২০২০-২১ সালের জন্য ইউনেসকোর গ্রহণ করা ৫৯টি অ্যানিভার্সারি উদ্যাপন প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে www.mujib100.gov.bd ওয়েবসাইটটি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এ ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করেই মুজিববর্ষ উদ্যাপনের সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তথ্যসূত্র:
- 100 Years of Mujib [mujib100.gov.bd] (বর্তমানে বন্ধ)
- লোগো ব্যবহার নির্দেশিকা
- মুজিব বর্ষ – উইকিপিডিয়া
- বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)