এমএস ওয়ার্ড টিউটোরিয়াল: পর্ব-১

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড পরিচিতি

সর্বশেষ আপডেট:

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা থাকা প্রয়োজন। ব্যক্তিগত কাজ, শিক্ষা, ব্যবসা, চাকুরিসহ কর্মক্ষেত্রের নানা জায়গায় এটি খুবই কাজে লাগে। এই পর্বে আমরা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু জ্ঞান, দৈনন্দিন জীবনে এর ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে ধরণা লাভ করবো, ইনশা-আল্লাহ।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড টিউটোরিয়াল সিরিজের সকল পর্ব এখানে দেখুন।

১। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? (What is Microsoft Word):

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) হলো একটি জনপ্রিয় ওয়ার্ড প্রসেসিং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। একে সংক্ষেপে এমএস ওয়ার্ড (MS Word) বলা হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফট কর্পোরেশন (Microsoft Corporation) এই অ্যাপ্লিকেশনটির নির্মাতা। এর সাহায্যে কম্পোজ বা টাইপিং, চিঠিপত্র তৈরি, দলিল-দস্তাবেজ তৈরি, প্রশ্নপত্র তৈরি ইত্যাদি সহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজ সুন্দর ও সাবলীলভাবে করা যায়। এছাড়াও ছবি, চার্ট, টেবিল ইত্যাদি সংযোজন করে ডকুমেন্টকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।

২। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার (Usage of MS Word):

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের সাহায্যে ব্যক্তিগত, পড়াশোনায় ও দাপ্তরিক অনেক কাজ করা যায়। এর সাহায্যে যেসব কাজ করা যায় তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেয়া হলো।

২.১। বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট তৈরি

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের ডকুমেন্ট তৈরি করা যায়। বিভিন্ন ধরনের চিঠিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, প্রশ্নপত্র, আবেদনপত্র, প্রচারপত্র, লেকচার শিট, রিপোর্ট, জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি (CV) ইত্যাদি তৈরি করা যায়। টেক্সটের বিভিন্ন ফরম্যাটিং করে এবং ছবি, গ্রাফ, চার্ট, পৃষ্ঠা নম্বর ইত্যাদি যোগ করে ডকুমেন্টকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। কাগজে প্রিন্ট করে উক্ত ডকুমেন্টের যেকোনো সংখ্যক হার্ডকপি তৈরি করা যায়। আবার পিডিএফ (pdf) আকারে সেভ করে ডকুমেন্টকে ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও শেয়ার করা যায়। ফলে প্রাপকের কম্পিউটারে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড না থাকলেও সে ডকুমেন্টটি হুবহু দেখতে ও পড়তে পারে।

২.২। লেখালেখি করা

যাদের লেখালেখির অভ্যাস আছে তারা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের সাহায্যে আরও চমৎকারভাবে তা করতে পারেন। আর্টিকেল লেখা, ব্যক্তিগত নোট বা ডায়েরি লেখা ইত্যদি কাজ এই অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে সাবলীলভাবে করা যায়। হাতে লেখার চেয়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে লেখার সুবিধা হচ্ছে এটি পরবর্তীতে যেকোনো সময় সহজে এডিট বা পরিবর্তন করা যায়। ফলে লেখা কাটাকুটি, বিশ্রী ও ঘিঞ্জি হওয়ার কোনো ঝামেলা থাকে না। খুব সহজেই টেক্সট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কপি করা কিংবা সরানো যায়। কাজ শেষে বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষণ করে টেক্সটকে নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করা যায়। বিশেষ করে ইংরেজি টেক্সট টাইপের ক্ষেত্রে Spelling & Grammar অপশনটি বেশি কাজে লাগে।

২.৩। সাধারণ কিছু ডিজাইন করা

বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করে লেখা সুন্দর করা, টেক্সট ফরম্যাটিং বা লেখা স্টাইল করা, ড্রপ ক্যাপ (Drop Cap), ওয়ার্ড আর্ট (Word Art), পেজের বর্ডার দেয়া, বিভিন্ন ধরনের আকার তৈরি (Shapes) ইত্যাদি ডিজাইনগুলো ওয়ার্ডে করা যায়। এছাড়া টেক্সট, ছবি ও অন্যান্য শেপ-এর উপর থ্রিডি ইফেক্ট তৈরি করার বিভিন্ন অপশন রয়েছে।

২.৪। ছবি যোগ ও এডিট করা

ডকুমেন্টকে প্রাণবন্ত করতে ছবির কোনো বিকল্প নেই। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে ছবি যোগ করার পাশাপাশি এডিট সংক্রান্ত বেশ কিছু অপশন রয়েছে। যেমন: ছবির কিছু অংশ বাদ দেয়া (Crop), ছবি আকার পরিবর্তন করা (Resize), ছবি ঘোরানো (Rotate), রং পরির্তন করা, ছবির ইফেক্ট পরিবর্তন, ছবির মধ্যে বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করা, ছবি কমপ্রেস করা ইত্যাদি নানান টুলস রয়েছে।

এছাড়া টেক্সটের মাঝে সুন্দরভাবে ছবি বসানো, থ্রিডি আকারে উপস্থাপন কিংবা একটি ছবির উপর আরেকটি ছবি সাজানোর অপশনও মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে রয়েছে।

২.৫। চার্ট, টেবিল/ছক ও ডায়াগ্রাম তৈরি ও সংযোজন

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বিভিন্ন ধরনের চার্ট, টেবিল বা ছক এবং ডায়াগ্রাম তৈরি করা যায়। সাথে সাথে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ যেমন, ডিজাইন পরিবর্তন, আকার পরিবর্তন, এক ধরনের চার্ট থেকে অন্য ধরনের চার্টে রূপান্তর, পারিপার্শ্বিক টেক্সটের সাথে বিন্যাস ইত্যাদি কাজগুলোও সহজে ও সুন্দরভাবে করা যায়।

২.৬। ডকুমেন্ট সংরক্ষণ, প্রিন্ট ও প্রকাশ করা

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ডকুমেন্ট কম্পিউটারে সংরক্ষণ (Save) করে রাখা যায়। কাগজে লিখিত কপির (Hard Copy) দরকার হলে যেকোনো সময় প্রিন্টারের সাহায্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি প্রিন্ট করে নেয়া যায়। এমনকি কোনো ডকুমেন্টের সবগুলো পৃষ্ঠা প্রিন্ট না করে নির্দিষ্ট কয়েকটি পৃষ্ঠা প্রিন্ট করাও সম্ভব। এছাড়া ওয়ার্ড ডকুমেন্টকে পিডিএফ (pdf) ফরম্যাটে রূপান্তর করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ কিংবা অন্যকোনো মাধ্যমে শেয়ার করা যায়।

৩। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভার্সন:

এ পর্যন্ত মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের অনেক ভার্সন বের হয়েছে। তার মধ্যে সাম্প্রতিক কয়েকটি ভার্সন হলো:-

  1. ওয়ার্ড ৩৬৫ (সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক লাইসেন্স)
  2. ওয়ার্ড ২০২১
  3. ওয়ার্ড ২০১৯
  4. ওয়ার্ড ২০১৬
  5. ওয়ার্ড ২০১৩
  6. ওয়ার্ড ২০১০
  7. মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৭

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।