สล็อตเว็บตรง สล็อตเว็บตรง สล็อต สล็อต สล็อตเว็บตรง สล็อตออนไลน์ บาคาร่า
বুদ্ধিমতী মারইয়াম – ইকবির

বুদ্ধিমতী মারইয়াম

সর্বশেষ আপডেট:

আমার মেয়ে দুজন – ফাতিমা আর মারইয়াম। ছোট মেয়ে মারইয়াম একটু বেশিই চালাক আর দুরন্ত। আমাদের ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় “টেড্‌না”। ওর টেডনাবাজির কিছু নমুনা তুলে ধরা হলো।

পানি ধরার কৌশল:

ফাতিমা আর মারইয়াম। ওদের দুজনকে দুটো থালায় ডিমসিদ্ধ খেতে দিয়েছি। খেতে গিয়ে দুজনেই হাত ময়লা করেছে। তো মারইয়াম আগে খাওয়া শেষ করেছে। তাই ওর হাত ধুয়ে গামছা দিয়ে মুছে দিলাম। ফাতিমাও বেশিরভাগই খাওয়া শেষ করেছে। সামান্য একটু কুসুম নিয়ে নাড়াচাড়া করছিল। বুঝলাম ও আর খাবে না। তাই ওকে বেসিনে নিয়ে আসলাম হাত ধোয়াবার জন্য। এই সুযোগে মারইয়াম ফাতিমার থালা থেকে হাতে কুসুম লাগিয়ে নিয়ে আসলো নতুন করে হাত ধোয়ার জন্যে। যত বার হাত ময়লা হবে, ততবার হাত ধোয়া যাবে। পানি ধরা যে ওদের খুবই প্রিয় খেলা। (২৬.০৪.২০২০)

আগে বড় হয়ে নিই:

আজ সকালে মারইয়াম যথারীতি একটি স্টিলের বাটি বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দিলো। জানি ও পারবে না, তারপরও আমি রাগ করে বললাম, যাও বাটি নিয়ে আসো। উত্তরে ও বললো, বাটি আনতাম না, বড় হয়ে নিই। ওর জবাব শুনে আমরা অবাক হয়ে গেলাম। আচ্ছা, ও কি আসলেই ছোট আছে? বড়দের মতো জবাব দিলো কীভাবে? (৩০.০৪.২০২০)

শুয়ে আছি। উপরে ফ্যানটা চালু করা দরকার। ফ্যানের সুইচটা ফাতিমার থেকে একটু উপরে। মোড়ার উপর দাঁড়িয়ে চালু বা বন্ধ করতে পারে। ওকে ফ্যানটা ছাড়তে বললাম। কিন্তু ও ফ্যান চালু করার মেজাজে নেই। কিংবা অন্য কোনো কিছুতে মশগুল ছিলো। তাই সাফ জানিয়ে দিলো ফ্যান চালু করতে পারবে না। অগত্যা মারইয়ামকে ফ্যান ছাড়তে করতে বললাম। ওর ত্বরিত/সহজ জবাব, “ফ্যান ছাড়তে পাই (পারি) না। আমি ছোট।” (০৭.০৫.২০২০)

লিচুর ভেতর খেজুর:

প্রথমেই বলে রাখি, মাঝে মাঝে বাসায় কালো/বাদামী রঙের মাংসল খেজুরগুলো নিয়ে আসি। সেই সুবাদে মারইয়াম খেজুরের সাথে বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। সম্ভবত ওর প্রিয় ফলগুলোর মধ্যে খেজুর একটি। কিন্তু লিচু সাধারণত মৌসুম ছাড়া পাওয়া যায় না। সেজন্য ও লিচু ফলটিকে সেভাবে চেনার সুযোগ পায়নি। সে যাই হোক, ওর মামাদের লিচু গাছে এবার নাকি ভালোই লিচু ধরেছে। তো ওদের বড় মামা অনেকগুলো লিচু পাঠিয়ে দিলো। লিচুর কথা শুনেই মারইয়াম খাওয়ার জন্যে পাগল হয়ে গেলো। সম্ভবত দাঁত আর বুদ্ধি হওয়ার পর এটাই ওর প্রথম লিচু খাওয়া। তো লিচুর বাইরের মাংসল অংশ খাওয়ার পর ভিতরের গাঢ় বাদামী বিচি বেরিয়ে এলো। লিচুর বিচি দেখে মারইয়ামের আনন্দ আর ধরে না। এ যে চকচকে, মসৃণ আর নতুন ধরনের সুন্দর এক খেজুর! ওর মাকে বলে, “আম্মা খেজুর”। ওর মা শুধরিয়ে দেয়, ওটা খেজুর না, লিচুর বিচি। ফেলে দাও। তা এতো সুন্দর খেজুরের লোভ কি সহজে ত্যাগ করা যায়? বসিয়ে দেয় এক কামড়। (১১.০৫.২০২০)

ফাতিমার উত্তরসূরি:

ফাতিমা যা করবে, মারইয়ামেরও তা-ই করতে হবে। তা না হলে বড় বোনের যোগ্য উত্তরসূরি কীভাবে হবে। ফাতিমাকে কিছু দিলে, মারইয়ামকেও তা দিতে হবে। অবশ্য বিপরীতটাও সত্য।

মারইয়ামের একটি প্রিয় খেলা হলো বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে পানি নিয়ে মেতে উঠা। বেসিন যেহেতু ওর থেকে উঁচুতে তাই পরনের জামাকাপড় ভিজিয়ে প্রায়-গোসল করে ফেলে। একারণে বেসিন ব্যবহারের পর আমরা সাধারণত টাইট করে ট্যাপ লাগিয়ে রাখি। টাইট করে লাগানো ট্যাপ ও ছাড়তে না পারলেও ফাতিমা ছাড়তে পারে। তো একদিন ফাতিমা দুষ্টুমি করে বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে দেয়। এতে রেগে গিয়ে হাতের তালুতে করে পানি নিয়ে আমি ওর (ফাতিমা) মাথায় ঢেলে দিই। পানি গড়িয়ে পড়ে ওর হাফপ্যান্ট ভিজে যায়। ফাতিমার আম্মু ফাতিমার ভিজা হাফপ্যান্ট পাল্টিয়ে দেয়। এটা দেখে মারইয়ামের আর তর সয় না। মনে হয়, ওরও হাফপ্যান্ট পাল্টানো শখ জাগে। ভাবে, আম্মু তো শুকনো হাফপ্যান্ট পাল্টিয়ে দিতে চাইবেন না। আবার, বেসিনের ট্যাপ হয়তো টাইট করে লাগানো, কিংবা ছাড়লে আপার মতো আমাকেও আব্বা মারতে পারেন। তো ও এক আজব বুদ্ধি বের করলো। ওর মাকে পানি খাওয়ার কথা জানালো। পানি দেয়া হলে, মুখে পানি নিয়ে হাফপ্যান্টের উপর কুলি করে দিল। কেল্লাফতে! এখন আম্মু নিজেই হাফপ্যান্ট পাল্টিয়ে দিবেন। (৩০.০৫.২০২০)

চুড়ি লিখতে পারি:

ফাতিমাকে যোগ শেখানোর জন্য চুড়ি কিনেছি। দুই গোছা কিনেছি, এক গোছা ফাতিমার আরেক গোছা মার্‌ইয়ামের। মার্‌ইয়ামের পড়াশোনায় তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না, তারপরও ফাতিমার সবকিছু তার জন্যও কিনতে হয়। নাহলে যে কান্না করে খবর করে দেয়। এ কারণে মার্‌ইয়ামের খাতা-পেন্সিলও রয়েছে ।

ফাতিমাকে পড়াচ্ছি। এর মধ্যে খাতায় একটি গোল্লা এঁকে মার্‌ইয়াম বলে, এই যে, আব্বা আমি চুড়ি লিখতে পারি। মনে মনে বলি, স্বরে-অ স্বরে-আ-ই ঠিকমতো চিনো না, তুমি লিখবা “চুড়ি”! মুখে বলি, সুন্দর… (আগস্ট ২০২২)

বুদ্ধিমতী মারইয়াম” বিষয়ে একটি মন্তব্য

  1. আপনিসহ আপনার পরিবারের সবার জন্য দুয়া ও শুভকামনা রইলো। অনেক ব্যস্ততার মাঝ্যেও সবার জন্য যে কাজ করে বিশেষ করে জ্ঞান বিতরন করে তার জ্ঞানের কোনদিন ঘাটতি হয়না বরং জ্ঞান আরো বিকশিত লাভ করে আপনার জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসা রইলো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।