সরকারি চাকুরেদের ট্যাক্স রিটার্ন (আয়বর্ষ ২০২৩-২৪, করবর্ষ ২০২৪-২৫)

সর্বশেষ আপডেট:

সরকারি চাকুরেদের ট্যাক্স রিটার্ন ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্ট এই নিবন্ধে আলোচিত হয়েছে। এগুলো ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর নির্দেশিকা থেকে সংগৃহীত। বিস্তারিত জানতে নির্দেশিকাটি ডাউনলোড করে পড়তে পারেন।

করযোগ্য আয় (পৃষ্ঠা ২৩-২৪):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ২০-২১
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ২০-২১
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ২২

সরকারি বেতন আদেশভুক্ত একজন কর্মচারীর সরকার প্রদত্ত মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। অবসরকালে প্রদত্ত লাম্প গ্র্যান্টসহ সরকারি বেতন আদেশে উল্লিখিত অন্যান্য ভাতা ও সুবিধাদি যেমন, বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, বাংলা নববর্ষ ভাতা ইত্যাদি করমুক্ত থাকবে।

বেতন খাত ছাড়াও গৃহ সম্পত্তি, লভ্যাংশ, ব্যাংক সুদ ইত্যাদি খাতে আয় থাকতে পারে। করযোগ্য আয় নিরূপণের জন্য নিচের ফর্মগুলো ব্যবহার করতে হবে।

  1. তফসিল 24A: বেতন সংক্রান্ত আয়
  2. তফসিল 24B: বাড়িভাড়া থেকে আয়
  3. তফসিল 24C: ব্যবসায় বা পেশাগত আয়

করমুক্ত আয়সীমা (পৃষ্ঠা ১ ও ১০):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ১০
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৬-৩৭
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৪০

ব্যক্তি-করদাতার ক্ষেত্রে করযোগ্য মোট আয় ‌একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কম হলে কোনো কর দিতে হয় না। এটাই করমুক্ত আয়সীমা। ২০২৩-২৪ করবর্ষের জন্য করমুক্ত আয়সীমা নিম্নরূপ:

ব্যক্তি-করদাতার ধরনকরযোগ্য খাত থেকে মোট আয়ের প্রথম যত টাকা করমুক্ত
পুরুষ৩,৫০,০০০/- (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার)
মহিলা৪,০০,০০০/- (চার লক্ষ)
৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা৪,০০,০০০/- (চার লক্ষ)
প্রতিবন্ধী / তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা৪,৭৫,০০০/- (চার লক্ষ পঁচাত্তর হাজার)
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ)

প্রতিবন্ধী সন্তান বা পোষ্য রয়েছে এমন পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের ক্ষেত্রে করমুক্ত সীমা প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য ৫০,০০০ টাকা বেশি হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হলে যেকোনো একজন এ সুবিধা পাবেন।

করহার (পৃষ্ঠা ১০):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ১০ ও ৫০
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৬
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৪০

করযোগ্য খাত থেকে আয়করহার
করমুক্ত আয়সীমা পর্যন্ত (যেমন পুরুষের ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা)০%
পরবর্তী ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত৫%
পরবর্তী ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত১০%
পরবর্তী ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত১৫%
পরবর্তী ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত২০%
অবশিষ্ট আয়ের উপর২৫%

কর রেয়াত (পৃষ্ঠা ১১-১২):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ১০-১২, ৫৩-৫৪
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৪৩

নির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে করদাতার বিনিয়োগ/চাঁদা থাকলে, ঐ বিনিয়োগের একটি নির্দিষ্ট হারে করছাড় দেয়া হয়। এটাই কর রেয়াত। করযোগ্য আয় থেকে আরোপযোগ্য আয়করের পরিমাণ হিসাব করে, সেখান থেকে কর রেয়াতের পরিমাণ বাদ দিলে প্রকৃত/প্রদেয় করের পরিমাণ পাওয়া যায়। কর রেয়াত হিসাব করতে 24D তফসিলটি ব্যবহার করতে হবে।

উল্লেখ্য গত বছর (আয়বর্ষ ২০২০-২০২১ ও করবর্ষ ২০২১-২০২২) করযোগ্য মোট আয়ের ২৫% কর রেয়াত থাকলেও এ বছর তা কমিয়ে ২০% করা হয়েছে।

ন্যূনতম কর (পৃষ্ঠা ৩১):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৫২
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৮
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৪২

যখন কোনো করদাতার করযোগ্য খাত থেকে আয়ের পরিমাণ করমুক্ত আয়সীমা অতিক্রম করে, তখন হিসেব করে প্রকৃত/প্রদেয় করের পরিমাণ যা-ই পাওয়া যাক না কেন, তাকে তার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ন্যূনতম (Minimum) একটি কর দিতে হয়। ন্যূনতম করের পরিমাণ:

করদাতার বসবাস যে এলাকায়ন্যূনতম করের পরিমাণ (টাকা)
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন৫,০০০/-
অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন৪,০০০/-
সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকা৩,০০০/-

যেমন, কোনো পুরুষ ব্যক্তির করযোগ্য আয় ৩,৫৮,০০০ টাকা। পুরুষের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৩,৫০,০০০ টাকা হওয়ায়, বাকি ৮,০০০ টাকার উপর ৫% হারে কর আসে মাত্র ৪০০ টাকা। তারপরও তার বসবাসের এলাকার উপর নির্ভর করে কমপক্ষে ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে।

ন্যূনতম করের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়:

  • করদাতার আয় যে কোনো স্থানেই অর্জিত হোক না কেন, তিনি যেখানে বসবাস করবেন সে অবস্থানের ভিত্তিতেই ন্যূনতম করের পরিমাণ নির্ধারিত হবে।
  • কর রেয়াত বিবেচনার পর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ যদি শূন্য বা ঋণাত্মক হয়, তারপরও করদাতাকে ন্যূনতম আয়কর পরিশোধ করতে হবে। বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে আয়কর নির্দেশিকার ২৯-৩১ (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৭৪-৭৬; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৫৭-৫৯; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৬৬-৬৮), এই তিন পৃষ্ঠাব্যাপী প্রদত্ত উদাহরণ ১ ও ৩ (সরকারি বেতন আদেশভুক্ত কর্মচারীদের আয় এবং কর পরিগণনা) দেখতে পারেন।

রিটার্নের সাথে যা যা জমা দিতে হবে (পৃষ্ঠা ১৬-১৮):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ১৬-১৭
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ১১-১৬
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা-১১-১৬

মূল রিটার্নের সাথে বিভিন্ন ধরনের তফসিলসহ আরো অনেক ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিতে হতে পারে। সাধারণভাবে যেসব ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়:

  1. নতুন করদাতা হলে তার পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি রিটার্নের সাথে জমা দিতে হবে। ছবিটি প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা অথবা ওয়ার্ড কমিশনার অথবা যে কোনো টিআইএনধারী করদাতা কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর একজন ব্যক্তি-করদাতাকে তার সত্যায়িত ছবি রিটার্নের সাথে জমা দিতে হবে।
  2. বেতন বিবরণী
  3. ব্যাংক হিসাব থাকলে ব্যাংক বিবরণী
  4. প্রযোজ্য তফসিলসমূহ। করদাতার আয়ের উৎসের উপর নির্ভর করে মূল রিটার্নের সাথে তফসিল যোগ হবে। যেমন-
    – তফসিল 24A: বেতন সংক্রান্ত আয় থাকলে
    – তফসিল 24B: বাড়িভাড়া সংক্রান্ত আয় থাকলে
    – তফসিল 24C: ব্যবসায় বা পেশাগত আয় থাকলে
  5. বিনিয়োগ রেয়াত দাবি করলে, মূল রিটার্নের সাথে বিনিয়োগ রেয়াত সংক্রান্ত তফসিল 24D দাখিল করতে হবে।
  6. আগের বছরের প্রদত্ত অতিরিক্ত ট্যাক্সের ফেরতযোগ্য (Refundable) টাকা ফেরত না পেলে, ঐ বছরের রিটার্ন স্লিপ (যেখানে ফেরতযোগ্য টাকার পরিমাণ উল্লেখ রয়েছে) সংযুক্ত করতে হবে।

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী (পৃষ্ঠা ১৩-১৪):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ১৩-১৪
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ১২-১৩
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ১২

যদি কোনো ব্যক্তি-করদাতা নিম্নোক্ত শর্তসমূহ পূরণ করেন তাহলে আয় বছরের শেষ তারিখে তার নিজের, spouse-এর (spouse করদাতা না হয়ে থাকলে) এবং নির্ভরশীল সন্তানদের পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী ঐ ব্যক্তির আয়কর রিটার্নের সাথে দাখিল করতে হবে। শর্তসমূহ হলো:

  1. (ক) করদাতা যদি গণকর্মচারী হন;
  2. (খ) আয় বছরের শেষ তারিখে দেশে-বিদেশে  মোট পরিসম্পদ (gross wealth)-এর মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার অধিক হলে; অথবা
  3. (গ) আয় বছরের শেষ তারিখে মোটর গাড়ি (জীপ বা মাইক্রোবাস সহ)-এর মালিকানা থাকলে; অথবা
  4. (ঘ) আয় বছরে কোনো সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কোনো গৃহ-সম্পত্তি বা এপার্টমেন্টের মালিক হলে অথবা গৃহ-সম্পত্তি বা এপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করলে।

অন্যান্য উৎস হতে আয় (পৃষ্ঠা ৫০):

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৪৭
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৩
আয়কর নির্দেশিকা ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৩৮

ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার উপর সুদ, নগদ লভ্যাংশ, লটারী, যন্ত্রপাতি ভাড়া দিয়ে আয়, বক্তৃতা বা লেখার সম্মানী ইত্যাদি অন্যান্য সূত্রের আয়ের কয়েকটি উদাহরণ।

  1. পৃষ্ঠা ৬৯: উৎস কর: ব্যাংক সুদ (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৬৯; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৪; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৩৮)
  2. পৃষ্ঠা ৩৯: বিনিয়োগ রেয়াতের প্রমাণপত্র: প্রভিডেন্ট ফান্ড (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৩৯; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৩৯; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৪৪)
  3. পৃষ্ঠা ৭০-৭৩: করমুক্ত আয়ের খাত (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৭০-৭৩; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৫৪; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৬৩)
  4. পৃষ্ঠা ৭৪: সরকারি কর্মকর্তার কর পরিগণনা (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৭৪; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৫৭; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৬৬)
  5. পৃষ্ঠা ৭৪: প্রদত্ত ঋণ (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৭৪; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৭৪; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৮৪)
  6. পৃষ্ঠা ৮০ (ক্রমিক-১১):  চিকিৎসা খরচ অন্যান্য ঘরে যাবে। (আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪: পৃষ্ঠা ৮০ ক্রমিক-১১; ২০২২-২৩: পৃষ্ঠা ৮০; ২০২০-২১: পৃষ্ঠা ৯০)

প্রাসঙ্গিক কয়েকটি বিষয়:

আয়কর রিটার্ন তৈরি ও জমা প্রদানের সময় আরো কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন-

  1. ব্যাংক থেকে পুরো অর্থবছরের স্টেটমেন্ট নিলে ভালো হয়। বিশেষ করে যে যে মাসে আমার অ্যাকাউন্টে মুনাফা/সুদ দেয়া হয়েছে সে পাতাগুলো থাকতে হবে। যেমন, এক্সিম ব্যাংকে ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ এবং জুনের ৩০ তারিখ মুনাফা যুক্ত হয়। ব্যাংক মুনাফা/সুদ থেকে আয়, আবার এ আয় থেকে কর্তিত ট্যাক্স ইত্যাদি রিটার্ন ফর্মে উল্লেখ করতে হয়।
  2. আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পর “প্রাপ্তিস্বীকার পত্র” (Acknowledgement) ছিঁড়ে দেয়া হবে। এজন্য প্রাপ্তিস্বীকার পত্রটি পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে এমন ফর্মে আয়কর রিটার্ন দাখিল করলে শুধু এক পৃষ্ঠায় (One Side) প্রাপ্তিস্বীকার পত্রটি  প্রিন্ট করতে হবে। উভয় পৃষ্ঠায় (Both Side) প্রিন্ট করা যাবে না।
  3. প্রাপ্তিস্বীকার পত্রটি ছিঁড়ে দিতে যেনো সুবিধা হয়, সেজন্য তা মূল রিটার্ন ফরম ও সংযুক্ত সব ডকুমেন্টের (Attachments) শেষে সংযুক্ত করতে হবে।
  4. যার যার সংশ্লিষ্ট ট্যাক্স জোন ও সার্কেলে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। e-TIN সার্টিফিকেটে ট্যাক্স জোন ও সার্কেল সম্পর্কে জানা যাবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।