সংবিধানে বিদ্যুৎ:
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগ (রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি)-এর ১৬ নং অনুচ্ছেদে “গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব” সম্পর্কে আলোচনায় বিদ্যুৎ প্রসঙ্গ এসেছে। ১৬ নং অনুচ্ছেদটি নিম্নরূপ:
১৬৷ নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তরসাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
বিদ্যুৎ সাধারণ জ্ঞান:
- দেশের একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালন সংস্থার নাম – পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ (PGCB)
- আবাসিক 3 phase voltage = 440V
- আবাসিক single phase voltage = 230V
- নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ: U-235 (238 নয়)
- বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বা ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ: ৪০০ কিলোভোল্ট (400KV)
- জ্বালানি সংকটের কারণে দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হয় – ১৯ জুলাই ২০২২
- বাগেরহাটের মোংলায় ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে মোংলা গ্রিন পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (BPDB) CA Oct-22 p-4
- ৪ অক্টোবর ২০২২ বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্ল্যাক আউটের ঘটনা ঘটে। সেদিন দুপুর ২টা ৪ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। বড় রকমের ব্ল্যাকআউটের মুখে পড়ে বাংলাদেশের অর্ধেক অঞ্চল।
- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি (রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল) স্থাপনের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় – ১৯ অক্টোবর ২০২২ (CA Nov-22 p-5, 9)
- রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ঢাকায় বিদ্যুৎ নেয়ার জন্য পদ্মা নদীতে নির্মিত সঞ্চালন লাইনের দৈর্ঘ্য – ৭.৫ কি.মি. (১১টি পিলারের মাধ্যমে) CA Jan-23 p-9
বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য:
- ২০২১-এ ২৪,০০০ মেগাওয়াট
- ২০৩০-এ ৪০,০০০ মেগাওয়াট
- ২০২১ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা মোট উৎপাদনের ১০%
বিদ্যুৎ ইতিহাস:
- BPDB গঠিত হয় ১৯৭২ সালে।
- BERC প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৩ মার্চ, ২০০৩।
- BAEC (পরমাণু শক্তি কমিশন) – ১৯৭৩।
- ঢাকায় প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ জেনারেটর – ৭ ডিসেম্বর, ১৯০১ সালে। জনৈক ব্রিটিশ ব্যক্তি।
- ঢাকায় বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ: ১৯১৯।
বিদ্যুৎ পরিসংখ্যান:
- বিদ্যুৎ কেন্দ্র: ১৪৪টি (সূত্র: বিদ্যুৎ বিভাগ)
- বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র: ৩টি (ফেনীর সোনাগাজী, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ) (কক্সবাজারে নির্মাণাধীন আরো একটি CA May-22 p-19)
- বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী: ১০০%
- মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন: ৬৪০ কিলোওয়াট-ঘন্টা (২০২৩-২০২৪ অর্থবছর)
- বিদ্যুৎ উৎপাদন অঞ্চল – ৪টি। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ।
- বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা: ৬টি (স্বায়ত্তশাসিত ৫টি, সরকারি ১টি)
- বিদ্যুৎ সঞ্চালন সংস্থা: ১টি
- বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা: ৭টি
- পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি: ৮০টি
- শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা: সব উপজেলা।
বিদ্যুৎ সংক্রান্ত প্রথম/বড় যা কিছু:
- বিশ্বে প্রথম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয় যুক্তরাজ্যে। (CA Nov-24 p-08)
- ঢাকায় প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ জেনারেটর – ৭ ডিসেম্বর, ১৯০১ সালে। জনৈক ব্রিটিশ ব্যক্তি।
- জাতীয় গ্রিডে যুক্ত প্রথম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র: সরিষাবাড়ি, জামালপুর
- সবচে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র: পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালী (১৩২০ মেগাওয়াট)
- কয়লাভিত্তিক সবচে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র: পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালী (১৩২০ মেগাওয়াট)
- কয়লাভিত্তিক প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র: বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, দিনাজপুর
- প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র: খুলনায়
- দেশের একমাত্র বার্জমাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র: ভৈরব, খুলনা (১ম বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র)
- একমাত্র ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র: মংলা, বাগেরহাট (50MW)
- সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র: তিস্তা সোলার লিমিটেড (200MW), সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা। নির্মাতা: বেক্সিমকোর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড। (সূত্র: ইত্তেফাক)
- প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র: কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র (কপাবিকে), কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি
- প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পাবনা (2400MW)
- প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র: ফেনীর সোনাগাজীতে মুহুরী নদীর বাঁধ এলাকায়।
- শতভাগ বিদ্যুতায়িত প্রথম জেলা: যশোর
- প্রথম হাইব্রিড বিদ্যুৎকেন্দ্র: সোনাগাজী, ফেনী
- প্রথম উপকেন্দ্র: টঙ্গী উপকেন্দ্র, ঢাকা।
- প্রথম সঞ্চালন লাইন: 132KV
- প্রথম স্থাপিত 400KV লাইন: মেঘনাঘাট-আমিনবাজার
- প্রথম চালুকৃত 400KV লাইন: বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর
- দেশের প্রথম আইসোলেটেড গ্রিড: নোয়াখালীর হাতিয়া
- দীর্ঘতম সঞ্চালন লাইন: খুলনা থেকে ভেড়ামারা, ৩৫৩ কিলোমিটার।
- সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎপ্রাপ্ত প্রথম উপজেলা/জনপদ – চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা।
শতভাগ বিদ্যুতায়িত বাংলাদেশ:
“বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান”, পৃষ্ঠা ৯৭০-৯৭১ অনুসারে “বিদ্যুতায়ন” শব্দটি “বিদ্যুদায়ন” (Electrification) শব্দের অশুদ্ধ প্রচলিত রূপ। সে হিসেবে “বিদ্যুতায়িত” শব্দটির শুদ্ধরূপ হবে “বিদ্যুদায়িত”। যাই হোক, বাংলাদেশের শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিচে দেয়া হলো।
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন – ২১ মার্চ ২০২২। CA Apr-22 p-08, 20
- শতভাগ বিদ্যুতায়িত প্রথম জেলা: যশোর
- শতভাগ বিদ্যুতায়িত সর্বশেষ উপজেলা: রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)। CA Apr-22 p-10
- শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্দেশ্যে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে যেসব দ্বীপ বা চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে: চর সোনারামপুর (আশুগঞ্জ), রাঙ্গাবালী, মনপুরা, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া। (সূত্র: একুশে টেলিভিন – ETV)
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র:
- নাম: Bangladesh-India Friendship Power Company (Pvt.) Ltd.
- অবস্থান: বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলা। খুলনা বিভাগ। সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার উত্তরে পশুর নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত।
- জ্বালানি: কয়লা।
- উৎপাদন ক্ষমতা: ১৩২০ মেগাওয়াট (২×৬৬০ মেঃওঃ)। দুইটি ইউনিট।
- নির্মাণ কাজ শুরু: ২০১০ সালে।
- মালিকানা: Bangladesh-India Friendship Power Company (Pvt.) Ltd. (বাংলাদেশ-ভারত যৌথ মালিকানাধীন) (ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কর্পোরেশন (NTPC) ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (BPDB))
- বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ইউনিট-১ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয়: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২। CA Oct-22 p-4, 6
- প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়: ১৭ নভেম্বর ২০২২। CA Jan-23 p-9