বিভাজ্যতার নিয়ম বা বিভাজ্যতার সূত্র

সর্বশেষ আপডেট:

গণিতের একটি মজার বিষয় হলো বিভাজ্যতার নিয়ম। কোনো সংখ্যা অন্য কোনো ছোট সংখ্যা (যেমন ১, ২, ৩ ইত্যাদি) দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য কিনা তা আমরা বিভাজ্যতার সূত্র থেকে সহজেই বের করতে পারি।

বিভাজ্যতার সূত্র কী:

কোনো পূর্ণসংখ্যাকে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় কিনা তা সহজে নির্ণয়ের নিয়মকে বিভাজ্যতার সূত্র বলা হয়। যেমন, ১২৩ সংখ্যাটি কোন্ কোন্ সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হবে তা আমরা বিভাজ্যতার নিয়ম থেকে সহজেই বের করতে পারি।

১২৩ সংখ্যাটি যেসব সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য:-

  • ১ দ্বারা, কেননা ১২৩ একটি পূর্ণ সংখ্যা
  • ৩ দ্বারা। ১ + ২ + ৩ = ৬। ৬ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায়, ১২৩ সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য
  • ৪১ দ্বারা। ১২৩ ÷ ৩ = ৪১

১ (এক) দিয়ে বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

১ এর জন্য কোনো বিশেষ নিয়মের দরকার নেই। কেননা সকল পূর্ণসংখ্যাই ১ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।

২ (দুই) দিয়ে বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

সকল জোড় সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য। অর্থাৎ যেসব সংখ্যার শেষ অঙ্কটি (Digit) ০, ২, ৪, ৬ অথবা ৮, সেসব সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ১২, ২৪, ৩৬ ইত্যাদি।

৩ (তিন) দ্বারা বিভাজ্যতার সূত্র:

কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলোর যোগফল ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে, ঐ সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ১২৩ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল = ১ + ২ + ৩ = ৬। এখানে ৬ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ১২৩ সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য।

যোগফল যদি খুব বড়ো হয়, তাহলে প্রাপ্ত যোগফলটিকে আবার একই সূত্রে ফেলে দেখতে হবে তা ৩ দ্বারা বিভাজ্য হয় কিনা। এভাবে চালিয়ে যেতে হবে। যেমন, ৯৮৭৯৮৭৯৮৭ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল ৭২। আবার ৭২ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল ৯। এভাবে সর্বশেষ প্রাপ্ত যোগফল ৯ সংখ্যাটি যেহেতু ৩ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ৯৮৭৯৮৭৯৮৭ সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য।

৩ দ্বারা বিভাজ্যতার আরেকটি সূত্র:

কোনো সংখ্যায় যতগুলো ২, ৫ ও ৮ আছে এবং যতগুলো ১, ৪ ও ৭ রয়েছে, তাদের বিয়োগফল ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ২৫৮৮১৪৭৭ সংখ্যাটি বিবেচনা করি।
২, ৫, ৮ অঙ্কগুলো রয়েছে মোট ৪টি।
১, ৪, ৭ অঙ্কগুলো রয়েছে মোট ৪টি।
বিয়োগফল = ৪ – ৪ = ০ (শূন্য)।
যেহেতু ০ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ২৫৮৮১৪৭৭ সংখ্যাটিও ৩ দ্বারা বিভাজ্য।

৪ (চার) দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

কোনো সংখ্যার একক ও দশক স্থানীয় অঙ্কগুলো মিলে যে সংখ্যা তৈরি হয়, তা ৪ দ্বারা বিভজ্য হলে পুরো সংখ্যাটিও ৪ দ্বার বিভাজ্য হবে। আবার কোনো সংখ্যার শেষে/সর্বডানে ০০ (দুটি শূন্য) থাকলেও উক্ত সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ১২৩৪০ সংখ্যাটির একক ও দশক স্থানীয় অঙ্ক দুটি মিলে ৪০ সংখ্যাটি হয়, যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ১২৩৪০ সংখ্যাটিও ৪ দ্বারা বিভাজ্য।

৪ দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার আরো কিছু বৈশিষ্ট্য:

  • দশক স্থানীয় অঙ্কটি জোড় হলে, একক স্থানীয় অঙ্কটি ০, ৪ বা ৮ হবে।
  • দশক স্থানীয় অঙ্কটি বিজোড় হলে, একক স্থানীয় অঙ্কটি ২ বা ৬ হবে।
  • দশক স্থানীয় অঙ্কটির দ্বিগুণের সাথে একক স্থানীয় অঙ্কটি যোগ করলে, যোগফল ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

৫ (পাঁচ) দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটি ০ বা ৫ হলে উক্ত সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ১০৫, ১২০ ইত্যাদি।

৬ (ছয়) দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

আমরা জানি, ৬ = ২ × ৩
সুতরাং কোনো সংখ্যা যদি একই সাথে ২ এবং ৩ দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে উক্ত সংখ্যাটি ৬ দ্বারা বিভাজ্য হবে। আরো সহজ করে বললে, যেসব জোড় সংখ্যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য সেগুলো ৬ দ্বারাও বিভাজ্য। যেমন, ১৮, ৭২ ইত্যাদি।

৭ (সাত) দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম:

৭ দ্বারা বিভাজ্যতার অনেকগুলো সূত্র আছে। কিছু সূত্র বড়ো সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সুবিধাজনক, আর অন্যগুলো ছোটো সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সুবিধাজনক।

ছোটো সংখ্যার ক্ষেত্রে ৭ দ্বারা বিভাজ্যতার সহজ সূত্র:

এই নিয়মগুলো ছোটো সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা বেশি সুবিধাজনক। তবে বড়ো সংখ্যার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যাবে। সেক্ষেত্রে সূত্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফলকে আবার সূত্রে ফেলতে হবে। অর্থাৎ একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

সূত্র ১
একক স্থানীয় অঙ্কটিকে ২ দিয়ে গুণ করে, গুণফলকে বাকি সংখ্যা থেকে বিয়োগ করি। বিয়োগফল ৭ দ্বারা বিভাজ্য হলে ঐ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন ৮৫৪-এর ক্ষেত্রে, ৮৫ – (৪ × ২) = ৮৫ – ৮ = ৭৭। এখানে ৭৭ সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায় ৮৫৪ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

বড়ো সংখ্যার ক্ষেত্রে একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করতে হবে। যেমন,
২৩৪৫৭-এর ক্ষেত্রে, ২৩৪৫  – (৭ × ২) = ২৩৩১
২৩৩১-এর ক্ষেত্রে, ২৩৩  – (১ × ২) = ২৩১
২৩১-এর ক্ষেত্রে, ২৩  – (১ × ২) = ২১
২১ সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায়, ২৩৪৫৭-সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য।

সূত্র ২
একক স্থানীয় অঙ্কটিকে ৫ দিয়ে গুণ করে, গুণফলকে বাকি সংখ্যার সাথে যোগ করি। যোগফল ৭ দ্বারা বিভাজ্য হলে ঐ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন,
৮৫৪-এর ক্ষেত্রে, ৮৫ + (৪ × ৫) = ৮৫ + ২০ = ১০৫
১০৫-এর ক্ষেত্রে, ১০ + (৫ × ৫) = ১০ + ২৫ = ৩৫
৩৫ সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায় ৮৫৪ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

সূত্র ৩
একক স্থানীয় অঙ্কটিকে ৯ দিয়ে গুণ করে, গুণফলকে বাকি সংখ্যা থেকে বিয়োগ করি। বিয়োগফল ৭ দ্বারা বিভাজ্য হলে ঐ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন ৮৫৪-এর ক্ষেত্রে, ৮৫ – (৪ × ৯) = ৮৫ – ৩৬ = ৪৯। এখানে ৪৯ সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায় ৮৫৪ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে। বড়ো সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রাপ্ত বিয়োগফল স্বাভাবিকভাবেই বড়ো হবে। সেক্ষেত্রে নিয়মগুলোর পুনরাবৃত্তি করা যায়।

বড়ো সংখ্যার ক্ষেত্রে ৭ দ্বারা বিভাজ্যতার সহজ সূত্র:

কোনো বড়ো সংখ্যাকে ডানপাশ থেকে তিনটি তিনটি করে অঙ্ক নিয়ে সংখ্যা-গ্রুপে বিভক্ত করি। সংখ্যা-গ্রুপগুলো ডানপাশ থেকে পর্যায়ক্রমে যোগবিয়োগ করি। প্রাপ্ত ফলাফল যদি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে ঐ বড়ো সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ৪৫৮১৬২৯০৩৭৩ সংখ্যাটি বিবেচনা করি। ডানপাশ থেকে তিনটি তিনটি অঙ্ক নিয়ে পাই, ৪৫,৮১৬,২৯০,৩৭৩

ডানপাশ থেকে ১ম সংখ্যা-গ্রুপ = (+) ৩৭৩
ডানপাশ থেকে ২য় সংখ্যা-গ্রুপ = (-) ২৯০
ডানপাশ থেকে ৩য় সংখ্যা-গ্রুপ = (+) ৮১৬
ডানপাশ থেকে ৪র্থ সংখ্যা-গ্রুপ = (-) ৪৫
———————————————
ফলাফল = ৩৭৩ – ২৯০ + ৮১৬ – ৪৫ = ৮৫৪, যা ৭ দ্বারা বিভাজ্য।
সুতরাং ৪৫,৮১৬,২৯০,৩৭৩ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য।

তিন অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা-গ্রুপের ক্ষেত্রে আরো কিছু বিষয় লক্ষ্যণীয়:

  • গ্রুপগুলো যদি জোড়ায় জোড়ায় পাশাপাশি বা দুই গ্রুপ পরপর থাকে, তাহলে তা অবশ্যই ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন,
    ২৩,০২৩ > ০২৩,০২৩ > ০২৩ দুইবার ও পাশাপাশি রয়েছে। সুতরাং সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য।
  • প্রতিটি গ্রুপ যদি আলাদাভাবে ৭ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ৫২৫,০৬৩-এর ক্ষেত্রে ৫২৫ ও ০৬৩ দুটোই ৭ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ৫২৫০৬৩ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য।
  • উপরের দুটো নিয়মের সমন্বয়েও ৭ দ্বারা বিভাজ্যতা যাচাই করা যায়। যেমন, ৯৮৭,১২৩,১২৩ সংখ্যার ক্ষেত্রে ১২৩ গ্রুপটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য নয়। তবে এটি জোড় সংখ্যায় (দুইবার) পাশাপাশি রয়েছে। অন্য গ্রুপে ৯৮৭ সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং, ৯৮৭,১২৩,১২৩ পুরো সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য।

৮ (আট) দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম:

৭-এর মতো ৮ দ্বারা বিভাজ্যতা যাচাইয়ের জন্যও অনেকগুলো সূত্র রয়েছে। আমরা প্রথমে সহজ সূত্রগুলো আলোচনা করবো। তারপর অন্যগুলোর বিষয়ে আলোকপাত করবো।

৮ দ্বারা বিভাজ্যতার সহজ সূত্র:

৮ দ্বারা বিভাজ্যতার ক্ষেত্রে নিচের তিনটি সূত্রই যথেষ্ট। আমার মনে হয় এগুলোই সবচে সহজ।

  • কোনো সংখ্যার শেষে/সর্বডানে ০০০ (তিনটি শূন্য) থাকলে উক্ত সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ১০০০, ২০০০ ইত্যাদি।
  • কোনো সংখ্যার শতক স্থানীয় অঙ্কটি জোড় হলে, ঐ সংখ্যার একক ও দশক স্থানীয় অঙ্কগুলো মিলে যে সংখ্যা তৈরি হয়, তা যদি ৮ দ্বারা বিভজ্য হয়, তবে পুরো সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ৬৩২ সংখ্যাটির শতক স্থানীয় অঙ্ক ৬, যা একটি জোড় সংখ্যা। আবার সংখ্যাটির শেষ দুটি অঙ্ক মিলে ৩২ সংখ্যাটি হয়, যা ৮ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ৬৩২ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য।
  • কোনো সংখ্যার শতক স্থানীয় অঙ্কটি বিজোড় হলে, ঐ সংখ্যার একক ও দশক স্থানীয় অঙ্কগুলো মিলে যে সংখ্যা তৈরি হয়, তার সাথে ৪ যোগ করে যোগফল যদি ৮ দ্বারা বিভজ্য হয়, তবে পুরো সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ৩৪৪ সংখ্যাটির শতক স্থানীয় অঙ্ক ৩, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। আবার সংখ্যাটির শেষ দুটি অঙ্ক মিলে ৪৪ সংখ্যাটি হয়, যার সাথে ৪ যোগ করলে যোগফল ৪৮ হয়। ৪৮ সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ৩৪৪ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য।

৮ দ্বারা বিভাজ্যতার আরো কয়েকটি সূত্র:

তো ৮ দ্বারা বিভাজ্যতার আরো কয়েকটি সূত্র জেনে নিই।

  • কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশক স্থানীয় অঙ্কের দ্বিগুণশতক স্থানীয় অঙ্কের চারগুণ যোগ করলে, যোগফল যদি ৮ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে পুরো সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ৫৬৮ সংখ্যাটি বিবেচনা করি।
    একক স্থানীয় অঙ্ক = ৮
    দশক স্থানীয় অঙ্কের দ্বিগুণ = ৬ × ২ = ১২
    শতক স্থানীয় অঙ্কের চারগুণ = ৫ × ৪ = ২০
    যোগফল = + ১২ + ২০ = ৪০
    যেহেতু ৪০ সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ৫৬৮ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য।
  • কোনো সংখ্যার শতক ও দশক স্থানীয় অঙ্ক মিলে যে সংখ্যা তৈরি হয়, তার দ্বিগুণের সাথে একক স্থানীয় অঙ্কটি যোগ করতে হবে। যোগফল ৮ দ্বারা বিভাজ্য হলে, ঐ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ২৪ এর ক্ষেত্রে শতক ও দশক স্থানীয় অঙ্ক মিলে ২৪ হয়। ২৪ এর দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪৮ এর সাথে একক স্থানীয় অঙ্ক যোগ করলে যোগফল ৪৮ হয়। যেহেতু ৪৮ সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ২৪০ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য।
  • কোনো সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য হলে, উক্ত সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ১২৩৪৪ সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্কের দ্বারা গঠিত সংখ্যা হলো ৩৪৪। যেহেতু ৩৪৪ সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ১২৩৪৪ সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য।

৯ (নয়) দিয়ে বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

৯ এর বিভাজ্যতার সূত্র অনেকটা ৩ এর মতো। অর্থাৎ কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলোর যোগফল ৯ দ্বারা বিভাজ্য হলে, ঐ সংখ্যাটিও ৯ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

যোগফল যদি খুব বড়ো হয়, তাহলে প্রাপ্ত যোগফলটিকে আবার একই সূত্রে ফেলে দেখতে হবে তা ৯ দ্বারা বিভাজ্য হয় কিনা। এভাবে চালিয়ে যেতে হবে। যেমন, ৯৮৭৯৮৭৯৮৭ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল ৭২। আবার ৭২ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল ৯। এভাবে সর্বশেষ প্রাপ্ত যোগফল ৯ সংখ্যাটি যেহেতু ৯ দ্বারা বিভাজ্য, সুতরাং ৯৮৭৯৮৭৯৮৭ সংখ্যাটিও ৯ দ্বারা বিভাজ্য।

১০ (দশ) দিয়ে বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটি ০ (শূন্য) হলে তা ১০ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ৩০, ৫০০ ইত্যাদি।

১১ (এগারো) দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম:

কোনো সংখ্যার জোড় স্থানীয় অঙ্কগুলোর যোগফল এবং বিজোড় স্থানীয় অঙ্কগুলোর যোগফল পরস্পর সমান হলে, উক্ত সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, সংখ্যাটির জোড় স্থানীয় অঙ্কগুলোর যোগফল = ১ + ৩ + ৫ = ৯। এবং বেজোড় স্থানীয় অঙ্কগুলোর যোগফল = ২ + ৪ + ৩ = ৯। দুটি যোগফলই পরস্পর সমান। সুতরাং ১২৩৪৫৩ সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য।

অন্যভাবে বলা যায়, কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলো পর্যায়ক্রমে যোগবিয়োগ করলে ফলাফল যদি শূন্য হয়, তবে সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন, ১৬৭৮৯৩-এর ক্ষেত্রে, + ১ – ৬ + ৭ – ৮ + ৯ -৩ = ০। সুতরাং ১৬৭৮৯৩ সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য।

১২ (বারো) দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র:

১২ = ২ × ২ × ৩ = ৪ × ৩

সুতরাং ১২ দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  • এটি অবশ্যই জোড় সংখ্যা হবে।
  • ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে।
  • ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

এর থেকে আমরা সহজেই ১২ দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যার সূত্র বের করতে পারি। যেসব জোড় সংখ্যা, ৩ এবং ৪ – উভয়টি দ্বারা বিভাজ্য, সেগুলো ১২ দ্বারাও বিভাজ্য। যেমন, ৫৪০ সংখ্যাটি একটি জোড় সংখ্যা এবং ৩ ও ৪ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ৫৪০ সংখ্যাটি ১২ দ্বারাও বিভাজ্য।

কৃতজ্ঞতা:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।