বাংলা ভাষায় এমন অনেক শব্দ বা শব্দ-সমষ্টি আছে, যাদের আভিধানিক অর্থের সাথে ব্যবহারিক অর্থের যথেষ্ট অমিল রয়েছে। এদেরকে বাগ্ধারা বলা হয়। এ ধরনের শব্দসমষ্টির একটি তালিকা ও তাদের ব্যবহারিক অর্থ নিচে তুলে ধরা হলো।
অকর্মার ধাড়ি – নিতান্ত অলস ব্যক্তি, যে ব্যক্তি আলস্যহেতু কাজ পণ্ড করে
অকালকুষ্মাণ্ড – মূর্খ, অপদার্থ, অকর্মা, অকর্মণ্য (শাব্দিক আর্থ:- অকালে জাত কুমড়ো)
অকালবোধন – অসময়ে জাগরিতরকণ
অকালে বাদলা – অপ্রত্যাশিত বাধা
অকূলপাথার – ভীষণ বিপদ, মহাসংকট (শাব্দিক অর্থ: অসীম সমুদ্র)
অকূলে কূল পাওয়া – মহাবিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া
অকূলে ভাসা – গভীর সংকটে দিশাহারা হওয়া
অকূলের কূল – যে ব্যক্তি বিপদে উদ্ধার করে
অক্কা পাওয়া – মারা যাওয়া (অক্কা অর্থ – ঈশ্বর, প্রভু)
অক্কাপ্রাপ্তি – মৃত্যু (অক্কা অর্থ – ঈশ্বর, প্রভু)
অক্ষরে অক্ষরে – বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম না করে, হুবহু
অক্ষয় বট – প্রাচীন ব্যক্তি
অগস্ত্যযাত্রা – শেষ বিদায়, চিরদিনের জন্য প্রস্থান
অগাধ জলের মাছ – সুচতুর ব্যক্তি
অগ্নিপরীক্ষা – কঠিন পরীক্ষা
অগ্নিপুরুষ – আগুনের মতো তেজস্বী ব্যক্তি
অগ্নিমন্ত্র – কঠিন শপথ
অগ্নিমূর্তি – অতিশয় ক্রোধান্বিত
অগ্নিমূল্য – দুর্মূল্য, মহার্ঘ
অগ্নিশর্মা – নিরতিশয় ক্রুদ্ধ। ক্ষিপ্ত। কোপনস্বভাব ব্যক্তি
অঘটনঘটনকুশল/ অঘটনঘটনপটীয়ান/ অঘটনঘটনপটু – অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটাতে পটু (স্ত্রীলিঙ্গ: অঘটনঘটনপটীয়সী)
অঙ্ক কষা – হিসাব করা। গণনা করা
অচন্দ্রচেতন – যৌন চেতনাশূন্য
অজগরবৃত্তি – আলসেমি
অঞ্চলপ্রভাব – স্বামীর ওপর স্ত্রীর প্রভাব
অতি দর্পে হত লঙ্কা – অহংকার পতনের মূল
অতি মেঘে অনাবৃষ্টি – মেঘের আড়ম্বর হলেই বৃষ্টি হয় না
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট – বেশি লোভে ক্ষতি
অথই জলে পড়া – দিশেহারা হওয়া
অদৃষ্টলিপি – কপালের লিখন
অদৃষ্টের পরিহাস – ভাগ্যের বিড়ম্বনা
অধস্তন পুরুষ – পরবর্তী প্রজন্ম
অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট – বেশি লোক কাজের বিশৃঙ্খলা ঘটায়
অনন্তনিদ্রা – মৃত্যু
অনন্তযাত্রা – অন্তহী যাত্রা, মহাযাত্রা, মৃত্যু
অনন্তশয্যা – মৃত্যু
অনুরোধে ঢেঁকি গেলা – অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনুরোধে কিছু করা
অন্তরটিপুনি – অগোচরে অন্যের হৃদয়ে গোপনে আঘাতদান। গোপন ব্যথা। মর্মপীড়াদায়ক
অন্তিম অবস্থা – মুমূর্ষু অবস্থা, শেষ দশা
অন্তিমকাল – মৃত্যুকাল, শেষ সময়
অন্তিমদশা – মুমূর্ষু অবস্থা, শেষ দশা
অন্তিমশয্যা – মৃত্যুশয্যা, শেষ শয্যা
অন্তিমশয়ন – যে শয়নে মৃত্যু ঘটে
অন্তিমসময় – মৃত্যুকাল, শেষ সময়
অন্ধকার দেখা – দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হওয়া
অন্ধকারে ঢিল মারা – আন্দাজে কাজ করা, অনুমান বা আন্দাজের ওপর নির্ভর করে কোনো কিছু করা বা কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা
অন্ধকারে থাকা – কোনো বিষয় সম্পর্কে অবগত না থাকা
অন্ধকারে হাতড়ানো – অনুমানের ওপর নির্ভর করে খোঁজা
অন্ধকে দর্পণ দেখানো – নির্বোধকে জ্ঞান দান
অন্ধ হওয়া – পক্ষপাতদুষ্ট হওয়া। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হওয়া
অন্ধের নড়ি – অসহায়ের সহায়, অক্ষমের অবলম্বন
অন্ধের যষ্ঠি – অসহায়ের সহায়, অক্ষমের অবলম্বন
অন্ধের হাতি দেখা – অল্প জ্ঞান লাভ করে বিজ্ঞের মতো অভিমত
অন্ন ওঠা – জীবিকা বন্ধ হওয়া। পরমায়ু শেষ হওয়া
অন্নচিন্তা চমৎকারা – অন্তচিন্তা এমনই চমৎকার যে ক্ষুধায় কাতর ব্যক্তির কোনো গুণের বিকাশ সম্ভব নয়
অমনি অমনি – অকারণে
অমনি একরকম – ভালোও নয় মন্দও নয় এমন অবস্থা
অমাবস্যার চাঁদ – দুর্লভ বস্তু
অমৃতপথযাত্রী – মৃত্যুপথযাত্রী
অরণ্যে রোদন – নিষ্ফল আবেদন, বিফল প্রার্থনা। বৃথা চেষ্টা
অর্ধচন্দ্র – গলাধাক্কা
অলক্ষ্মীতে পাওয়া – বারবার দুর্দশাগ্রস্ত হওয়া
অলক্ষ্মীর দশা – শ্রীহীনতা। দারিদ্র্য
অলক্ষ্মীর দৃষ্টি – অভাব-অনটন, দুর্দশা, দুর্ভাগ্য
অল্প জলের মাছ – যে ব্যক্তি সামান্য বিদ্যা নিয়ে অধিক পাণ্ডিত্যের ভান করে। যে ব্যক্তি সামান্য সম্পদ নিয়ে গর্ব করে
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী – অগভীর জ্ঞান থেকে জাত অহংকার যা ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে, স্বল্প জ্ঞান নিয়ে বাড়াবাড়ি মূর্খতার পরিচয়
অষ্টরম্ভা – কাঁচকলা, ফাঁকি, অলীক বস্তু, ঘোড়ার ডিম
অসারের তর্জন গর্জন সার – গুণহীনের বৃথা আস্ফালন
অস্ত্র করা – অস্ত্রের সাহায্যে চিকিৎসা করা, শল্যচিকিৎসা করা, অস্ত্রোপচার করা
অস্থান-কুস্থান – নিষিদ্ধ স্থান
অস্থিতপঞ্চ, অস্থিরপঞ্চক, অস্থিরপঞ্চম – কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। কঠিন সমস্যা
অহিনকুল সম্পর্ক/ সম্বন্ধ – শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক, ভীষণ শত্রুতা
আউলিয়া চাঁদ – যে অল্পেই আকুল হয়
আওয়াজ দেওয়া – সাড়া দেওয়া
আঁক কষা – সংখ্যাবিষয়ক প্রশ্নের সমাধান করা
আঁক কাটা – আঁচড় কাটা
আঁকজোক কাটা – হিজিবিজি আঁচড় কাটা বা রেখা টানা
আকাশকুসুম – অলীক কল্পনা, কাল্পনিক বিষয় বা বস্তু
আকাশ থেকে পড়া – হঠাৎ কোনো অজানা বিষয় জানতে পেরে অত্যন্ত বিস্মিত হওয়া
আকাশ ধরা – বৃষ্টি থেমে আসা
আকাশপাতাল – প্রচুর, বিশাল
আকাশ ভেঙে পড়া – হঠাৎ মহাবিপদে পড়া
আকাশ হাতে পাওয়া – দুর্লভ বস্তু লাভের আশ্বাস পাওয়া
আকাশে তোলা – অতিরিক্ত প্রশংসা করা
আকাশের চাঁদ – দুর্লভ বস্তু
আক্কেলগুড়ুম – হতবুদ্ধি, স্তম্ভিত
আক্কেল দাঁত ওঠা – পাকা বুদ্ধি
আক্কেলসেলামি – নির্বুদ্ধিতার জন্য প্রদত্ত দণ্ড, অনভিজ্ঞতাজনিত খেসারত
আক্কেল হওয়া – বিপদে পড়ে শিক্ষা হওয়া
আগডুম-বাগডুম – অর্থহীন ও অসংলগ্ন কথা (মূল্য অর্থ: অগ্রবর্তী ও পার্শ্ববর্তী ঘোড়সওয়ার ডোমসৈন্য)
আগড়-বাগড় – বেদরকারি জিনিসপত্র। অপ্রাসঙ্গিক কথা
আগড়ম-বাগড়ম – অর্থহীন ও অসংলগ্ন কথা
আগার পাগার – পূর্বাপর, আগপাছ
আগুন করা – আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করা
আগুন তাপানো – আগুনের কাছে বসে হাত-প গরম করা, আগুন পোহানো
আগুন ধরা – আগুন জ্বলে ওঠা
আগুন নিয়ে খেলা – গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নিয়ে ছিনিমিনি খেলা
আগুন পোহানো, আগুন পোয়ানো – আগুনের কাছে বসে হাত-প গরম করা, আগুন তাপানো
আগুন লাগানো – অগ্নিসংযোগ করা
আগুন হওয়া – অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হওয়া
আগুনে ঘি ঢালা – রাগ বাড়ানো
আগেপাছে করা – ইতস্তত করা
আঙুল ফুলে কলাগাছ – হঠাৎ ধনী হওয়া
আচ্ছন্ন দৃষ্টি – ঝাপসা দৃষ্টি। বিহ্বল দৃষ্টি
আছাড়ি-পিছাড়ি – মাটিতে গড়াগড়ি
আটকপালে, আটকপালিয়া – অভাগা, হতভাগ্য, পোড়াকপালে
আটঘাট বাঁধা – চতুর্দিক বন্ধ করা
আটাপেষা করা – বেদম প্রহার করা
আঠার আনা
আঠারো মাসে বছর – দীর্ঘসূত্রতা
আড্ডা গাড়া – বাসস্থান তৈরি করা বা বাসা বাঁধা
আঁতকে ওঠা – ভয়ে চমকে ওঠা, সচকিত হওয়া
আঁত খালি হওয়া – পেট খালি হওয়া
আঁত পড়া – পেট খালি হওয়া, আঁত বসা
আঁত বসা – পেট খালি হওয়া, আঁত পড়া
আঁতিপাঁতি করে – পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে, তন্নতন্ন করে
আঁতে ঘা – মনে ব্যথা দেওয়া, মর্মে আঘাত
আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়া – ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া
আদমব্যাপারী – জনশক্তি রপ্তানিসংক্রান্ত ব্যবসায়ে নিয়োজিত ব্যক্তি
আদা জল খেয়ে লাগা – প্রাণপণ চেষ্টা করা
আদার ব্যাপারী – ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সামান্য বিষয়ে ব্যস্ত ব্যক্তি
আদায়-কাঁচকলায় – পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন
আধখ্যাঁচড়া – অসম্পূর্ণ, অর্ধসম্পাদিত। বিশৃঙ্খল, এলোমেলো
আপন পায়ে কুড়াল মারা – নিজের অনিষ্ট নিজে করা
আবোল-তাবোল – অর্থহীন বাক্য, অসংলগ্ন উক্তি। প্রলাপ
আমতা-আমতা করা – কোনো বিষয় স্বীকার ও অস্বীকারের ইতস্তত ভাব করা, ইতস্তত করা
আমল দেওয়া – প্রশ্রয় বা পাত্তা দেওয়া, বিবেচনায় আনা
আমড়া কাঠের ঢেঁকি – অপদার্থ
আমড়াগাছি করা – তোষামোদ করা, স্তুতি করা
আমির ওমরা – বিত্তবান বা ধনী ব্যক্তি। উচ্চপদস্থ কর্মচারী। বাদশাহী দরবারের সভাসদ
আলগা থাকা – কোনো কিছুতে জড়িত না হওয়া, দূরে দূরে থাকা
আলালের ঘরের দুলাল – অতি আদরে নষ্ট পুত্র
আলুর দোষ – লাম্পট্য, চরিত্রদোষ
আলো-আঁধারি – কিছুটা স্পষ্ট এবং কিছুটা অস্পষ্ট এমন
আলো করা – আলোকিত করা, উজ্জ্বল করা
আশকারা দেওয়া – প্রশ্রয় দেওয়া
আষাঢ়ে গল্প – আজগুবি গল্প, অবিশ্বাস্য কাহিনি, গাঁজাখুরি গল্প
আসমান জমিন তফাত – আকাশপাতাল প্রভেদ, দূরতিক্রম্য ব্যবধান
আসমান জমিন ফারাক – আকাশপাতাল প্রভেদ, দূরতিক্রম্য ব্যবধান
আস্তানা গাড়া – আড্ডা বা সাময়িক বসতি স্থাপন করা
আস্তিন গুটানো – ভীতিপ্রদর্শন করা (শাব্দিক অর্থ: জামার আস্তিন গুটিয়ে তোলা)
আহ্লাদ দেওয়া – প্রশ্রয় দেওয়া
আহ্লাদে আটখানা – অত্যন্ত খুশি
আড় ভাঙা – জড়তা ভেঙে আলস্য দূর করা
আড়মোড়া ভাঙা – জড়তা ভেঙে আলস্য দূর করা
আড়ি ধরা – গোঁ ধরা
আড়ি পাতা – আড়াল থেকে গোপনে অন্যের কথা শোনা, লুকিয়ে লুকিয়ে শোনা
আড়ি ভাঙা – মান ভাঙা। আলস্য ভাঙা
আড়ে গেলা – না চিবিয়ে তাড়াতাড়ি খাওয়া
ইঁচড়ে পাকা – অকালপক্ব। বখাটে, বাচাল
ইতর কথা – অভদ্রজনোচিত কথা
ইতি করা – শেষ করা
ইঁদুর কপালে – নিতান্ত মন্দ ভাগ্য
ইনিয়ে-বিনিয়ে – ঘুরিয়ে ফিরিয়ে, অনুনয়বিনয় করে
ইলশেগুঁড়ি, ইলশাগুঁড়ি – গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, ঝিরঝিরে বৃষ্টি (যে বৃষ্টিতে অধিক সংখ্যক ইলিশমাছ ধরা পড়ে এমন ধারণা)
ঈদের চাঁদ – অতি আকাঙ্ক্ষিত বস্তু
উজানের কই – সহজলভ্য
উটকো খবর – উড়ো খবর, ভিত্তিহীন সংবাদ
উটকো মানুষ – অপরিচিত বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি
উটকোমুখো – কিম্ভূতদর্শন, কদাকার
উত্তমমধ্যম – প্রচণ্ড প্রহার, মারধর
উত্তর-প্রত্যুত্তর – বাদপ্রতিবাদ, তর্কবিতর্ক
উনপঞ্চাশ পবন – পাগলামির হাওয়া (ঊনপঞ্চাশ বায়ু – পাগলামী)
উনপাঁজুরে, ঊনপাঁজুড়ে – দুর্বল, অক্ষম। হতভাগ্য (শাব্দিক অর্থ:- পাঁজরের জোর কম এমন)
উনিশবিশ – সামান্য পার্থক্য
উপরোধে ঢেঁকি গেলা – অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনুরোধে কিছু করা
উর্বরমস্তিষ্ক – মাথায় নানা রকম বুদ্ধি খেলে এমন
উলটা কথা – বিপরীত কথা
উলটা বুঝা – ভুল বোঝা, বিকৃত অর্থ করা
উলুখাগড়া – অনগ্রসর ব্যক্তি, নিরীহ প্রজা, গুরুত্বহীন লোক
উলু বনে মুক্তা ছড়ানো – অস্থানে মূল্যবান দ্রব্য প্রদান। অপাত্রে সম্প্রদান করা
উড়ে এসে জুড়ে বসা – অনধিকার চর্চা
উড়োচিঠি – বেনামি পত্র
ঊনকোটি চৌষট্টি – প্রায় সম্পূর্ণ (উনকোটি অর্থ:- বহুসংখ্যক, প্রায় এক কোটি)
ঊর্ধ্বকণ্ঠ – উদ্গ্রীব
ঊর্ধ্বকর্ণ – উৎকর্ণ
ঊর্ধ্বশ্বাসে – অতিশয় দ্রুতবেগে, তীব্র গতিতে
এক আধ – অতি অল্পসংখ্যক
এক আধটা – দুয়েকটি, কিছু সংখ্যক
এক আধটু – সামান্য পরিমাণ
এক আধবার – দুয়েকবার, কখনো কখনো
এক কথা – যে কথার নড়চড় হয় না, অপরিবর্তনীয় বাক্য
এক কথার মানুষ – দৃঢ়সংকল্প ব্যক্তি
এক ক্ষুরে মাথা মুড়ানো – একই স্বভাবের
এক গোয়ালের গরু/ গোরু – (তুচ্ছার্থে) একই দলের লোক
একচোখা – পক্ষপাতদুষ্ট
এক ডাকের পথ – কাছাকাছি
এক ঢিলে দুই পাখি মারা – এক প্রচেষ্টায় উভয় উদ্দেশ্য সাধন করা
এক বনে দুই বাঘ – প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী
এক মাঘে শীত যায় না – বিপদ একবারই আসে না
এক হাত লওয়া – প্রতিশোধ নেয়া
একাদশে বৃহস্পতি – সৌভাগ্যের বিষয়। সুসময়
এঁটে ওঠা – পেরে ওঠা, সামলে ওঠা
এঁটে যাওয়া – সংকুলান হওয়া, ধরা
এত এত – বিপুল পরিমাণ, রাশি রাশি
এন্ডায় গন্ডায় – গোঁজামিল করে, ফাঁকি দিয়ে
এলাহি কাণ্ড – বিরাট ব্যাপার, মহা ধুমধাম
এসপার-ওসপার – চূড়ান্ত নিষ্পত্তি
ওজন বুঝে চলা – আত্মসম্মান রক্ষা করা
ওঝার ব্যাটা বনগোরু – পণ্ডিতের মূর্খ পুত্র
ওত পাতা – সুযোগের অপেক্ষায় থাকা
ওষুধ পড়া – প্রভাব পড়া
ওষুধে ধরা, ঔষধ ধরা – সক্রিয় হওয়া
ঔষধ করা – বশ করা
ক-অক্ষর গোমাংস – অশিক্ষিত ব্যক্তি, বর্ণপরিচয়হীন
কই মাছের প্রাণ – যা সহজে মরে না, দীর্ঘজীবী
কইয়ের তেল দিয়ে কই ভাজা – অন্যের উপর দিয়ে স্বার্থোদ্ধার করা
কচুকাটা করা – কচুর মতো নির্বিচারে কাটা, নির্মূল করা
কচুপোড়া – অখাদ্য
কচুপোড়া খাওয়া – প্রত্যাশা করে বিফল হওয়া
কচু বনের কালাচাঁদ
কচ্ছপের কামড় – নাছোড়বান্দা
কত করে – নানাভাবে, বহু অনুনয়বিনয় সহকারে
কত ধানে কত চাল – টের পাওয়ানো
কথা কাটা – যুক্তি দিয়ে কোনো মত খণ্ডন করা
কথা কাটাকাটি – বাদানুবাদ
কথা কাটাকাটি করা – বাদ প্রতিবাদ করা
কথা চালা – এক কান থেকে অন্য কানে সংবাদ রটনা করা
কথা চালাচালি – কথা বা গুজব রটনা
কথা দিয়ে কথা নেয়া – কৌশলে মনের কথা বের করা
কথা দেওয়া – প্রতিশ্রতি দেওয়া, অঙ্গীকার করা
কথা পাড়া – প্রসঙ্গ উত্থাপন করা
কথা ফেলা – কথা আগ্রাহ্য করা
কথা ফোটা – বাক্স্ফুরণ হওয়া
কথা বাড়ানো – তর্কবিতর্ক প্রলম্বিত করা, সামান্য বিষয়কে দীর্ঘায়িত করা
কথার কথা – গুরুত্বহীন কথা
কথার তুবড়ি – অনর্গল কথার তোড়
কথা শোনা – কথা মান্য করা
কথা সরা – বাক্স্ফূর্তি হওয়া
কথায় চিড়া ভেজা – ফাঁকা আওয়াজে কাজ আদায়
কনেদেখা – বিবাহের পূর্বে পাত্রপক্ষ কর্তৃক পাত্রী দেখার সংস্কার
কনেদেখা-আলো, কন্যাসুন্দর-আলো – গোধূলির মৃদু সোনালি আলো, যে আলোতে সবকিছু সুন্দর দেখায়
কপর্দকশূন্য – নিঃসম্বল
কপালগুণে গোপাল ঠাকুর – অযোগ্যের ভাগ্যগুণে বড় হওয়া
কপাল চাপড়ানো – ভাগ্যকে দোষারোপ করে দুঃখ প্রকাশ করা, নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা করা
কপালজোর – ভাগ্যের আনুকূল্য
কপাল ঠোকা – মাথা ঠোকা
কপাল পোড়া – সৌভাগ্য নষ্ট হওয়া, দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটা। হতভাগ্য
কপাল ফাঁটা – অদৃষ্ট মন্দ হওয়া
কপাল ফেরা – অবস্থার উন্নতি হওয়া, সৌভাগ্যের সূচনা হওয়া, সৌভাগ্য লাভ
কপাল ভাঙা – দুর্ভাগ্যের কবলে পড়া
কপালের লিখন – ভাগ্যলিপি, অদৃষ্টলিপি, বিধাতার ইচ্ছা (অদৃষ্টলিপি ভুক্তিতে রয়েছে)
কবজা করা – আয়ত্তে আনা, অনৈতিকভাবে দখল করে রাখা
কবর দেওয়া – বিসর্জন করা, সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করা (শাব্দিক অর্থ:- কবরস্থ করা, দাফন করা)
করাতের দাঁত – উভয়সংকট
কলকাঠি নাড়া – (সচরাচর স্বার্থসিদ্ধি বা অসৎ উদ্দেশ্যে) আড়াল থেকে প্রভাব খাটিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা
কলকে পাওয়া – স্বীকৃতি পাওয়া। পাত্তা পাওয়া
কল টেপা – বন্দুকের ঘোড়া টিপে গুলি করা
কলমপেষা – (কলমের দ্বারা লেখা সংক্রান্ত পেশা) লেখক। কেরানির পেশা
কলা দেখানো – প্রতারণা করা, ফাঁকি দেওয়া। তোয়াক্কা না করা
কলির সন্ধ্যা – দুর্দিনের সূত্রপাত হওয়া
কলুর বলদ – বলদের মতো নীরবে পরিশ্রম করে এমন চিন্তাশক্তিহীন ব্যক্তি। একটানা খাটুনি
কষ্টেসৃষ্টে – বহু কষ্টে, কোনো রকমে
কড়ায় গন্ডায়/গণ্ডায় – নিখুঁত হিসাবমতে, সম্পূর্ণ, পুরোপুরি
কড়ি গোনা – কর্মহীন অবসর যাপন করা (শাব্দিক অর্থ:- কোনো কাজ না থাকায় শুয়ে শুয়ে ছাদের কড়িকাঠ গুনে সময় কাটানো)
কংস মামা – নির্মম আত্মীয়
কাকতালীয় – পরস্পর সম্বন্ধহীন দুটি ঘটনা একত্রে ঘটেছে এমন
কাকতালীয় ব্যাপার – কার্যকারণহীন ঘটনা
কাকনিদ্রা, কাকতন্দ্রা – (কাকের ঘুমের মতো) সতর্ক ও অগভীর ঘুম, কপট ঘুম
কাকভূশণ্ডি – বয়োবৃদ্ধ অভিজ্ঞ ব্যক্তি। ভূশণ্ডি কাকের মতো দীর্ঘজীবী
কাকভোর – খুব সকাল
কাকস্নান – (কাকের মতো কেবল মাথা ভিজিয়ে) অল্প জলে স্নান
কাগজে কলমে – লিখিতভাবে
কাগুজে – কেবল কাগজেই আছে কিন্তু বাস্তবে অস্তিত্ব নেই এমন (কাগুজে বাঘ)
কাঁচকলা – কিছুই না, লবডঙ্কা
কাঁচা কাজ – অপটু হাতের কাজ। বোকামি
কাঁচা ঘুম – অপূর্ণ ঘুম, ঘুমের ঘোর কাটেনি এমন অবস্থা
কাঁচা চুল – পাকেনি এমন চুল, কালো চুল
কাঁচা টাকা – বিনা শ্রমে অর্জিত টাকা
কাঁচা ধানে মই দেয়া – তৈরি জিনিস নষ্ট করা
কাঁচা পয়সা – নগদ উপার্জন
কাঁচা বয়স – অপরিণত বয়স, অল্পবয়স
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা – অল্প বয়সে বিগড়ানো, অল্প বয়সেই স্বভাব নষ্ট হওয়া
কাঁচা বুদ্ধি – অপরিণত বুদ্ধি
কাঁচা রসিদ – অস্থায়ী প্রাপ্তিস্বীকারপত্র
কাঁচা লেখা – নিম্নমানের রচনা
কাঁচা হাত – অপক্ব
কাছা-আলগা, কাছাখোলা, কাছা ঢিলা – অসতর্ক, অসাবধান
কাছাধরা – তোষামোদকারী, ধামাধরা
কাছেপিঠে – সন্নিকটে, ধারেকাছে
কাজ দেওয়া – দায়িত্ব প্রদান করা
কাজ দেখা – কাজ পরিচালনা করা। চাকরি খোঁজা
কাজ দেখানো – সর্বদা কর্মব্যস্ততার ভান করা
কাজ বাগানো – উদ্দেশ্য সিদ্ধি হওয়া
কাজ হওয়া – উদ্দেশ্য সিদ্ধি হওয়া
কাঁটা করা – ওজন করা
কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা – ব্যথার উপর ব্যথা দেয়া
কাঁটা তোলা – শত্রু দমন করা
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা – শত্রু দ্বারা শত্রু বিনাশ
কাঁটা দেওয়া – ভয়ে রোমাঞ্চিত বোধ করা, রোমাঞ্চিত বোধ করার ফলে গায়ের লোম খাড়া হওয়া
কাঁটার জ্বালা – অসহ্য দুঃখ
কাঁটা হওয়া – ভয়ে সংকুচিত হওয়া, শিউরে ওঠা
কাঁটায় কাঁটায় – যথাসময়ে, ঠিক সময়ে
কাঁঠালের আমসত্ত্ব – অসম্ভব বস্তু, অসম্ভব ব্যাপার
কাঠের পুতুল – নির্জীব, অসার
কাঁধে নেওয়া – দায়িত্ব গ্রহণ করা (শাব্দিক অর্থ: কাঁধে তুলে নেওয়া)
কানকথা – কানে কানে বলা কথা, গোপন মন্ত্রণা
কানকাটা – নির্লজ্জ, বেহায়া
কান খাড়া করা – একাগ্র হয়ে শোনার চেষ্টা করা, মনোযোগী হওয়া
কান দেওয়া – কর্ণপাত করা, মনঃসংযোগ করা
কানপাতলা – শোনাকথায় প্রভাবিত হয় এমন
কান পাতা – শোনার জন্য উদ্গ্রীব হওয়া। গোপনে শোনা, আড়ি পাতা
কানফাটা – কানের পর্দা ফাটানোর মতো উচ্চ আওয়াজবিশিষ্ট
কানভাঙানি – অন্যের সম্পর্কে কুপরামর্শ দান
কানভাঙানো – কুমন্ত্রণা দেওয়া, গোপনে কারো কাছে অন্যের বিরুদ্ধে বলে দুজনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা
কান ভারী করা – কুপরামর্শ দেওয়া
কান মলা – অপমানিত করা, অপদস্থ করা (শাব্দিক অর্থ:- কর্ণ মর্দন করা)
কানাকড়ি – অতি তুচ্ছ ও মূল্যহীন। অতি নগণ্য পরিমাণ (শাব্দিক অর্থ:- খুঁতযুক্ত কড়ি, ফুটো পয়সা) (এখানে ‘কানা’ শব্দের অর্থ ফুটো বা ছিদ্র)
কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন – যার যে গুণ নেই সে গুণের ভান করা
কানে কানে – চুপিচুপি, গোপনে
কানে খাটো – কানে কম শুনতে পায় এমন ব্যক্তি
কানে তুলো দেয়া – ভ্রুক্ষেপ না করা
কানে তোলা – কোনো কথা উত্থাপন করা
কানে লাগা – শ্রুতিকটু ঠেকা
কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ – কারো সুদিন, কারো দুর্দিন
কাল কাটানো – কাল ক্ষেপণ করা। জীবনযাপন করা
কালনেমির লঙ্কাভাগ – মাত্রাতিরিক্ত আশা করে নিরাশ হওয়া
কালেভদ্রে – কখনো-সখনো, কদাচিৎ
কাশীপ্রাপ্তি – মৃত্যু (শাব্দিক অর্থ:- কাশীতে মৃত্যুবরণ)
কাষ্ঠহাসি – কৃত্রিম হাসি, শুকনো হাসি
কাঁড়ি কাঁড়ি – রাশি রাশি, প্রচুর
কায়দা পাওয়া – বাগে পাওয়া, কাউকে জব্দ করার সুযোগ লাভ করা
কিন্তু কিন্তু করা – আমতা আমতা করা, দ্বিধা করা , সংকোচ করা
কিল খেয়ে কিল চুরি – অপমান সয়ে চুপ থাকা
কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানো – অসম্ভবকে সম্ভব করা
কুনো ব্যাং –ঘরকুনো ব্যক্তি, সীমিত জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি
কুবেরের ধন – কৃপণের ধন
কুম্ভকর্ণের ঘুম/নিদ্রা – যে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা কঠিন, দীর্ঘদিনের আলস্য
কুম্ভীরাশ্রু – মায়াকান্না, কপট সহানুভূতি
কুরুক্ষেত্রের কাণ্ড – মহাকলহ, তুলকালাম
কুল কাঠের আগুন – তীব্র জ্বালা
কুল রাখা – কুলাচার রক্ষা করা
কুলে কালি দেয়া – বংশে কলঙ্ক আনা
কুলোপনা চক্কর – সারহীন আড়ম্বর
কুঁড়ের বাদশাহ – অত্যন্ত অলস (পি-পু-ফি-শু ভুক্তিতে রয়েছে, ‘বাদশা’ বানান রয়েছে)
কুয়োর ব্যাং – ঘরকুনো ব্যক্তি, যে ব্যক্তি বহির্বিশ্বের কোনো খবর রাখে না
কূপমণ্ডূক – ঘরকুনো ব্যক্তি, সীমাবদ্ধ জ্ঞানসম্পন্ন, সংকীর্ণচেতা ব্যক্তি
কূল করা – গতি করা
কৃষ্ণপ্রাপ্তি – মৃত্যু
কেউকেটা – তুচ্ছ বা নগণ্য ব্যক্তি। (ব্যঙ্গ্যার্থে) পদস্থ বা গণ্যমান্য ব্যক্তি
কেঁচে গণ্ডূষ – অসমাপ্ত কাজ পুনরায় সূচনা, নতুন করে আরম্ভ করা
কেঁচে যাওয়া – আয়োজন পণ্ড হওয়া
কেঁচো খুঁড়তে সাপ – সামান্য থেকে অসামান্য পরিস্থিতি
কেটে পড়া – অজ্ঞাতসারে সরে পড়া, পলায়ন করা
কেতাদুরস্ত – বাহ্যিক চালচলনে নিখুঁত, সুশৃঙ্খল, পরিপাটি, রুচিসম্মত
কেতাবি বিদ্যা – বাস্তবতাবর্জিত কেবল বই পড়ে অর্জিত বিদ্যা, পুথিগত বিদ্যা
কেবলা হাকিম – অনভিজ্ঞ
কেমন কেমন – ভালো কি মন্দ ঠিক বোঝা যায় না এমন
কেমন যেন – ঠিক স্বাভাবিক নয় এমন
কেলে কার্তিক – অতি কৃষ্ণকায় ব্যক্তি
কেশাগ্র স্পর্শ করতে না পারা – ধরাছোঁয়ার বাইরে অবস্থান করা
কেষ্টবিষ্টু – (বিদ্রুপে) সম্মানিত ব্যক্তি, হোমরাচোমরা লোক
কোণঠাসা করা – জব্দ করা
কোনো কোনো – মাঝেমাঝে
কোনো না কোনো – যে কোনো উপায়ে
কোমর বাঁধা – কোনো কাজে উঠেপড়ে লাগা, কোনো বিষয়ে দৃঢ়সংকল্প হওয়া
কোম্পানির কাগজ – শেয়ার (share)
কোলে কাঁখে করা – বিশেষ যত্নসহকারে লালন করা
কোলেপিঠে মানুষ করা – লালনপালন করা
কোষ্ঠী কাটা – নিন্দা করা, গালি দেওয়া
ক্যাবলাকান্ত, ক্যাবলারাম – স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি, মূর্খ ব্যক্তি
ক্যাবলাহাসি – বোকা বোকা হাসি
ক্ষমা দেওয়া – ক্ষান্ত বা বিরত হওয়া
খই ফুটা, খই ফোটা – (ধান ভাজার সময় খই ফোটার মতো) মুখ থেকে অনর্গল কথা নিঃসৃত হওয়া
খণ্ডকপাল – ভাঙা কপাল, মন্দ ভাগ্য
খণ্ডকপালে – দুর্ভাগা
খণ্ডপ্রলয় – তুমুল কলহ
খতম করা – হত্যা করা (অন্য অর্থ:- শেষ করা)
খবরদারি – তত্ত্বাবধান
খবর নেওয়া/ লওয়া – তত্ত্বাবধান করা। সংবাদ জানা, খোঁজ নেওয়া
খবর রাখা – খোঁজ রাখা, অবহিত থাকা
খবর হওয়া – কোনো তথ্য বা ঘটনা প্রকাশ পাওয়া। সাড়া পড়ে যাওয়া
খড় দজ্জাল – প্রচণ্ড অত্যাচারী
খয়েরখাঁ – চাটুকার, মোসাহেব, তোষামোদকারী
খাঞ্জা খাঁ – নবাবি চালচলন
খাটো কথা – সামান্য কথা। অনুচ্চস্বরের কথা
খাটো করা – তুচ্ছ বা হেয় করা, অপমানিত করা
খাটো দৃষ্টি – কৃপণতা
খাটো হওয়া – অপমানিত বোধ করা, অপদস্থ হওয়া
খাতা খোলা – ব্যাবসায়িক লেনদেনসংক্রান্ত হিসাব শুরু করা
খাতা লেখা – দৈনিক আয়ব্যয় বা কেনাবেচার বিবরণ খাতায় লিপিবদ্ধ করা
খাপ খাওয়া – সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া। উপযুক্ত হওয়া
খাপ খাওয়ানো – সামঞ্জস্যবিধান করা
খাবি খাওয়া – বিপদ থেকে মুক্তির জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করা
খাল কেটে কুমির আনা – নিজ দোষে বিপদে পড়া
খাস করা – অন্যের অধিকার থেকে ভূসম্পত্তি নিজের অধিকারে আনা
খাস তালুকের প্রজা – খুব অনুগত ব্যক্তি
খাড়া পাহারা – কড়া পাহারা, সতর্ক প্রহরা
খিচুড়ি পাকানো – বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা
খিটিমিটি করা – বাদানুবাদ করা
খিল ধরা – (রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত সৃষ্টির ফলে) অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ হারানো
খুচরা কথা – বাজে কথা, অবান্তর কথা। অল্প জরুরি কথা
খুচরা কাজ – ছোটোখাটো কাজ, সাধারণ কাজ
খুচরা খরচ – অল্প খরচ। বিবিধ খরচ
খুচরা বিক্রি – অল্প পরিমাণ বিক্রি, ভেঙে ভেঙে বিক্রি
খুঁটি গাড়া – শক্ত বা স্থায়ী হয়ে অবস্থান করা
খুঁটির জোর – প্রভাবশালী ব্যক্তির ওপর নির্ভরতা
খুঁটিয়ে দেখা – যত্নসহকারে সব দিক পরীক্ষা করা
খুদে শয়তান – ক্ষুদ্রকায় অথচ অতিমাত্রায় দুষ্ট প্রকৃতির লোক
খুনখুনে – অত্যন্ত বৃদ্ধ
খুন চড়া – খুন চাপা, প্রচণ্ড রেগে যাওয়া। হত্যা করার প্রবৃত্তি হওয়া
খুন চাপা – খুন চড়া, প্রচণ্ড রেগে যাওয়া। হত্যা করার প্রবৃত্তি হওয়া
খেজুরে আলাপ – অবান্তর কথাবার্তা, অকাজের কথা
খোদার খাসি – চিন্তাভাবনাহীন অলস ও হৃষ্টপুষ্ট ব্যক্তি
গঙ্গাপ্রাপ্তি – মৃত্যু (শাব্দিক অর্থ:- গঙ্গানদীর তীরে মৃত্যু)
গঙ্গাযাত্রী – মুমূর্ষু ব্যক্তি
গজকচ্ছপের লড়াই – প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা
গজদন্তমিনারবাসী – কল্পনাবিলাসী
গজভুক্ত কপিত্থবৎ, গজকপিত্থবৎ – অন্তঃসারশূন্য (শাব্দিক অর্থ:- পোকায় খাওয়া ফাঁপা কতবেলের মতো। গজ অর্থ:- ক্ষুদ্র কীটবিশেষ। কপিত্থ অর্থ:- কতবেল)
গজেন্দ্রগমন – হাতির মতো ছন্দময় ও মন্থর গতি, মৃদু মন্থর গমন। আলসেমি
গড্ডলিকা/গড্ডরিকা প্রবাহ – বিচারবিবেচনা না করে অন্যের অন্ধ অনুকরণ, প্রচলিত ধারার অনুগামিতা (গড্ডল অর্থ:- ভেড়া, মেষ। গড্ডলিকা অর্থ:- অগ্রবর্তী ভেড়াকে অনুসরণকারী ভেড়ার পাল)
গণেশ উল্টানো – ফেল মারা
গতর খাটানো – শারীরিক পরিশ্রম করা/করানো
গদাইলশকরি চাল – মৃদু মন্থর গমন। আলসেমি
গন্ডাগন্ডা – প্রচুর, ভূরিভূরি
গন্ডারের চামড়া – গালাগাল বা অপমানসূচক কথা গ্রাহ্য করে না এমন মনোবৃত্তি
গন্ডায় আন্ডা দেয়া – ফাঁকি দেয়া
গন্ডায়গন্ডায় – অনেক, রাশি রাশি, বহুসংখ্যক
গন্ডেপিন্ডে – আকণ্ঠ, গলা পর্যন্ত ঠেসে
গন্ধমাদন বয়ে আনা – প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু আনা
গন্ধর্ব ছুটানো – নির্মমভাবে প্রহার করা
গন্ধর্বপূজা – প্রথমে সমাদর এবং পরে প্রহার করে বিদায় দান
গভীর জলের মাছ – সুচতুর ব্যক্তি
গরম কাপড় – যে কাপড় পরলে শরীর গরম থাকে, পশমি কাপড়
গরম কাল – গ্রীষ্মকাল
গরম খবর – সদ্যপাওয়া সংবাদ, টাটকা খবর
গরমগরম – সদ্য চুলো থেকে নামানো হয়েছে এমন, টাটকা
গরম মসলা – দারুচিনি লবঙ্গ এলাচ প্রভৃতি মসলা
গরিবের ঘোড়া রোগ
গরু খোঁজা
গরুড় শায়ন – পুরাণমতে জন্মের আগে গরুড় যেমন দীর্ঘদিন ডিমের মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন সেইরূপ দীর্ঘনিদ্রা
গর্দান যাওয়া – মাথা কাটা যাওয়া
গর্দান লওয়া – শিরশ্ছেদ করা
গলগ্রহ – অনিচ্ছাসত্ত্বেও যে ব্যক্তির ভরণপোষণের ভার অন্যকে গ্রহণ করতে হয়, পরের উপর বোঝা হয়ে থাকা
গলা কাটা – প্রবঞ্চনা করা
গলাকাটা দাম – অত্যধিক মূল্য, বেশি দাম
গলাগলি – অতিশয় আন্তরিকতাপূর্ণ
গলা চাপা – কণ্ঠস্বর নিচু করা। শ্বাসরোধ করা
গলা ছাড়া – কণ্ঠস্বর উঁচু করা
গলাজল – গভীর সংকট
গলা ধরা – আবেগে কণ্ঠরুদ্ধ হওয়া
গলাধাক্কা – অর্ধচন্দ্র, অপমান করে বিতাড়ন
গলা বসা – (ক্রমাগত জোরে কথা বলা বা ঠান্ডা লাগার ফলে) গলার স্বর বিকৃত হওয়া
গলা বাঁচানো – প্রাণ বাঁচানো
গলাবাজি – চিৎকার, চেঁচামেচি। অসার বক্তৃতা
গলা ভাঙা – গলা বসা দ্রষ্টব্য
গলা সাধা – গানের রেওয়াজ করা
গলায় গলায় – অন্যন্ত ঘনিষ্ঠ
গলায় গলায় ভাব, গলাগলি ভাব – অতিশয় আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক
গলায় গাঁথা – গলগ্রহ হওয়া, অনভিপ্রেত বোঝা হওয়া
গলায় দড়ি – ফাঁসি। ধিক্কারসূচক উক্তি
গলায় লাগা – খাদ্যবস্তু গলায় আটকে দম বন্ধের উপক্রম হওয়া। ওল কচু প্রভৃতি খাওয়ার ফলে গলা চুলকানো
গা করা – গরজ করা, আগ্রহ প্রকাশ করা। মনোযোগ দেওয়া
গা কাঁপা – ভীত হওয়া
গা গতর – সর্বাঙ্গ, সমস্ত দেহ
গা গরম – অল্প জ্বর
গা গুলানো – বমির উদ্রেক হওয়া
গা ঘেঁষা – অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করা। গায়ে পড়ে ভাব জমায় এমন
গাছপাথর – অজানা বয়স হিসাবের নির্দেশক শব্দ
গা ছমছম – ভয়ের অনুভূতিসূচক ভাব
গা-ছাড়া – আগ্রহহীন। ঢিলেঢালা ভাব
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল – প্রাপ্তির পূর্বেই ভোগের আয়োজন
গাছে তুলে মই কাড়া – সাহায্যের আশা দিয়ে সাহায্য না করা
গাছে না উঠতে এক কাঁদি – কাজে অবতীর্ণ হওয়ামাত্র ফল প্রাপ্তির আশা
গা-জুরি করা – গায়ের জোরে কথা বলা, অন্যায় কথা বলা
গা জুড়ানো – ক্লান্তি বা জ্বালাযন্ত্রণা দূর হওয়া। স্বস্তি পাওয়া। বমির উদ্রেক হওয়া, গা-গুলানো
গা জ্বালা করা – ঈর্ষা বা বিরক্তির সৃষ্টি হওয়া
গাঁটের পয়সা – পকেটের টাকা। জমানো টাকা
গা ঢাকা দেওয়া – আত্মগোপন করা, অদৃশ্য হওয়া
গা তোলা – শয্যাত্যাগ করা
গাদ কাটা – ময়লা কাটা, ময়লা দূর করা
গাধার খাটুনি – শ্রমসাধ্য কাজ। পারিশ্রমিকের তুলনায় অতিরিক্ত খাটুনি
গাধার পিটুনি – অপরিমিত ও নির্মম প্রহার
গা ধোয়া – গোসল করা
গাবদাগোবদা – স্থূল ও বেমানান, মোটাসোটা
গা-মোড়া – আড়মোড়া ভাঙা
গালগল্প – মনগড়া কথা, বানানো গল্প বা বর্ণনা
গাল ফোলানো – অভিমান করা
গালে চুনকালি – সামাজিক অন্যায়ের জন্য হেয় প্রতিপন্নকরণ
গা-সওয়া, গা-সহা – সহ্য হওয়া। অভ্যস্ত হয়ে গেছে এমন
গায়ে কাঁটা দেওয়া – রোমাঞ্চের উদ্রেক হওয়া। ভয়ে শিউরে ওঠা
গায়ে দেওয়া – পরিধান করা
গায়ে পড়া – অযাচিতভাবে আলাপ করা, অনধিকার চর্চা করা
গায়েপড়া – উপরপড়া
গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো – কোনো দায়িত্ব গ্রহণ না করা
গায়ে মাখা – গ্রাহ্য করা, আমলে নেওয়া
গায়ে মানে না আপনি মোড়ল – স্বয়ংসিদ্ধ নেতা
গায়ে মাংস/মাস লাগা – স্বাস্থ্য ভালো হওয়া
গায়ের জ্বালা – গাত্রদাহ, ঈর্ষা, হিংসা
গায়ে সওয়া – অভ্যস্ত হওয়া
গায়ে সহা – গায়ে সওয়া দ্রষ্টব্য
গায়েহলুদ – বিয়ের আগে পাত্রপাত্রীর গায়ে হলুদ লেপনের অনুষ্ঠানবিশেষ
গায়ে হাত তোলা – প্রহার করা, মারধর করা
গুণ গাওয়া – প্রশংসা করা
গুবলেট করা – তালগোল পাকিয়ে ফেলা, ভেস্তে দেওয়া, পণ্ড করা
গুমোর ফাঁক – গোপন অভিসন্ধি প্রকাশ। অহমিকা চূর্ণন
গুরুদক্ষিণা – দীক্ষা ও অধ্যয়ন সমাপ্তির পর গুরুকে নিবেদিত উপচার
গুরুমারা বিদ্যা – গুরুর কাছে শেখা যে বিদ্যা গুরুর বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়
গুলি মারা – গুরুত্ব না দেওয়া
গুড়ে বালি – আশায় নৈরাশ্য
গেড়ে বসা – অটল হয়ে বসা, দখল করে বসা
গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না – নিজ দেশে গুণীর কদর নেই
গোকুলের ষাঁড় – বৃন্দাবনের ষাঁড়ের মতো ঘুরে বেড়ায় এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি, ভবঘুরে
গোদের উপর বিষফোঁড়া – যন্ত্রণার উপর যন্ত্রণা
গোঁফখেজুরে – অত্যন্ত অলস (গোঁফের ওপরে পড়ে থাকা খেজুরটিও হাতে নিয়ে মুখে পুরতে নারাজ এমন অলস ব্যক্তি)
গোবরগণেশ – ব্যক্তিত্বহীন ও নির্বোধ (গোবরের তৈরি গণেশমূর্তির মতো অকর্মণ্য)
গোবরে পদ্মফুল – নীচ কুলে মহৎ ব্যক্তি
গোবৈদ্য – হাতুড়ে ডাক্তার। আনাড়ি চিকিৎসক (আক্ষরিক অর্থ পশুচিকিৎসক)
গোমূর্খ – গোরুর মতো নির্বোধ। অক্ষর পরিচয়হীন
গোরু মেরে জুতা দান – বড়ো ক্ষতি করে সামান্য পূরণ
গোল্লায় যাওয়া – অধঃপাতে যাওয়া
গোড়া কেটে আগায় জল ঢালা – জ্ঞাতসারে ক্ষতি করে পরে সংশোধনের প্রয়াস
গোঁয়ারগোবিন্দ – হঠকারী, কাণ্ডজ্ঞানহীন, একগুঁয়ে ও দুঃসাহসী
গোঁয়ারতুমি – গোঁয়ারের ভাব বা কাজ, হঠকারিতা
গৌরচন্দ্রিকা – মুখবন্ধ, ভূমিকা। ভণিতা
গৌরী সেন – চাওয়ামাত্র টাকা দেয় এবং হিসাব নেয় না এমন ব্যক্তি (লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন)। সরকার, government
ঘটিরাম – অপদার্থ, নির্বোধ ব্যক্তি, অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য কর্মী
ঘণ্টা পড়া – ঘণ্টা পিটিয়ে সময় ঘোষণা করা
ঘরকন্না – সাংসারিক কাজকর্ম
ঘর করা – সংসারধর্ম পালন করা। পত্নীরূপে দায়িত্ব পালন করা
ঘর কাটা – ছক কাটা
ঘরকুনো – বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্কশূন্য, অমিশুক, অসামাজিক
ঘর খোঁজা – বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র বা পাত্রীর সন্ধান করা
ঘর গড়া – সংসার করা, বিবাহ করা
ঘর ঘেঁষা – ঘরকুনো, অসামাজিক
ঘরছাড়া – গৃহত্যাগী, সন্ন্যাসী
ঘর জ্বালানো পর ভুলানো – আত্মীয়ের কষ্টদায়ক অথচ অপরের প্রিয়
ঘর তোলা – ঘর তৈরি করা
ঘর বসানো – বসতিস্থাপন করা
ঘর বাঁধা – সংসার পাতা। গৃহনির্মাণ করা, বসতিস্থাপন করা
ঘর ভাঙা/ভাঙানো – বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো
ঘরভেদী বিভীষণ – কপট স্বজন
ঘরমুখী, ঘরমুখো – গৃহাসক্ত
ঘরসংসার করা – সংসারধর্ম পালন করা
ঘরে আগুন দেওয়া – সংসারে বিবাদ বাঁধানো
ঘরের কথা – পারিবারিক কথা
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো
ঘরের ঢেঁকি কুমির – বলিষ্ঠ ও ভোজনপটু অথচ অলস
ঘরের লক্ষ্মী – লক্ষ্মীরূপ বধূ বা স্ত্রী
ঘরের শত্রু বিভীষণ – যে গৃহবিবাদ করে
ঘা করা – ক্ষত সৃষ্টি করা
ঘা খাওয়া – কষ্ট পাওয়া
ঘাগু – সেয়ানা, সুচতুর, ঝানু। ভুক্তভোগী
ঘাট মানা – ত্রুটি স্বীকার করে নেওয়া
ঘাট মারা – শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গোপনে নৌপথে আমদানি-রপ্তানি করা
ঘাটের মরা – অতি বৃদ্ধ
ঘানি টানা – কারাদণ্ড ভোগ করা। অতিকষ্টে গতানুগতিক জীবনধারণ করা
ঘাপটি মারা – ওত পেতে থাকা, লুকিয়ে বসে থাকা
ঘাম ছোটা – ঘাম নিঃসৃত হওয়া
ঘাম ঝরানো – কায়িক শ্রম করা
ঘাস কাটা – বেকার বসে থাকা
ঘাড়ধাক্কা – অপমান করে বিতাড়ন, গলাধাক্কা, অর্ধচন্দ্র
ঘাড় নাড়া – ঘাড় নেড়ে সম্মতি বা অসম্মতি প্রকাশ করা
ঘাড় পাতা – দায়িত্ব গ্রহণ করতে সম্মত হওয়া
ঘাড় ভাঙা – খরচ করতে বাধ্য করা। অন্যের ওপর জোর খাটিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা
ঘাড়েগর্দানে – অত্যন্ত স্থূল
ঘুঘু চরানো – সর্বনাশ করা, ধ্বংস করা
ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখোনি – বিপন্ন করার ভীতি প্রদর্শন
ঘুঁটি চালা – কোনো কাজ উদ্ধারের জন্য সুচিন্তিতভাবে পা ফেলা, কৌশল খাটানো
ঘুঁটেকুড়ানি, ঘুঁটেকুড়ুনি – সহায়সম্বলহীনা
ঘুম ধরা – নিদ্রালু হওয়া
ঘুম পাওয়া – নিদ্রালু হওয়া
ঘুরে পড়া – শারীরিক দুর্বলতা বা অসুস্থতার কারণে হঠাৎ টাল খেয়ে পড়া
ঘেউ ঘেউ – নিষ্ফল চিৎকার
ঘোঁট পাকানো – জটলা পাকানো। উত্তেজনা সৃষ্টি করা
ঘোর লাগা – ধাঁধা লাগা
ঘোল খাওয়া – নাকাল হওয়া
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া – মধ্যবর্তীকে অতিক্রম করে কাজ করা
ঘোড়ার ঘাস কাটা – বাজে কাজ করা, অযথা সময় ব্যয় করা
ঘোড়ার ডিম – অলীক বস্তু, অসার বা অসম্ভব বস্তু, কিছুই না
ঘোড়ারোগ – সাধ্যাতীত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করার প্রবৃত্তি
চক্কর খাওয়া – মাথা পাক দিয়ে ওঠা
চক্কর মারা – ঘোরা
চক্ষু কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন – নিঃসন্দেহ হওয়া
চক্ষু চড়কগাছ – বিস্ময়ে চোখ বড় হওয়া
চক্ষুদান করা – চুরি করা
চক্ষুলজ্জা – লোকলজ্জা
চক্ষুশূল – দেখলে বিরক্তিবোধ হয় এমন ব্যক্তি
চক্ষুস্থির – অত্যধিক বিস্ময়জনিত হতবুদ্ধিতা
চক্ষের পুতলি – আদরের ধন
চট করে – একটুও দেরি না করে
চটকা ভাঙা – ঘুমের আবেশ কেটে যাওয়া
চব্বিশ ঘণ্টা – সারাদিনরাত ধরে, অনবরত
চমক ভাঙা – সংবিৎ ফিরে পাওয়া
চরকি ঘোরা – অবিরাম কাজ করা। ঘুরে বেড়ানো
চরকি ঘোরানো – কাউকে অনর্থক ঘুরিয়ে হয়রান করা
চরিত্র খোয়ানো – অসচ্চরিত্র হওয়া
চরিত্রদোষ – অসচ্চরিত্রতা, লাম্পট্য
চশমখোর – চক্ষুলজ্জাহীন (চশম অর্থ হলো চোখ, চক্ষু, আঁখি)
চষে বেড়ানো – তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়ানো। নানা স্থানে ঘুরে বেড়ানো
চড়াই-উতরাই – উন্নতি ও অবনতি
চড়ুকে হাসি – কৃত্রিম হাসি। অট্টহাসি
চাগাড় দেওয়া – উত্তেজিত হয়ে ওঠা। মাথা চাড়া দেওয়া, বেড়ে ওঠা
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা – স্বার্থপর
চাটি বাটি তোলা – ভিটামাটি ছেড়ে চলে যাওয়া
চাঁদকপালি, চাঁদকপালে – ভাগ্যবান
চাঁদ হাতে পাওয়া – আশাতীত দুর্লভ বস্তু পাওয়া
চাঁদের হাট – প্রিয়জনের সমাগম। আনন্দের প্রাচুর্য
চাপা পড়া – বিস্মৃত হওয়া (কথা চাপা পড়া)। আহত হওয়া (গাড়ি চাপা পড়া)। নিবৃত্ত হওয়া (গুজব চাপা পড়া)
চামচিকের লাথি
চারচোখের মিলন – পরস্পরের দৃষ্টিপাত
চাল কমানো – ব্যয় সংকোচ করা, জীবনযাত্রার ব্যয় হ্রাস করা
চাল চালা – ফন্দি খাটানো, কৌশল প্রয়োগ করা
চালচুলাহীন, চালচুলোহীন – আহার-বাসস্থানের ব্যবস্থা নেই এমন, নিঃস্ব
চাল না চুলো, ঢেঁকি না কুলো – নিতান্ত নিঃস্ব
চাল বাড়ানো – জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ানো
চালমাত – কার্যোদ্ধার
চাল মারা – বড়াই করা। ফাঁকি দেওয়া, চালাকি করা
চালু মাল – ধূর্ত ব্যক্তি
চিকা মারা – দেওয়ালে লিখে বিজ্ঞাপিত করা, ছাপ মারা
চিত্তপুত্তলি, চিত্তপুত্তলিকা – পরম স্নেহের ধন
চিত্রগুপ্তের খাতা – যে খাতায় সবকিছু পাওয়া যায়
চিনির পুতুল – শ্রমকাতুরে
চিনির বলদ – ভারবাহী কিন্তু ফল লাভের অংশীদার নয়, যে ব্যক্তি অন্যের সুখের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে কিন্তু নিজে সুখ ভোগ করতে পারে না
চিবিয়ে কথা বলা – মুখ অল্প ফাঁক করে কথা বলা। বক্তব্য স্পষ্ট না করে কথা বলা
চিমটি কাটা – কটাক্ষ করা
চিরুনিতল্লাসি – তন্নতন্ন করে সন্ধান
চিড়েচ্যাপটা – নাস্তানাবুদ
চুনকালি দেওয়া – কলঙ্ক দেয়া
চুনাপুঁটি, চুনোপুঁটি – গুরুত্বহীন ব্যক্তি, নগণ্য লোক
চুল পাকানো – অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা
চুলাচুলি – কলহবিবাদ
চুলায় যাওয়া, চুলোয় যাওয়া – গোল্লায় যাওয়া
চেতন পাওয়া – জাগ্রত হওয়া, টের পাওয়া
চোখ ওঠা – চোখের প্রদাহজনিত ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হওয়া
চোখ ওলটানো – অকৃতজ্ঞতার ভাব প্রকাশ করা
চোখ কপালে তোলা – বিস্মিত হওয়া
চোখ খাওয়া – দৃষ্টিশক্তি হারানো
চোখ খোলা – জেগে ওঠা
চোখ ঘুরানো/ঘোরানো – রেগে তাকানো
চোখ ছলছল করা – অশ্রুসিক্ত হওয়া
চোখ ছানাবড়া – ভয় বা বিস্ময়জনিত চোখের স্ফীতি
চোখ ঝলসানো – তীব্র আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে ওঠা। রূপে মুগ্ধ হওয়া
চোখ ঝাঁ ঝাঁ করা – চোখ ঝলসানো দ্রষ্টব্য
চোখ টাটানো – চোখে বেদনা অনুভব করা। অন্যের শ্রীবৃদ্ধিতে ঈর্ষান্বিত হওয়া
চোখ টেপা – চোখ দিয়ে ইঙ্গিত করা
চোখ ঠারা – চোখ কুঁচকে ইশারা করা
চোখ দেওয়া – ঈর্ষার দৃষ্টিতে তাকানো। কুনজর দেওয়া
চোখ নাচা – চোখের পাতা স্পন্দিত হওয়া
চোখ পড়া – মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়া। (অসাধু উদ্দেশ্যে) কোনো কিছুর প্রতি নজর পড়া
চোখ পাকানো – ক্রুদ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করা, রেগে তাকানো
চোখ ফোটা – প্রকৃত অবস্থা জানতে পারা
চোখ বুলানো/বোলানো – মনোযোগ না দিয়ে দ্রুত পড়া
চোখ বোজা – মৃত্যুবরণ করা। আমলে না আনা
চোখ মটকানো – চোখ টিপে ইঙ্গিত করা
চোখ মারা – এক চোখ বন্ধ করে অশালীন ইঙ্গিত করা
চোখ রাখা – তত্ত্বাবধান করা। সতর্ক থাকা। মনোযোগী হওয়া
চোখ রাঙানো – রেগে কোনো কিছুর দিকে তাকানো। ভীতি প্রদর্শন করা
চোখা কথা – তীব্র বাক্য, কটু কথা
চোখে চোখে কথা – চোখের ইশারায় পরস্পর ভাববিনিময়
চোখে চোখে রাখা – সতর্ক পাহারায় রাখা
চোখে ঠুলি দেওয়া – দেখেও না দেখার ভান করা, উদাসীন থাকা
চোখে ধরা – পছন্দ হওয়া, মনে রেখাপাত করা
চোখে ধুলো দেওয়া – প্রকৃত তথ্য গোপন করে প্রতারণা করা
চোখের দেখা – ক্ষণিকের তরে দেখা
চোখের নেশা – কেবল চোখে দেখার বাসনা, রূপের মোহ
চোখের পর্দা, চোখের চামড়া – চক্ষুলজ্জা (আক্ষরিক অর্থ চোখের পাতা)
চোখের পলক – নিমেষ, ক্ষণকাল
চোখের পাতা – চোখের ওপরের চামড়া। লজ্জা
চোখের বালি – শত্রু, চক্ষুশূল, অপ্রিয় ব্যক্তি
চোখের ভুল – দেখার ভুল
চোখের মণি – অত্যন্ত প্রিয় বস্তু
চোখের মাথা খাওয়া – দৃষ্টিশক্তি হারানো
চোখে সরষেফুল দেখা – বিপদে পড়ে দিশেহারা হওয়া
চোরাবালি – অদৃশ্য বিপদাশঙ্কা
চোরের ওপর বাটপাড়ি – চোরের সঙ্গে প্রতারণা
চোয়াল ধরা – মাড়ি আটকে যাওয়ার কারণে কথা বলতে না পারা
চৌকাঠ না মাড়ানো – সম্পর্ক ছিন্ন করা
চৌকি দেওয়া – পাহারা দেওয়া
ছক কাটা – কোনো কাজ করার আগে কর্মপরিকল্পনা স্থির করে নেওয়া
ছকড়া-নকড়া – তুচ্ছতাচ্ছিল্য। বিশৃঙ্খল
ছক্কাপাঞ্জা করা – বড়াই করা। প্রতারণা করা
ছপ্পর ফুঁড়ে – অপ্রত্যাশিতভাবে (ছপ্পর = ছাদ, চাল)
ছলকে পড়া – (তরল পদার্থ) উপচে পড়া
ছাই কপালে – ভাগ্যহীন, দুর্ভাগা
ছাইচাপা আগুন – সুপ্ত প্রতিভা, গোপন গুণ
ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলো – সামান্যের বিশেষ প্রয়োজন
ছাতা ধরা – আশ্রয় দেওয়া
ছাতাধরা – ছত্রাকযুক্ত
ছাতি পেটা – বুক চাপড়ানো (ছাতি = বুকের পাটা। সাহস)
ছাঁদনাতলা – বিবাহের মণ্ডপ
ছা-পোষা – অত্যন্ত গরিব। নিরীহ ব্যক্তি
ছারখার হওয়া – ধ্বংস হওয়া
ছাড়া ছাড়া – ফাঁক ফাঁক। অসংলগ্ন। দায়িত্বহীন
ছায়া মাড়ানো – সংস্রব রাখা
ছিনিমিনি খেলা – নষ্ট করা
ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা – সামান্য স্বার্থে দুর্নাম অর্জন
ছুঁচোর কেত্তন – অবিরাম কলহ
ছেঁকে ধরা – ঘিরে ধরা, চারদিক থেকে ব্যতিব্যস্ত করা
ছেলেখেলা – অকিঞ্চিৎকর কাজ, সহজসাধ্য কাজ
ছেলেবেলা – বাল্যকাল, ছোটোবেলা
ছেলেমানুষি – বালকসুলভ আচরণ
ছেলের হাতের মোয়া – সহজলভ্য বস্তু
ছেঁড়া চুলে খোঁপা বাঁধা – পরকে আপন করার চেষ্টা
জগদ্দল পাথর – গুরুভার
জগাখিচুড়ি পাকানো – গোলমাল বাধানো
জট পাকানো – তালগোল পাকিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়া, জট বাঁধা
জট বাঁধা – তালগোল পাকিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়া, জট পাকানো
জল করা – ক্রোধ প্রশমিত করা
জল ভাঙা – সন্তান প্রসবের সময় গর্ভিণীর গর্ভাশয় থেকে পানি বের হওয়া
জল হওয়া – সহজবোধ্য হওয়া। শান্ত হওয়া
জলাঞ্জলি দেওয়া – বিসর্জন দেয়া
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ – উভয়সংকট
জড়ভরত – জড়বুদ্ধি ও কর্মবিমুখ ব্যক্তি। অকর্মণ্য, অকেজো
জাত খাওয়া – জাত খোয়ানো। ধর্মচ্যুত করা। সতীত্ব নাশ করা
জাত খোয়ানো – অন্য ধর্ম বা কুলে বিবাহের কারণে সামাজিক শ্রেণি বা বর্ণ থেকে বিচ্যুত হওয়া
জাতভাই – একই শ্রেণি বা পেশার মানুষ। স্বজাতীয় বা সমগোত্রীয়
জাত মারা – জাতিচ্যুত করা। সতীত্বনাশ করা
জাত যাওয়া – জাতিচ্যুত হওয়া
জাতশত্রু – আসল শত্রু। আজন্ম শত্রু। অনেক শত্রু জন্মেছে এমন
জাতে ওঠা – মর্যাদালাভের আশায় কল্পিত অভিজাত সমাজের একজন হয়ে ওঠা
জাতে তোলা – জাত বা শ্রেণিতে স্থান দেওয়া
জাদু করা – সম্মোহিত করা, মোহাবিষ্ট করা
জাবর কাটা – বারবার একই কথা বলা, রোমন্থন করা
জাল করা – প্রতারণার উদ্দেশ্যে নকল জিনিস তৈরি করা
জাল ছেঁড়া – বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া
জাহান্নামে যাওয়া – গোল্লায় যাওয়া
জিব কাটা – লজ্জায় দাঁত দিয়ে জিব চেপে ধরা
জিলাপির প্যাঁচ – কুটিলতা
জুটি বাঁধা – জোড় বাঁধা
জুতা খাওয়া – অপমানিত হওয়া
জের টানা – পূর্বের কৃতকর্মের ফল ভোগ করা
জোগাড় দেওয়া – অন্যের কাজে সহায়তা করা
জোগাড়যন্ত্র – বন্দোবস্ত
জোট বাঁধা – দলবদ্ধ হওয়া
জোট ভাঙা – জোট থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া
জোড় খাওয়া – মিলিত হওয়া, সংযোজিত হওয়া
জোড় ভাঙা – যুগলের মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়া
ঝড়ো কাক – দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি
ঝাঁকের কই – একই দলের লোক
ঝাল ঝাড়া – আক্রোশ প্রকাশ করা, ক্রোধ উপশম করা, ঝাল মেটানো
ঝাল মেটানো – আক্রোশ প্রকাশ করা, ক্রোধ উপশম করা, ঝাল ঝাড়া
ঝাড়া হাত পা – ঝামেলাশূন্য
ঝিকুর নড়া – মাথা খারাপ হওয়া (ঝিকুর = মস্তিষ্ক, মগজ)
ঝুঁকি সামলানো – যথাযথভাবে গুরুদায়িত্ব সম্পাদন করা
ঝোপ বুঝে কোপ মারা – সুযোগ মত কাজ করা
টক্কর দেওয়া – পাল্লা দেওয়া, প্রতিযোগিতা করা
টনক নড়া – চৈতন্যোদয় হওয়া, হুঁশ হওয়া
টাকা উড়ানো/ওড়ানো – অর্থ অপব্যয় করা
টাকা করা – টাকা উপার্জন করা। টাকা জমানো
টাকা খাওয়া – ঘুস খাওয়া
টাকা তোলা – চাঁদা তোলা
টাকা ভাঙানো – খুচরা করা
টাকা মারা – অন্যের টাকা আত্মসাৎ করা
টাকার আন্ডিল – বিপুল ধনের অধিকারী ব্যক্তি
টাকার কুমির – বিত্তশালী ব্যক্তি
টাকার গরম – ধনসম্পদের অহংকার
টাকার শ্রাদ্ধ – অর্থের অপচয়
টান দেওয়া – আকর্ষণ করা। রেখা টানা, আঁচড় কাটা
টান ধরা – শ্বাসকষ্ট হওয়া। শুকাতে আরম্ভ করা
টানাপোড়েন – উভয়সংকট, দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থা
টাল সামলানো – ধাক্কা সামলে ওঠা
টিকটিক করা – খিটখিট করা, সারাক্ষণ দোষ খোঁজা
টিকে থাকা – বেঁচে থাকা
টিকে যাওয়া – মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পাওয়া
টিপে দেওয়া – গোপনে সতর্ক করা। শিখিয়ে দেওয়া
টিপ্পনী কাটা – ফোড়ন কাটা
টীকাভাষ্য – দীর্ঘ আলোচনা
টু দেওয়া – সাড়া দেওয়া, নিজের অস্তিত্ব জ্ঞাপন করা
টুলো পণ্ডিত – (অবজ্ঞাসূচক) টোলের শিক্ষক, কেতাবি বিদ্যায় শিক্ষিত হলেও ব্যাবহারিক জগতে অনভিজ্ঞ ব্যক্তি
টেক্কা দেওয়া/মারা – প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা, পাল্লা দেওয়া
টোটো কোম্পানির ম্যানেজার – ভবঘুরে
টোপ ফেলা – ফাঁদ পাতা
ঠক বাছতে গাঁ উজাড় – ভালো মানুষের অভাব
ঠাঁই নাড়া – বাসস্থান বদল করা
ঠাট বজায় রাখা – অভাব চাপা রাখা
ঠুঁটো জগন্নাথ – শক্তি থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ করতে অক্ষম এমন, অকর্মণ্য
ঠেকে শেখা – দায়ে পড়ে কোনো বিষয়ে শিক্ষালাভ করা
ঠোঁট ওলটানো – অবজ্ঞা করা, উপেক্ষা করা
ঠোঁটকাটা – স্পষ্টভাষী। নির্লজ্জ
ঠোঁট ফোলানো – অভিমান করা
ঠ্যালামারা কথা – বক্রোক্তি
ঠ্যালার নাম বাবাজী – চাপ পড়লেই কাবু
ডঙ্কা পেটা – সগৌরবে ঘোষণা করা, দম্ভ প্রকাশ করা
ডাক ছাড়া/পাড়া – বারবার ডাকা, উচ্চস্বরে ডাকা
ডাক বাড়া – নিলামের ডাকে টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়া
ডাকাবুকা, ডাকাবুকো – দুরন্ত, নির্ভীক
ডাকে ওঠা – নষ্ট হওয়া
ডান হাতের ব্যাপার – খাওয়া, ভোজন
ডামাডোল – গোলযোগ, বিশৃঙ্খলা
ডিম পাড়া – কালক্ষেপণ করা
ডিমে তা দেওয়া – অলসভাবে দিন যাপন করা
ডুব দেওয়া/মারা – আত্মগোপন করা, নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া
ডুবে ডুবে জল খাওয়া – গোপনে কাজ করা
ডুমুরের ফুল – দেখা মেলে না এমন দুর্লভ বস্তু, বিরল বস্তু, অমাবস্যার চাঁদ
ঢক্কাধ্বনি, ঢক্কানাদ, ঢক্কানিনাদ – উচ্চ ও গর্বিত কণ্ঠে ঘোষণা
ঢলাঢলি – গায়েপড়া ভাব, অতিরিক্ত মাখামাখি
ঢাক করা – ঢাক পিটিয়ে প্রচার করা
ঢাকঢাক গুড়গুড় – কোনো কথা চেপে রাখার চেষ্টা। গোপন করার প্রবণতা
ঢাকঢোল পেটা/পেটানো – সাধারণ্যে প্রচার করা
ঢাক পেটা/পেটানো – কোনো কথা ব্যাপকভাবে প্রচার করা
ঢাক বাজানো – সর্বত্র প্রচার করা
ঢাকে কাঠি দেওয়া – ব্যাপকভাবে প্রচার করা
ঢাকে কাঠি পড়া – সূচনা হওয়া
ঢাকের কাঠি – নিত্যসঙ্গী, মোসাহেব, তোষামুদে, লেজুরবৃত্তি
ঢাকের বাঁয়া – সঙ্গে থাকে কিন্তু কাজে আসে না এমন। অনাবশ্যক সঙ্গী
ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার – যোগ্যতা বা ক্ষমতাহীনের আড়ম্বর
ঢিমাতেতালা, ঢিমেতেতালা – উদ্যমহীনতা, অতিশয় মন্থর গতি
ঢুঁ দেওয়া – শিং বা মাথা দিয়ে গুঁতো দেওয়া
ঢু মারা – কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া অল্প সময়ের জন্য কোথাও যাওয়া
ঢেঁকি গেলা – গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করতে বাধ্য হওয়া
ঢেঁকির কচকচি – কলহ
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে – সহজে মন্দভাগ্যের পরিবর্তন হয় না এই অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত প্রবাদ
ঢোক গেলা – গেলার ভঙ্গি সহকারে অসহায়ত্ব প্রকাশ করা। ইতস্তত করা
ঢোল পেটা – ঢোল পিটিয়ে প্রচার করা
তক্কেতক্কে – অপেক্ষায়, সুযোগের সন্ধানে। সতর্কভাবে
ত-খরচ – আনুষঙ্গিক বিবিধ খরচ। বজে খরচ
তত্ত্ব করা – খোঁজখবর নেওয়া। লোকাচার অনুযায়ী কুটুমবাড়িতে উপহার পাঠানো
তলে তলে – গোপনে, আড়ালে
তাইরে নাইরে – দ্বিধাপ্রকাশ। কালক্ষেপণ
তাক লাগা – আশ্চর্য হওয়া
তামার বিষ – অর্থের কুপ্রভাব
তাল করা – বায়না ধরা। জড়ো করা, একত্র করা
তাল কাটা – ছন্দপতন হওয়া। রেশ কাটা
তালকানা – কাণ্ডজ্ঞানশূন্য
তাল ঠোকা – স্বীয় বাহু বা ঊরুতে চপেটাঘাত করে আস্ফালন প্রকাশ ও প্রতিদ্বন্দ্বীকে আহ্বান করা
তাল তাল – রাশি রাশি, স্তূপীকৃত
তাল দেওয়া – আগ বাড়িয়ে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দেওয়া
তাল পড়া – পিঠে কিল পড়া
তাল পাকানো, তালগোল পাকানো – জটিল অবস্থা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, গুলিয়ে ফেলা
তালপাতার সেপাই – লম্বা ও অত্যন্ত কৃশ ব্যক্তি, অতিশয় রোগা ও দুর্বল ব্যক্তি
তাল রাখা – অন্যের সঙ্গে নিজের কাজের সঙ্গতি রক্ষা করা
তাসের ঘর – অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী ও ভঙ্গুর
তিক্ত অভিজ্ঞতা – সুখকর নয় এমন বা কষ্টকর অভিজ্ঞতা
তিন সত্য – তিনবার সত্যের শপথ
তিনসন্ধ্যা – সকাল দুপুর ও সন্ধ্যা এই তিনবেলা
তিলকে তাল করা – অতিরঞ্জিত করা
তিল তিল করে, তিলে তিলে – একটু একটু করে, অল্প অল্প করে
তীর্থের কাক, তীর্থকাক, তীর্থবায়স – অনুগ্রহের জন্য প্রতীক্ষমাণ ব্যক্তি, সাগ্রহে প্রতীক্ষাকারী
তুর্কি নাচ/নাচন – অন্যের নির্দেশে চলার ফলে বিপর্যস্ত অবস্থা, নাজেহাল অবস্থা
তুলসীবনের বাঘ – সাধুরূপে পরিচিত অসাধু ব্যক্তি, ভণ্ড
তুলাধুনা করা (একসাথে) – প্রবল তিরস্কার বা ভর্ৎসনা করা। প্রচণ্ড প্রহার করা
তুলারাম খেলারাম – দুশ্চিন্তাজনিত অতিশয় অস্বস্তি, উদ্বেগ
তুষের আগুন, তুষানল – (যা সহজে নেভে না) দীর্ঘস্থায়ী অন্তর্জ্বালা বা দুঃখ
তুড়ি মারা – তুচ্ছজ্ঞান করা, অগ্রাহ্য করা
তেলও কম ভাজাও মুচমুচে – অল্প উপকরণে ভালো ব্যবস্থা
তেল দেওয়া – তোষামোদ করা
তেল নুন লাকড়ি – মোলিক প্রয়োজন
তেল মাখানো – হীনভাবে তোষামোদ করা
তেলে বেগুনে জ্বলা – ক্রোধে অগ্নিশর্মা হওয়া
তেলো মাথায় তেল দেওয়া – যার আছে তাকে আরো দেয়া
তেলো হাঁড়ি – গম্ভীর
তোতাবৃত্তি – টিয়াপাখির মতো অন্ধ অনুকরণের স্বভাব
ত্রিশঙ্কু দশা – অনিশ্চিত অবস্থা, দোটানা অবস্থা
থতমত খাওয়া – কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া
থ বনে যাওয়া – স্বম্ভিত হওয়া (বনা = পরিণত হওয়া। বনা > বনে, এখানে বন বা জঙ্গল অর্থে নয়)
থানা পুলিশ করা – নালিশ করা
থাবা দেওয়া – থাবা মারা। ছিনিয়ে নেওয়া, ছোঁ মারা
থাবা মারা – থাবা দেওয়া। ছিনিয়ে নেওয়া, ছোঁ মারা
থার্ড ক্লাস – নিম্নমানের। নিম্নমানের বস্তু বা বিষয়
দঁকে পড়া – হঠাৎ দুরবস্থায় পড়া
দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার – তুমুল গোলমাল
দক্ষিণহস্ত – প্রধান সহায় (শাব্দিক অর্থ ডান হাত)
দক্ষিণহস্তের ব্যাপার – ভোজন, আহার
দণ্ডমুণ্ডের কর্তা – রাজা
দফা সারা – সর্বনাশ করা
দম টানা – শ্বাস গ্রহণ করা
দম দেওয়া – ঘড়ি প্রভৃতির স্প্রিংয়ে পাক দেওয়া
দম নেওয়া – শ্বাস নেওয়া। বিশ্রাম করে শক্তি সঞ্চয় করা
দম ফাটা – আবেগে চঞ্চল হওয়া
দম ফুরানো – ক্লান্ত হওয়া
দম রাখা – শ্বাস বন্ধ করে থাকা
দর কষা – মূল্য নির্ধারণ করা
দল পাকানো – কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে জোট পাকানো
দশচক্রে ভগবান ভূত – দশ জনের চক্রান্তে ন্যায়কে অন্যায় করা
দশবাই চণ্ডী – কোপনস্বভাব নারী
দশাপ্রাপ্তি – মৃত্যু
দস্তবদস্ত (উচ্চারণ দস্ত-ব-দস্ত) – হাতে হাতে
দহরম-মহরম – অন্তরঙ্গতা, মাখামাখি
দড়ি কাটা/পাকানো – পাট সুতা নাইলন প্রভৃতির আঁশ পাকিয়ে দড়ি তৈরি করা
দড়ি দড়ি – অত্যন্ত রোগা
দাঁও মারা – সুযোগ বুঝে লাভজনক কাজ করা
দা-কুমড়া সম্পর্ক – শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক
দাগ কাটা – মনে রেখাপাত করা
দাগ দেওয়া – চিহ্নিত করা
দাগা দেওয়া – ধোঁকা দেওয়া
দাঁতখিঁচানো – দাঁত বের করে তিরস্কার করা
দাঁত বসানো – জটিল বিষয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারা
দাঁতভাঙা – উচ্চারণ করা কঠিন এমন, দুরুচ্চার্য (দাঁতভাঙা শব্দ)। দর্পচূর্ণকারী (দাঁতভাঙা জবাব)
দাদ তোলা/নেওয়া – প্রতিশোধ গ্রহণ করা
দাঁড়কাকের ময়ূরপুচ্ছ – ছোটো হয়ে বড়োদের অনুকরণের চেস্টা। ভণ্ডামির চিহ্ন
দাঁড়ি টানা – শেষ করা, ইতি টানা
দিন আসা – সুদিন আসা। সুযোগ আসা
দিন কাটা – কালযাপন করা
দিনগত পাপক্ষয় – গতানুগতিক ধারায় কালক্ষেপণ
দিন গোনা – দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহভরে অপেক্ষা করা
দিন ঘনিয়ে আসা – দিন ফুরিয়ে আসা। আয়ু ফুরিয়ে আসা
দিন ফুরানো – আয়ু ফুরিয়ে আসা
দিনে দিনে – ধাপে ধাপে, উত্তরোত্তর
দিবাস্বপ্ন – অবাস্তব কল্পনা
দুই নৌকায় পা দেওয়া – পরস্পরবিরোধী দুই পক্ষের মন রক্ষার চেষ্টা করা
দুকান কাটা – নির্লজ্জ, বেহায়া
দু-চোখের বিষ – অত্যন্ত বিদ্বেষের পাত্র বা বিষয়। শত্রু। চক্ষুশূল
দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা – শত্রুকে সযত্নে লালনপালন করা
দুধ কাটা – দুধ ফেটে যাওয়া
দুধ তোলা – শিশুর পান করা দুধ বমি করে ফেলা
দুধদাঁত – অল্প বয়সে গজানো অস্থায়ী দাঁত
দুধ নামা – দুধের সঞ্চার হওয়া
দুধ ভর করা – দুধের সঞ্চার হওয়া
দুধভাত – অত্যন্ত সহজসাধ্য
দুধেভাতে (থাকা) – পরম আদরযত্নে, ভালোভাবে খেয়ে পরে, সচ্ছল অবস্থায়
দুধের মাছি – সুসময়ের বন্ধু
দুমুখো – স্ববিরোধী ভাবযুক্ত, সুবিধাবাদী (দুমুখো নীতি)
দুমুখো সাপ – দুজনকে দুরকম কথা বলে শত্রুতা সৃষ্টিকারী
দুর ছাই করা – বিরক্তি প্রকাশ করা
দুরমুশ করা – পিটিয়ে শায়েস্তা করা
দু-সন্ধ্যা – দুবেলা, দিনে ও রাতে
দুয়ারে হাতি বাঁধা – ঐশ্বর্যের দম্ভ প্রকাশ করা
দেখে নেওয়া – প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়া
দেঁতো হাসি – কৃত্রিম হাসি
দেহত্যাগ করা – মৃত্যু হওয়া, প্রাণ যাওয়া (প্রাণ যাওয়া ভুক্তিতে রয়েছে)
দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ – খারাপ বংশে ভালো মানুষ
দ্বিতীয় পক্ষ – দ্বিতীয়বার বিবাহ করা পত্নী
ধকল সওয়া – অত্যাচার সহ্য করা, ধাক্কা সওয়া
ধনুর্ভঙ্গ পণ/ ধনুকভাঙা পণ – অতি কঠোর প্রতিজ্ঞা
ধন্বন্তরি – অত্যন্ত দক্ষ চিকিৎসক। রোগ নিরাময়ে অব্যর্থ ওষুধ
ধর লক্ষ্মণ – অতি অনুগত
ধরাকে সরা জ্ঞান করা – সকলকে তুচ্ছ ভাবা
ধরা দেওয়া – আত্মসমর্পণ করা
ধরি মাছ না ছুঁই পানি – কৌশলে কার্যোদ্ধার
ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির – অত্যন্ত ধার্মিক
ধর্মের কল – সত্য
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে – অপকর্ম প্রকাশিত হয়ে পড়েই
ধর্মের ঢাক আপনি বাজে – পাপ কখনো চাপা থাকে না
ধর্মের ষাঁড় – স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি, অকর্মণ্য
ধাক্কা সামলানো – বিপদ কাটানো। উপদ্রব সহ্য করা
ধাত ধরা – সুস্থ সবল হওয়া
ধান কাড়া – ধানখেত চষে আগাছা উৎপাটন করা
ধান কাঁড়া – ধান ছেঁটে চাল থেকে তুষ পৃথক করা
ধান গাছের তক্তা – অস্তিত্ব নেই এমন বস্তু, অলীকবস্তু
ধান ভানতে শিবের গীত – অপ্রাসঙ্গিক কথার অবতারণা
ধামাধরা – চাটুকার, তোষামোদকারী
ধার ধারা – পরোয়া করা
ধীরে সুস্থে – ব্যস্ত না হয়ে, রয়েসয়ে, উত্তেজিত না হয়ে
ধুন্ধুমার কাণ্ড – তুমুল হট্টগোল
ধোপার গাধা – যে অন্যের জিনিস বহন করে অথচ নিজে ভোগ করতে পারে না
নকড়াছকড়া – তুচ্ছজ্ঞান, অবহেলা, তাচ্ছিল্য
নখদর্পণে – সম্পূর্ণ আয়ত্তে, পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান থাকা
নগদ বিদায় – কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পারিশ্রমিক প্রদান
নজর কাড়া – মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারা
নজর দেওয়া – খেয়াল রাখা। ঈর্ষাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকানো
নজর লাগা – (লোকবিশ্বাসমতে) কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি ঈর্ষাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকানোর ফলে ক্ষতি হওয়া
নজরে পড়া – দৃষ্টিগোচর হওয়া। দৃষ্টি আকৃষ্ট হওয়া। পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করা
নজরে রাখা – দৃষ্টিসীমার মধ্যে রাখা। লক্ষ রাখা। মনোযোগ দেওয়া
নতি স্বীকার – পরাজয় স্বীকার
নদের চাঁদ – সুবেশধারী এবং অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তি, সুন্দর ব্যক্তি অথচ অপদার্থ, অহমিকাপূর্ণ নির্গুণ ব্যক্তি (আক্ষরিক অর্থ:- নদিয়ার চাঁদরূপ গৌরবময় ব্যক্তি)
নদের নিমাই – নদের চাঁদ দ্রষ্টব্য
ননির পুতুল – শ্রমবিমুখ, অকর্মণ্য
নবমী দশা – মূর্ছা। মোহ
নবাবপুত্তুর – (ব্যঙ্গার্থে) নবাবের মতো বিলাসী ও আরামপ্রিয় ব্যক্তি
নব্য সম্প্রদায় – যুবক সম্প্রদায়
নমাসে ছমাসে – বহুদিন পরপর, কদাচিৎ
নয়ছয় – অপব্যয়, অপচয়। আর্থিক অনিয়ম
নাক উঁচানো – অবজ্ঞা প্রদর্শন করা, ঘৃণা প্রকাশ করা
নাককাটা – নির্লজ্জ
নাককান কাটা – নির্লজ্জ, বেহায়া
নাককান মলা – দ্বিতীয়বার একই ভুল বা অপরাধ না করার প্রতিজ্ঞা করা
নাক গলানো – অনধিকার চর্চা করা, অন্যের কাজে হস্তক্ষেপ করা
নাক ঝামটা – তিরস্কার
নাক ঝাড়া – নাক পরিষ্কার করা
নাক টেপা – ঘৃণা প্রকাশ করা
নাক ডাকা – ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসপ্রশ্বাসকালে শব্দ করা
নাক তোলা – অবজ্ঞায় নাক কুঞ্চিত করা
নাক ফোঁড়ানো – অলংকার পরার জন্য নাক ছিদ্র করা
নাক বরাবর – সোজা সামনের দিকে
নাক বিঁধানো – নাক ফোঁড়ানো দ্রষ্টব্য
নাক মলা – একই অপরাধ আর না করার প্রতিজ্ঞা করা
নাক সিঁটকানো – ঘৃণায় অবজ্ঞা প্রকাশ করা
নাকানিচুবানি – অত্যন্ত নাজেহাল অবস্থা
নাকিকান্না – মায়াকান্না, কৃত্রিম কান্না
নাকে কাঁদা – নাকি সুরে কাঁদা
নাকে কান্না – নাকি সুরে কান্না। মায়াকান্না
নাকে খত দেওয়া – মাটিতে নাক ঘষে নিজের ভুল বা অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করা
নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো – নিশ্চিত থাকা
নাকেমুখে গোঁজা – তাড়াহুড়ো করে খাওয়া
নাচতে না জানলে উঠোন ভাঙা/বাঁকা – অকর্মণ্য ব্যক্তি কাজে অসফলতার পর অন্যের দোষ দেয়
নাটের গুরু – মূলনায়ক, প্ররোচনাকারী, অকল্যাণের মূল
নাম করা – নাম উল্লেখ করা
নামকরা – বিখ্যাত, নামজাদা
নাম কাটা – তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া
নামকাটা – নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এমন। বহিষ্কৃত
নামকাটা সেপাই – কর্মচ্যুত ব্যক্তি
নামগন্ধ – আভাস
নাম ডাকা – রোল কল করা
নাম ডুবানো/ডোবানো – খ্যাতি নাশ করা
নাম ধরা – উচ্চারণ করে ডাকা (নাম ধরে ডাকা)
নাম নেওয়া – স্মরণ করা
নামমাত্র – অতি সামান্য, যৎকিঞ্চিৎ
নাম রটা – সুখ্যাতি বা কুখ্যাতি প্রচারিত হওয়া
নাম রাখা – নবজাত শিশুর নাম প্রদান করা। সুনাম অক্ষুণ্ন রাখা
নাম লওয়া – সৃষ্টিকর্তার নাম জপ করা, উপাসনা করা
নাম লেখানো – লিপিবদ্ধ করানো
নাম হওয়া – খ্যাতি লাভ করা
নাড়াবুনে – মূর্খ
নাড়িছেঁড়া ধন – গর্ভজাত সন্তান
নাড়িটেপা ডাক্তার – হাতুড়ে চিকিৎসক
নাড়িনক্ষত্র – আদ্যোপান্ত সকল তথ্য
নাড়ি মরা – দীর্ঘদিন ক্রমাগত অপ্রতুল আহারের ফলে ক্ষুধা লোপ পাওয়া
নাড়ির টান – সম্পর্কজনিত ভালোবাসা
নিজের চরকায় তেল দেয়া – অন্যের কাজে মাথা না ঘামিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দেয়া
নিত্যপ্রলয় – অতি গভীর নিদ্রা, সুষুপ্তি
নিমক খাওয়া – অন্যের দ্বারা উপকৃত হওয়া
নিরানব্বইয়ের ধাক্কা – সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি
নিরেট বোকা/ মূর্খ – অত্যন্ত বোকা, গণ্ডমূর্খ
নির্বিকল্প সমাধি – বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধ্যানমগ্নতা
নিশির ডাক – রাতে ঘুমন্ত মানুষকে ডেকে নিয়ে যায় এমন কল্পিত প্রেত
নিষ্কর্মার ঢেঁকি – অত্যন্ত অলস ব্যক্তি
নুন খাওয়া – অন্যের দ্বারা উপকৃত হওয়া
নেই-আঁকড়া – একগুঁয়ে, একরোখা
নেশা করা – মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা
নেশা কাটা – মোহের ঘোর কাটা
পকেট কাটা/মারা – অন্যের পকেট থেকে চুরি করা
পকেট খালি – পকেটে টাকাপয়সা নেই এমন
পগারপার হওয়া – পলায়ন করা
পঞ্চত্বপ্রাপ্ত হওয়া – মারা যাওয়া
পঞ্চত্বপ্রাপ্তি – মৃত্যু
পঞ্চম বাহিনী – যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ যুদ্ধকালে নিজ দেশের বিরুদ্ধে শত্রুকে সহায়তা করে, বিশ্বাসঘাতক, fifth columnist
পঞ্চম স্বর – কোকিলের কূজন
পঞ্চমুখ – মুখর
পট পরিবর্তন – ক্ষমতার দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন
পটোল তোলা – মারা যাওয়া, অক্কা পাওয়া
পত্র করা – লিখিতভাবে বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করা
পত্রপাঠ – পত্র পড়ামাত্র, অবিলম্বে বা তৎক্ষণাৎ
পত্রমুদ্রা – কাগজের মুদ্রা, নোট
পত্র লেখা – চিঠি লেখা
পত্রশ্রেষ্ঠ – বেলগাছ
পথ করা – যাতায়াতের পথ সুগম করা। উপায় চিন্তা করা
পথ চাওয়া – আগমনের প্রতীক্ষা করা, কোনোকিছুর জন্য অপেক্ষা করা
পথ জোড়া – পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, বাধা দেওয়া
পথ দেওয়া – পথ ছাড়া, সরে গিয়ে অন্যের জন্য পথ করে দেওয়া
পথ দেখা – উপায় চিন্তা করা। (ব্যঙ্গার্থে) প্রস্থান করা
পথ দেখানো – উপায় বাতলানো। (ব্যঙ্গার্থে) বিদায় করা
পথ ধরা – নির্দিষ্ট পথে অগ্রসর হওয়া। ঠিক পথে আসা
পথ মাড়ানো – সংস্রবে যাওয়া, সম্পর্ক রাখা
পথে আসা – প্রকৃত পথ অবলম্বন করা। বিরোধিতা ত্যাগ করা। বশীভূত হওয়া
পথে কাঁটা দেওয়া – পথে বাধা সৃষ্টি করা
পথে বসা – সর্বস্বান্ত হওয়া
পথের কাঁটা – এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা
পথের পথিক – অন্য কারো মত বা পথ অবলম্বনকারী
পরলোকপ্রাপ্তি – মৃত্যু
পরশুরামের কুঠার – সর্বসংহারক অস্ত্র
পরের ধনে পোদ্দারি – অন্যের টাকায় বাহাদুরি, পরকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থোদ্ধার
পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা – অন্যের টাকায় বাহাদুরি, পরকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থোদ্ধার
পর্বতপ্রমাণ – পর্বতের মতো বিশাল। রাশীকৃত
পর্বতের মূষিক প্রসব – বিপুল উদ্যোগে তুচ্ছ অর্জন
পশ্চিম দিকে সূর্য ওঠা – অসম্ভব ব্যাপার
পড়া ধরা/নেওয়া – নির্দিষ্ট পাঠ ঠিকমতো শেখা হয়েছে কিনা তা যাচাই করা
পাক করা – রান্না করা, রাঁধা। (ইসলাম ধর্মমতে) পবিত্র করা (নতুন যোগ)
পাক খাওয়া – ঘোরা। প্যাঁচযুক্ত হওয়া
পাক দেওয়া – প্রদক্ষিণ করা, ঘোরা
পাকা ধানে মই দেওয়া – সুসম্পন্ন কাজ পণ্ড করা, বিপুল ক্ষতি করা
পাখিপড়া করা
পাগলা ঘণ্টা – (সচরাচর কারাগারে) বিপদের সংকেতসূচক ঘণ্টাধ্বনি
পাঁচমিশালি – বিবিধ দ্রব্যের সংমিশ্রণে জাত
পাজির পা-ঝাড়া – অত্যন্ত পাজি, পাজির হদ্দ
পাত করা – আহারের জন্য পাত বিছানো
পাত চাটা – অত্যন্ত দরিদ্র
পাততাড়ি গুটানো/গোটানো – কাজ হয়ে যাওয়ার পর নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে সরে পড়া
পাতা করা – আহারের জন্য কলাপাতা বা শালপাতা বিছানো
পাথরে পাঁচ কিল – অত্যন্ত সুদিন, সুখের সময়
পান থেকে চুন খসা – যৎসামান্য ত্রুটি হওয়া
পান দেওয়া – ইস্পাত বা মিশ্রধাতুর তৈরি কোনো পদার্থের ভঙ্গপ্রবণতা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে তপ্ত করার পর তেলে ডুবিয়ে রেখে কঠিনতা দান করা
পান মরা – খাদ মিশ্রণের ফলে সোনা রূপার অলংকারের ওজন হ্রাস পাওয়া
পানি খরচ – জলশৌচ
পানি ভাঙা – প্রসবের পূর্বে জলীয় স্রাব নিঃসৃত হওয়া
পান্তাভাত – অতি তুচ্ছ ব্যাপার
পান্তাভাতে ঘি – অপব্যবহার
পাপের ধন প্রাশ্চিত্তে যায় – অসদুপায়ে অর্জিত ধন নষ্ট হয়, যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
পার করা – পরিত্র্র্র্রাণ করা
পার হওয়া – অপর পারে যাওয়া
পালের গোদা – সর্দার, দলপতি
পাশ কাটানো – এড়িয়ে যাওয়া
পাষাণমূর্তি – পাথরের মূর্তির মতো ভাবলেশহীন
পাড়া মাথায় করা – চিৎকার করে পাড়া সরগরম করা
পাড়ি জমানো/দেওয়া – যাত্রা করা। পার হওয়া
পায়াভারী – পদগর্বে গর্বিত
পায়ে ঠেলা – উপেক্ষা করা
পায়ে পড়া – কাতরভাবে অনুরোধ করা
পায়ে পায়ে – পদে-পদে (পায়ে পায়ে বাধা)। ধীরপদে (পায়ে পায়ে অগ্রসর হওয়া)
পিছনে পড়া – পিছিয়ে পড়া
পিছনে লাগা – অন্যের ক্ষতি করতে সচেষ্ট হওয়া। বিরক্ত করা
পিছিয়ে পড়া – সমান তালে অগ্রসর হতে না পেরে পিছিয়ে আসা
পিছু নেওয়া – পেছনে থেকে অনুসরণ করা
পিঠ চাপড়ানো – প্রশংসা বা উৎসাহিত করে পিঠে মৃদু চাপড় দেওয়া
পিঠটান – প্রস্থান, পলায়ন
পিণ্ডি চটকানো – অমঙ্গল কামনা করে গালাগাল করা, প্রচণ্ড গালাগাল করা
পিত্তি চটা – অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হওয়া
পিত্তি জ্বলা – অত্যন্ত ক্ষুধা বোধ করা। অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হওয়া
পিত্তি রক্ষা / পিত্তরক্ষা – প্রত্যাশিত পরিমাণের তুলনায় নামমাত্র প্রাপ্তি
পিনপতন নীরবতা – একটি পিন মাটিতে পড়লেও শব্দ শোনা যায় এমন নীরবতা, pin drop silence
পি-পু-ফি-শু – অত্যন্ত অলস, কুঁড়ের বাদশা। ঘরে আগুন লেগে পিঠ পুড়তে শুরু করায় অত্যন্ত অলস ব্যক্তির সংক্ষিপ্ত মন্তব্য যার অর্থ ‘পিঠ পুড়ছে ফিরে শুই’
পুকুরচুরি – বড় রকমের চুরি, আগাগোড়া ফাঁকি
পুঁটি মাছের প্রাণ – যা সহজে মরে যায়, ক্ষীণজীবী
পুথিগত বিদ্যা – যে বিদ্যা কেবল পুথিতেই সীমাবদ্ধ
পুথি বাড়ানো – অনাবশ্যক বিবরণ দিয়ে প্রলম্বিত করা
পুরনো কাসুন্দি ঘাটা – অপ্রীতিকর আলোচনা
পেখম ধরা – ঊৎফুল্ল হয়ে ওঠা
পেছনে লাগা – অনুসরণ করা। উত্যক্ত করা। ক্ষতি করার চেষ্টা করা
পেছপা হওয়া – কাজের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসা
পেট আঁটা – কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
পেট কামড়ানো – গোপন বিষয় ফাঁস করার জন্য ব্যস্ত হওয়া
পেট খসা – গর্ভপাত হওয়া
পেট চালানো – জীবনধারণের জন্য আয় করা
পেট নামা – বারবার মলত্যাগ করা, উদরাময় হওয়া
পেট ফাঁপা – বদহজমের কারণে পেটে বায়ু হওয়া
পেটভাতা – মজুরির পরিবর্তে কেবল অন্নের বিনিময়ে চাকরি
পেটমোটা – ভুঁড়িওয়ালা
পেটরোগা – উদরাময় রোগগ্রস্ত
পেটসর্বস্ব – ভোজনবিলাসী, পেটুক
পেট হওয়া – অন্তঃসত্ত্বা হওয়া
পেটে আসা – গর্ভসঞ্চার হওয়া
পেটে থাকা – মনে গোপন থাকা
পেটে ধরা – গর্ভে ধারণ করা
পেটে পেটে – গোপনে
পেটে ভাতে – মজুরির পরিবর্তে কেবল অন্নের বিনিময়ে
পেটের কথা – মনের গোপন কথা
পেটের জ্বালা – ক্ষুধার তাড়না
পেটের দায় – ক্ষুধার তাড়না
পেটের শত্রু – যে সন্তান মায়ের দুঃখের কারণ
পেটে সওয়া – হজম করতে সক্ষম হওয়া
পোঁ ধরা – মোসাহেবি করা
পোশাকি ভদ্রতা – লোকদেখানো ভদ্রতা, ভদ্রতার মুখোশ
পোয়াবারো – পরম সৌভাগ্য, অত্যধিক সুবিধে, সুসময়
প্রকাশ্য দিবালোকে – দিনের বেলায় ও জনসমক্ষে
প্রচ্ছন্ন বেশ – ছদ্মবেশ
প্রজাপতির নির্বন্ধ – (বিবাহবিষয়ে) বিধাতার বিধান
প্রত্যক্ষ প্রমাণ – সাক্ষাৎ প্রমাণ। চাক্ষুষ সাক্ষী
প্রথম প্রথম – শুরুর দিকে, প্রারম্ভে
প্রাণ উড়ে যাওয়া – ভীষণ ভয় পাওয়া
প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়া – অতিশয় কষ্টকর অবস্থায় পড়া
প্রাণকৃষ্ণ – পরম আদরের ব্যক্তি
প্রাণকেন্দ্র – প্রধান বা মূল কেন্দ্র
প্রাণখোলা – সরল, উদাত্ত
প্রাণত্যাগ, প্রাণবিয়োগ – মৃত্যু, মরণ, দেহত্যাগ
প্রাণ থাকা – বেঁচে থাকা, বাঁচা
প্রাণ দেওয়া – লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রাণ উৎসর্গ করা। জীবন বাঁচানো
প্রাণবিসর্জন – মৃত্যুবরণ, দেহত্যাগ
প্রাণ যাওয়া – মৃত্যু হওয়া, দেহত্যাগ করা
প্রাণ লওয়া – হত্যা করা
প্রাণান্ত পরিচ্ছেদ – সীমাহীন পরিশ্রম
প্রাণে মারা – হত্যা করা
ফতো নবাব – সম্বলহীনের বড়লোকিভাব
ফাইল করা – দায়ের করা, রুজু করা
ফাঁক করা – প্রচার করা (গুমোর ফাঁক করা)
ফাঁক পাওয়া – অবসর পাওয়া, সুযোগ পাওয়া
ফাঁকা আওয়াজ – বৃথা আস্ফালন
ফাঁদ পাতা – কারো ক্ষতিসাধনের জন্য চক্রান্তজাল বিস্তার করা
ফাঁদে পা দেয়া – ষড়যন্ত্রে পড়া
ফাঁড়া কাটানো – সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া, প্রাণসংকট কেটে যাওয়া
ফায়দা তোলা – সুযোগসুবিধা নেওয়া
ফুটো পয়সার লড়াই – সামান্য বিষয় নিয়ে বিবাদ (ফুটো পয়সা = মাঝখানে ছিদ্রযুক্ত অধুনালুপ্ত তামার পয়সাবিশেষ)
ফুল তোলা – কাপড়ে ফুলের নকশা করা
ফুল পড়া – প্রসবের পরে গর্ভস্থ ফুল স্খলিত হওয়া
ফুলের আঘাত – সামান্য দুঃখ কষ্ট
ফুলের ঘাঁয়ে মূর্ছা যাওয়া
ফেউ লাগা – পেছনে লেগে থেকে উত্যক্ত করা
ফেকলু পার্টি – কদরহীন লোক
ফেপে ওঠা – ধনবান হওয়া
ফোঁপরদালালি – অতিরিক্ত চালবাজি। অনাহুত ব্যক্তির মাতব্বরী
ফোঁস করা – আকস্মিক ক্রোধপ্রকাশ করা
ফোঁড়ন দেওয়া – টিপ্পনী কাটা
বইয়ের পোকা, বইপোকা – সারাক্ষণ বই পড়া যার নেশা, পড়ুয়া
বক দেখানো – বকের গলা ও মুখের মতো হাত বাঁকিয়ে বিদ্রূপ করা, অশোভন বিদ্রূপ করা
বকধার্মিক – (শিকারের অপেক্ষায় বককে শান্ত স্থির ও ধ্যানমগ্ন তপস্বী মনে হয় বলে) বকের মতো ধার্মিকতার ভান করে এমন, কপট, ভণ্ড
বখে যাওয়া – অধঃপাতে যাওয়া
বগল বাজানো – উল্লাস বা দম্ভ প্রকাশ করা
বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো – বাহিরে আড়ম্বর ভিতরে শূন্য
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে – জীবমাত্রই স্বাভাবিক অবস্থানে সুন্দর
বরের ঘরে পিসী, কনের ঘরে মাসী – উভয় কুল রক্ষা করে চলা
বর্ণচোরা – ছদ্মবেশী। নিজের আসল পরিচয় গোপন করে এমন
বর্ণচোরা আম – কপট ব্যক্তি
বসন্তের কোকিল – সুদিনের বন্ধু, সুসময়ের বন্ধু
বহাল তবিয়ত – সুস্থ শরীর। নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিন্ত
বড় পিরীতি বালির বাঁধ – ভঙ্গুর
বড়ো করা – বাড়িয়ে তোলা, উন্নত করা। লালনপালন করা
বড়ো গলা – গর্ব, অহংকার
বড়োলোক – ধনী ব্যক্তি
বড়ো হওয়া – গুরুত্বপূর্ণ হওয়া। ধন যশ প্রভৃতি বৃদ্ধি পাওয়া।
বয়স হওয়া – সাবালক হওয়া। বৃদ্ধ হওয়া
বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়া – ক্ষমতা প্রদর্শন
বাঘের আড়ি – নাছোড়বান্দা, দুশমনি
বাঘের চোখ – দুঃসাধ্য বস্তু
বাঘের দুধ – দুঃসাধ্য বস্তু
বাঘের মাসি – আরামপ্রিয় ব্যক্তি
বাজখাঁই আওয়াজ – অত্যন্ত কর্কশ ধ্বনি, গম্ভীর গলার আওয়াজ
বাজার গরম হওয়া – পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হওয়া। বিক্রি বেড়ে যাওয়া। অনর্থক হইচই করা
বাজার চড়া – পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়া
বাজার নরম – পণ্যদ্রব্যের মূল্যহ্রাস
বাজার বসা – বাজারে বেচাকেনা শুরু হওয়া। প্রচণ্ড হট্টগোল হওয়া
বাজারে কাটা – বিক্রি হওয়া
বাজারে দাঁড়ানো – ভালো বিক্রি হওয়া, বিক্রয় পণ্যরূপে প্রতিযোগিতায় টিকে যাওয়া
বাতাস করা – হাওয়া দেওয়া
বাতাস খাওয়া – মুক্তবায়ু বা পাখার হাওয়া উপভোগ করা
বাঁদর নাচানো – অসদুদ্দেশ্যে উসকানি দেওয়া
বাদ সাধা – বাধা দেওয়া, প্রতিবন্ধ সৃষ্টি করা
বাঁধন ছেঁড়া – বন্ধন ছিন্ন করা
বাঁধা গৎ – বৈচিত্র্যহীন নিয়ম বা রীতি। নির্দিষ্ট কথা বা সুর
বানরের গলায় মুক্তার হার – অপাত্রে উৎকৃষ্ট সামগ্রী দান
বাপের বেটা – পিতার যোগ্য পুত্র
বাম/বাঁ হাতের ব্যাপার – ঘুস গ্রহণ
বামন হয়ে চাঁদে হাত – অসম্ভব কিছু পাওয়ার চেষ্টা (বামন = খুব বেঁটে মানুষ)
বারোভূত – নানা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি, ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ
বারো মাস ত্রিশদিন – প্রতিদিন
বারোমাসে তেরো পার্বণ – বছরজুড়ে অনুষ্ঠেয় বাঙালির নানা উৎসব, উৎসবের আধিক্য
বালাই ষাট – অশুভ বা অমঙ্গল খণ্ডনসূচক উক্তি
বালির বাঁধ – ক্ষণস্থায়ী বস্তু
বাস্তুকর্ম – গৃহনির্মাণের কাজ
বাস্তুঘুঘু – সহজে বাস্তুচ্যুত করা যায় না এমন ধূর্ত ব্যক্তি, ঘনিষ্ঠ অথচ সর্বনাশা ব্যক্তি
বাড়া ভাতে ছাই – আশা ভঙ্গ
বায়ু পরিবর্তন – স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য স্থান পরিবর্তন, হাওয়াবদল
বিদুরের খুদ – ভক্তিভরে প্রদত্ত দরিদ্রজনের দান (অশ্রদ্ধার সঙ্গে প্রদত্ত কুরুরাজ দুর্যোধনের রাজভোগ প্রত্যাখ্যান করে বিদুর প্রদত্ত যে খুদ কৃষ্ণ ভক্ষণ করেছিলেন)
বিদ্যা ফলানো – বিদ্যা জাহির করা
বিদ্যার জাহাজ
বিনা মেঘে বজ্রপাত – আকস্মিক বিপদ
বিন্দুতে সিন্ধুজ্ঞান – অতি সামান্য পরিমাণকে প্রচুর বলে কল্পনা
বিন্দুবিসর্গ – অতি অল্প পরিমাণ। সামান্যতম আভাস বা ইঙ্গিত
বিন্দেদূতী – যে পরস্পরের মধ্যে কথা চলাচল করে
বিলাতি বেগুন, বিলেতি বেগুন – টম্যাটো
বিলাতি মাটি – সিমেন্ট
বিলি কাটা – চুলে হাত বুলানো
বিশ্ববেহায়া – অত্যন্ত নির্লজ্জ
বিষ ঝাড়া – ঝাড়ফুঁকের সাহায্যে বিষক্রিয়া নাশনের ভান করা
বিষদাঁত, বিষদন্ত – তেজ বা অহংকার প্রদর্শনের মূল শক্তি
বিষ নেই তার, কুলোপনা চক্কর – অক্ষম ব্যক্তির বৃথা আস্ফালন
বিষ মারা – শক্তি বা তেজ খর্ব করা
বিষের পুঁটলি – হিংসুটে, বিদ্বেষী
বিসমিল্লাহ – শুরু, আরম্ভ
বিসমিল্লায় গলদ – গোড়ায় গলদ, ত্রুটিপূর্ণ সূচনা
বিড়ালতপস্বী – সাধুর ছদ্মবেশে কপট ব্যক্তি, ভণ্ড লোক
বিড়ালের আড়াই পা – বেহায়াপনা। ক্ষণস্থায়ী রাগ
বিড়ালের খুদ – শ্রদ্ধার সামান্য উপহার
বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়া – ভাগ্যক্রমে বিনা চেষ্টাতে বাঞ্ছিত বস্তু লাভ
বিয়ের ফুল ফোটা – বিয়ের লক্ষণ বা সম্ভাবনা দেখা দেওয়া
বুক কাঁপা – ভয় পাওয়ার ফলে হৃদযন্ত্রের কম্পনের হার বেড়ে যাওয়া
বুক চাপড়ানো – শোক বা দুঃখে বারবার বুকে চাপড় মারা
বুক চিতিয়ে চলা – সাহসের সঙ্গে অগ্রসর হওয়া
বুকজুড়ানো – মনে শান্তিদানকারী
বুক জুড়ানো – মনে শান্তি পাওয়া
বুক জ্বালা – অম্লরোগের কারণে বুকের প্রদাহ
বুক পাতা – দুঃখকষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত থাকা
বুকফাটা – অতিশয় বেদনাদায়ক, হৃদয়বিদারক
বুক ফুলে ওঠা – গর্বিত বা আনন্দিত হওয়া
বুক ফোলানো – গর্ব প্রকাশ করা
বুক বাঁধা – ধৈর্যধারণ ও সাহস অবলম্বন করা
বুক ভাঙা – মনোকষ্টে ভেঙে পড়া, আশাহত হওয়া
বুকের পাটা – সাহস, দুঃসাহস
বুদ্ধির ঢেঁকি – স্থূলবুদ্ধি, নির্বোধ
বুড়ো আঙুল – বৃদ্ধাঙ্গুলি
বৃদ্ধিজীবী – সুদখোর, কুসীদজীবী
বেঁকে বসা – পূর্বমত পরিবর্তন করতে সম্মত না হওয়া
বেগার খাটা/ঠেলা – বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করা
বেলা করা – দেরি করা
বেলা পড়া – বিকেল বা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসা
বেশ করা – অন্যের তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো চলা
বোঝার উপর শাকের আঁটি – অতিরিক্তের অতিরিক্ত
বোবাকান্না – প্রকাশ করা যায় না এমন কান্না, চাপা কান্না
ব্যবহারজীবী – আইনজীবী, উকিল
ব্যাঙের আধুলি – গরিবের অতি সামান্য সঞ্চয়। সামান্য ধনে অহংকার
ব্যাঙের ছাতা – ছত্রাকজাতীয় উদ্ভিদবিশেষ, মাশরুম, mushroom
ব্যাঙের সর্দি – অসম্ভব ঘটনা
ভদ্রতার বালাই – সাধারণ সৌজন্যবোধ
ভরাডুবি – সর্বনাশ, সমূহ ক্ষতি
ভরা যৌবন – পূর্ণ যৌবন
ভস্মে ঘি ঢালা – নিষ্ফল কাজ
ভয় জন্মানো – ত্রাস সৃষ্টি হওয়া
ভয় ভাঙা – ভয় দূর করা
ভাগার ফলা – অনুর্বর
ভাগের মা গঙ্গা পায় না – ভাগাভাগির কাজ সিদ্ধ হয় না
ভাগ্যের দোহায় দেওয়া – কপালে হাত দেওয়া
ভাটি পড়া – পৌঢ়ত্বে উপনীত হওয়া
ভাদ্র মাসের তিল
ভানুমতীর খেল – জাদুবিদ্যা, ভেলকিবাজি
ভাব করা – বন্ধুত্ব স্থাপন করা
ভালুকজ্বর, ভাল্লুকের জ্বর – কাঁপুনি দিয়ে আসে এমন ক্ষণস্থায়ী জ্বর
ভালো করা – উপকার করা, মঙ্গলসাধন করা। চিকিৎসাদ্বারা রোগমুক্ত করা
ভালো মনে – সরলবিশ্বাসে। প্রসন্নচিত্তে
ভালোমানুষ সাজা – সৎ ও সরল মানুষের ভান করা
ভাশুর-ভাদ্রবউ সম্পর্ক – দুজনের মধ্যে সরাসরি বাক্যালাপ কাঙ্ক্ষিত নয় এমন সম্পর্ক
ভাড়ে মা ভবানী – রিক্ত হস্ত
ভিজাবিড়াল, ভিজেবিড়াল – আপাতদৃষ্টিতে বৃষ্টিতে ভেজা বিড়ালের মতো নিরীহ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে দুষ্টপ্রকৃতির লোক, ভণ্ড, কপটাচারী
ভিটায় ঘুঘু চড়ানো – সর্বনাশ করা
ভিতরে ভিতরে, ভেতরে ভেতরে – চুপিসারে, সংগোপনে
ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা – অতিশয় কঠোর ও দৃঢ় সংকল্প
ভুঁইফোঁড় – হঠাৎ ধনসম্পত্তি লাভ করেছে এমন। হঠাৎ আবির্ভূত
ভুল বোঝাবুঝি – পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব
ভুল ভাঙা – ভুল ধারণা দূরীভূত হওয়া
ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ – অপব্যয়
ভূতের ব্যাগার – অযথা শ্রম
ভূশণ্ডি – বয়োবৃদ্ধ বহুদর্শী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি
ভূশণ্ডির কাক – দীর্ঘজীবী
ভেদাভেদ জ্ঞান/বোধ – আপনপর জ্ঞান
ভেরেন্ডা ভাজা – অকাজে কালক্ষেপণ করা
ভেস্তে যাওয়া – পণ্ড বা নষ্ট হওয়া, ফেঁসে যাওয়া, ওলট-পালট হওয়া
ভেড়াকান্ত – শ্রেষ্ঠ বোকা
ভেড়ার পাল – অন্ধ অনুকরণ
মই দেওয়া – সর্বনাশ করা
মগের মুল্লুক/মুলুক – অরাজক দেশ
মজা টের পাওয়া – জব্দ হওয়া, বিপদ উপলব্ধি করা
মজা দেখা – অন্যের অসহায়ত্ব দেখে মজা পাওয়া
মজা দেখানো – শিক্ষা দেওয়া, জব্দ করা
মজা লোটা – আনন্দ উপভোগ করা
মণিকাঞ্চনযোগ – মানানসই হওয়া (স্বর্ণের সঙ্গে মণির যোগের মতো সুন্দর ও শোভন মিল)
মণিহারা ফণী – প্রিয়জন বা কাঙ্ক্ষিত বস্তু হারানোর ফলে অস্থিরচিত্ত ব্যক্তি, প্রিয়জনের জন্য অস্থির লোক
মত দেওয়া – সম্মতি দেওয়া
মত নেওয়া – অনুমতি বা সম্মতি গ্রহণ করা। পরামর্শ গ্রহণ করা
মন উনচান করা – অস্থির হওয়া
মন ওঠা – আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
মন কষা – মনকে দৃঢ় করা। মন পরীক্ষা করা
মন কাড়া – মোহিত করা, মুগ্ধ করা
মন কেমন করা – মন ভারাক্রান্ত বা ব্যাকুল হওয়া
মন খারাপ করা – মনে দুঃখ পাওয়া
মন খোলা – মনের কথা অকপটে খুলে বলা
মন গলা – হৃদয় বিগলিত হওয়া
মন জোগানো – অন্যের খুশিমতো কাজ করা
মন টলা – পূর্বসংকল্প বা অভিপ্রায় শিথিল হওয়া, মতের পরিবর্তন হওয়া
মন টানা – মন আকৃষ্ট করা
মন দেওয়া – মনোসংযোগ করা। ভালোবাসা
মন দেওয়া-নেওয়া – পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা অনুভূত হওয়া, পরস্পরকে ভালোবাসা
মন না মতি – অস্থির মানব মন
মন ফেরানো – কোনো কিছু থেকে মনকে নিবৃত্ত করা
মন বসা – চিত্ত স্থির হওয়া, ভালো লাগা
মন ভার হওয়া – বিষাদগ্রস্ত হওয়া, অপ্রসন্ন হওয়া
মনভোলা – কিছু মনে থাকে না এমন, ভুলো, আত্মবিস্মৃত
মন ভোলানো – চিত্ত বিমোহিত করা, মন হরণ করা
মন মজা – কোনো কিছুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাতে নিবিষ্ট থাকা
মনমরা – বিমর্ষ, উৎসাহহীন
মন মাতানো – মুগ্ধ করা
মন রাখা – অন্যের মন রক্ষা করা
মন লাগা – কোনো ব্যক্তি অথবা বিষয়ের প্রতি আগ্রহ বা উৎসাহ বোধ করা
মন লাগানো – মনোযোগ দেওয়া, মনোনিবেশ করা
মন হরা – চিত্ত হরণ করা
মনে করা – স্মরণ করা। চিন্তা করা। সংকল্প করা
মনে জাগা – স্মরণ হওয়া
মনে থাকা – স্মরণে থাকা
মনে ধরা – পছন্দসই হওয়া
মনে মনে – বাইরে প্রকাশ না করে। কল্পনায়
মনের আগুন – শোক ও দুঃখজনিত মনের তীব্র জ্বালা, অন্তর্দাহ
মনের জোর – মানসিক শক্তি বা দৃঢ়তা, মনোবল, আত্মবিশ্বাস
মনে রাখা – স্মরণে রাখা
মন্ত্র করা – লোকবিশ্বাস মতে বিশেষ শব্দ বা শব্দগুচ্ছ উচ্চারণ করে কোনো ব্যক্তিকে বশীভূত করা
মন্দের ভালো – অনেক মন্দের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম মন্দ
মরার সময় মকরধ্বজ – শেষ প্রচেষ্টা
মরালগামিনী – রাজহংসীর মতো মন্থর ও মনোহর গতিযুক্ত (মরাল = রাজহাঁস)
মর্কট বৈরাগ্য – সংসারের প্রতি অনাসক্তির ভান। ভণ্ডামি (মর্কট = মাকড়সা)
মশা মারতে কামান দাগানো – নিরর্থক অপব্যয়। সামান্য ব্যাপারে বৃহৎ আয়োজন
মহাধাতু – স্বর্ণ, সোনা
মহাভারত অশুদ্ধ হওয়া – বড় রকমের অপরাধ করা
মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা – দুর্গত বা মৃতপ্রায় ব্যক্তির ওপর অত্যাচার
মাকাল – সুদর্শন কিন্তু অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তি
মাকাল ফল – অন্তঃসারশূন্য
মাছরাঙার কলঙ্ক – অনেক অপরাধীর মধ্যে কেবল একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা
মাছিমারা কেরানি – অন্ধ অনুকরণকারী ব্যক্তি, বিচারবুদ্ধিহীন লোক
মাছের তেলে মাছ ভাজা – পরে পরে কার্যোদ্ধার
মাছের মা – নির্মম, নিষ্ঠুর
মাছের মায়ের পুত্রশোক – কপট বেদনাবোধ
মাটি করা – ব্যর্থ করা, পণ্ড করা
মাটি দেওয়া – কবর দেওয়া
মাটি মাড়ানো – আগমন করা, পদার্পণ করা। নিকটবর্তী পথে যাতায়াত করা
মাটির দরে – অত্যন্ত অল্প মূল্যে
মাটির মানুষ – নিরীহ ব্যক্তি
মাথা আঁচড়ানো – চিরুনি দিয়ে কেশবিন্যাস করা
মাথা উঁচু করা – বিপদ কাটিয়ে ওঠা। উন্নতি করা। বিদ্রোহ করা
মাথাওয়ালা – বুদ্ধিমান, চতুর
মাথা করা – ক্ষতি করতে অসমর্থ হওয়া
মাথা কাটা যাওয়া – অত্যন্ত লজ্জা পাওয়া, অপমানিত হওয়া
মাথা কেনা – সর্বময় কর্তা বনে যাওয়া, সর্বেসর্বা হওয়া
মাথা কোটা – মনের দুঃখে মাথা ঠোকা। প্রার্থনা পূরণের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করা
মাথা খাও – মাথার দিব্যি দিয়ে শপথ করার অনুরোধ
মাথা খাওয়া – সর্বনাশ করা, অত্যধিক প্রশ্রয় দিয়ে বিগড়ে দেওয়া
মাথা খাটানো – মস্তিষ্ক বা বুদ্ধি চালনা করা
মাথাখারাপ – অপ্রকৃতিস্থ, খ্যাপাটে, মাথাপাগলা
মাথা খারাপ করা – দুশ্চিন্তাহেতু অস্থির হওয়া
মাথা খেলানো – বুদ্ধি খাটানো
মাথা খোঁড়া – মাথা কোটা দ্রষ্টব্য
মাথাগরম – রাগী, বদমেজাজি
মাথাগরম করা – উত্তেজিত হওয়া, ক্রুদ্ধ হওয়া। অস্থির হওয়া
মাথাগরম হওয়া – ক্রোধ সৃষ্টি হওয়া, রাগান্বিত হওয়া। অস্থির হওয়া
মাথা গলানো – অনধিকারচর্চায় লিপ্ত হওয়া
মাথা গুলানো – হতবুদ্ধি করা। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া
মাথা গোঁজা – বসবাস করার জন্য কোনো রকমে আশ্রয় বা ঠাঁই পাওয়া
মাথা ঘামানো – কোনো বিষয়ে চিন্তামগ্ন হওয়া
মাথা ঘোরা – চারদিক ঘুরছে এমন বোধ করা। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া
মাথা চাড়া দেওয়া – নিজের অস্তিত্ব জ্ঞাপন করা। হঠাৎ বিদ্রোহী হয়ে ওঠা
মাথা চুলকানো – কোনো কিছুর জবাব উপায় বা সংকল্প স্থির করতে না পেরে মাথায় আঙুল চালনা করা
মাথা ঠান্ডা করা – উত্তেজনা দূর করে শান্ত হওয়া, ক্রোধ পরিহার করা
মাথা ঠিক রাখা – বিপদ বা উত্তেজনায় শান্ত ও অবিচলিত থাকা
মাথা তোলা – সতোজ হয়ে ওঠা। উন্নতি করা। বিদ্রোহী হওয়া
মাথাধরা – মাথায় যন্ত্রণাবোধ, শিরঃপীড়াবিশেষ
মাথা নিচু হওয়া – লজ্জা ও অপমানে কুণ্ঠিতবোধ করা, মর্যাদাহানি ঘটা
মাথা নোয়ানো – নতিস্বীকার করা
মাথাপাগলা – বাতিকগ্রস্ত, খ্যাপাটে, মাথাখারাপ
মাথাপিছু – জনপ্রতি
মাথা পেতে নেওয়া – শিরোধার্য বলে মেনে নেওয়া, সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করা
মাথা বিকানো – সম্পূর্ণরূপে বশ্যতা স্বীকার করা। চিন্তাশক্তি বিসর্জন দেওয়া
মাথাব্যথা – শিরঃপীড়া। গরজ, আগ্রহ
মাথামুন্ডু – বোঝার মতো বিষয়
মাথামোটা – স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন, নির্বোধ, গোঁয়ার, একরোখা
মাথার খুলি – করোটি, খর্পর
মাথার ঘাম পায়ে ফেলা – কঠোর দৈহিক পরিশ্রম করা
মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল – ভীষণ বিপদে অস্থির অবস্থা
মাথার দিব্যি – শপথ, হলফ
মাথা হেঁট হওয়া – লজ্জা বা অপমানে মাথা নত হওয়া। নতিস্বীকার করা
মাথায় ওঠা – অত্যধিক প্রশ্রয় পেয়ে দুর্বিনীত বা স্পর্ধিত হওয়া
মাথায় করা – জানান দেওয়া। অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া। উপেক্ষা করা
মাথায় কাঁঠাল ভাঙা – ফাঁকি দিয়ে সুবিধা আদায় করা
মাথায় খাটো – বেঁটে, খর্বাকৃতি
মাথায় খুন চাপা – অতিশয় ক্রুদ্ধ হওয়া
মাথায় ঢোকা – বুঝতে পারা
মাথায় তোলা – অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া
মাথায় রাখা – ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তের জন্য মনে রাখা। অত্যন্ত শ্রদ্ধা করা। আদরযত্নে রাখা
মাথায় হাত – হতাশা বিস্ময় প্রভৃতি কারণে হতচকিতবোধ
মাথায় হাত বুলানো – কৌশলে বা ফাঁকি দিয়ে কার্যসিদ্ধির চেষ্টা করা। আদর করা
মান করা – অভিমান করা
মানবলীলা সংবরণ করা – মৃত্যুবরণ করা
মান ভাঙা – অভিমান দূর করা বা হওয়া
মান রাখা – সম্মান রক্ষা করা
মানিকজোড় – অন্তরঙ্গ বন্ধু
মানুষ করা – মানবশিশুকে সযত্নে প্রতিপালন করা
মান্ধাতার আমল – অতি প্রাচীনকাল
মারমার কাটকাট – অত্যন্ত ব্যস্ততা ও হইচই
মারা পড়া – প্রাণত্যাগ করা। নষ্ট বা ধ্বংস হওয়া
মার্কামারা – ছাপমারা, চিহ্নিত। দাগি। সুপরিচিত
মাল কাটা – পণ্যদ্রব্যের কাটতি থাকা
মালুম করা – কোনো কিছু বুঝতে বা অনুভব করতে পারা
মালুম হওয়া – বোধগম্য হওয়া, অনুভূত হওয়া
মায়া কাটানো – মোহ বা স্নেহের বন্ধন ছিন্ন করা
মায়াকান্না – লোকদেখানো কান্না, কান্নার ভান, কপট কান্না
মায়া দেখানো – মমতা প্রদর্শন করা
মায়া পড়া – স্নেহমমতায় আবিষ্ট হওয়অ
মিছরির ছুরি – মুখে মধু অন্তরে বিষ
মিশ খাওয়া – খাপ খাওয়া। বনিবনা হওয়া
মুক্তকণ্ঠে – উচ্চকণ্ঠে। স্পষ্ট ভাষায়, অসংকোচে
মুক্তচিন্তা – সংকীর্ণতাবর্জিত অসাম্প্রদায়িক মনোভাব
মুক্তবুদ্ধি – সংকীর্ণতাবর্জিত ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাবসম্পন্ন
মুক্তহস্ত – দানশীল, উদার
মুখ-আলগা – ভালোমন্দ নির্বিশেষে যা মুখে আসে তাই বলে এমন
মুখ উজ্জ্বল করা – গৌরবমণ্ডিত করা
মুখ খিঁচানো – ভ্যাংচানো। বিকৃত মুখভঙ্গি সহকারে তিরস্কার করা
মুখ খিস্তি – অশ্লীল বাক্য, গালাগালি
মুখ খোলা – প্রতিবাদ করা। প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা
মুখচন্দ্র – চাঁদের মতো সুন্দর মুখ
মুখ চলা – অনর্গল কথা বলা। বিরামহীনভাবে খাওয়া। তিরস্কার করা
মুখ চাওয়া – প্রত্যাশি হওয়া। সম্মান করা
মুখ চুন – মলিন মুখ
মুখচোরা – অল্প কথা বলে এমন, লাজুক
মুখ তোলা – প্রসন্ন দৃষ্টিপাত করা
মুখ থাকা – সম্মান রক্ষা হওয়া
মুখ দেখা – বিবাহে পাত্রী দেখে আশীর্বাদ করা
মুখ ফোটা – কথা বলা
মুখ ফোলানো – মুখ গোমড়া করা
মুখবন্ধ – ভূমিকা, অবতরণিকা
মুখ বুজে সহ্য করা – নীরবে সহ্য করা
মুখ ভার করা – মুখ গম্ভীর করা, বিরূপ ভাব প্রকাশ করা
মুখরক্ষা – সম্মান বা মর্যাদা রক্ষা
মুখ রাখা – সম্মান রক্ষা করা
মুখরোচক – সুস্বাদু
মুখ শুকানো – মুখমণ্ডল বিবর্ণ বা ম্লান হওয়া
মুখসর্বস্ব – কাজের চেয়ে কথা বলায় পটু এমন, বাক্পটু
মুখ সামলানো – সতর্ক হয়ে কথা বলা
মুখ সিটকানো – ঘৃণা বিতৃষ্ণা বা অপছন্দ হওয়ার কারণে মুখ বিকৃত করা
মুখস্থবিদ্যা – মর্ম না বুঝে কেবর মুখস্থ করে অর্জিত বিদ্যা
মুখ হওয়া – গালিগালাজ করতে অভ্যস্ত হওয়া
মুখিয়ে থাকা – ব্যাকুল হয়ে থাকা
মুখে আগুন – মৃত্যু কামনাসূচক তিরস্কার
মুখে দুধের গন্ধ
মুখে ফুলচন্দন পড়া – শুভ সংবাদের জন্য ধন্যবাদ দেয়া
মুখেমুখে – মৌখিকভাবে, অলিখিতভাবে। মুখের ওপর, তৎক্ষণাৎ
মুখের ওপর – সামনাসামনি। সঙ্গে সঙ্গে, তৎক্ষণাৎ
মুখোমুখি – সামনাসামনি
মুখোশ খোলা – আবরণ খুলে প্রকৃত রূপ প্রকাশ করা
মেঘ করা – মেঘে আকাশ ঢেকে যাওয়া
মেঘ না চাইতেই জল – আশাতীত ফল
মেঘে মেঘে বেলা হওয়া – বয়স বাড়া
মেঘের ছায়া – অশুভ লক্ষণ
মেছো হাটা
মেনিমুখো – মুখচোরা, লাজুক। ভালো মানুষের ভান করে এমন, কপট (মেনি অর্থ বিড়ালী)
মেয়ে দেখা – বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপনের উদ্দেশ্যে বরপক্ষের কনে দেখা
মোটের উপর/ওপর – সবদিক বিবেচনা করে
মোমের পুতুল – সামান্য পরিশ্রমে কাতর হয়ে পড়ে এমন ব্যক্তি
যক্ষের ধন – কৃপণের ধন
যত গর্জে তত বর্ষে না – আড়ম্বরের তুলনায় কম কাজকর্ম
যত দোষ নন্দঘোষ – দুর্বলের প্রতি সর্বদা দোষারোপ
যদি হয় সুজন তেঁতুল পাতায় ন জন – মিলেমিশে কাজ করলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়
যবনিকা পতন – পরিসমাপ্তি
যমযন্ত্রণা – মৃত্যুযন্ত্রণা। মৃত্যুর মতো ভয়ংকর যন্ত্রণা
যমের অরূচি – সহজে মরে না
যমের দোসর – ভয়ানক লোক
যশুরে কই – মাথামোটা ও শীর্ণদেহ ব্যক্তি
যার লাঠি তার মাটি – জোর যার মুল্লক তার
যাহা বাহান্ন তাহা তিপ্পান্ন – খুব সামান্য তফাত
যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে রাত হয় – যেখানে ভয়, সেখানে বিপদ হয়
রক্তগঙ্গা করা – ব্যাপক রক্তপাত ও খুনোখুনি করা
রক্তগরম করা – উত্তেজিত করা বা হওয়া
রক্ত পড়া – (সচরাচর শরীরের ক্ষতস্থান থেকে) রক্ত ক্ষরণ হওয়া
রক্ত ভাঙা – জরায়ু থেকে অতিরিক্ত রক্তস্রাব হওয়া
রক্তের অক্ষরে লেখা – রক্তের বিনিময়ে কোনো কিছু অর্জনের কাহিনি, রক্ত দিয়ে লেখা
রক্তের টান – স্বজনপ্রীতি
রণে ভঙ্গ – লড়াইয়ের ময়দান বা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন। প্রতিযোগিতা বিতর্ক প্রভৃতি থেকে মাঝপথে বিদায়গ্রহণ
রথ দেখা ও কলা বেচা – একই যাত্রায় একাধিক উদ্দেশ্যসিদ্ধি, এক ঢিলে দুই পাখি মারা (মেলায় গিয়ে একইসঙ্গে রথদর্শন করে পুণ্য অর্জন এবং কলা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন)
রন্ধ্রে রন্ধ্রে – সব জায়গায়
রং চড়ানো/ফলানো – অতিরঞ্জিত করা
রাই কুড়িয়ে বেল – কণা সংগ্রহ করে বড়ো কিছু সৃষ্টি করা। ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে বৃহৎ
রা করা – কথা বলা, শব্দ করা
রাক্ষস বিবাহ – কনেকে অপহরণ করে বলপূর্বক বিবাহ
রাক্ষসী বেলা – দিনের শেষ আড়াই ঘণ্টা সময়
রাক্ষসী মায়া – মারাত্মক ছলনা
রাগ পড়া – ক্রোধ প্রশমিত হওয়া
রাগ সামলানো – ক্রোধ দমন করা
রাঘববোয়াল – অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক, ক্ষমতাশালী ব্যক্তি (শাব্দিক অর্থ:- বিশালাকৃতির বোয়াল মাছবিশেষ)
রাজঘোটক – চমৎকার মিল
রাজা-উজির – ধনী ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিবর্গ
রাজা-উজির মারা – বড়ো বড়ো কথা বলে গর্ব প্রকাশ করা, নিজের বাহাদুরি প্রকাশ করা
রাবণের গোষ্ঠী – বড় পরিবার
রাবণের চিতা – সহজে প্রশমিত হয় না এমন অনন্ত যন্ত্রণা, চির অশান্তি
রাবণের পুরি – বহু সদস্যভুক্ত যৌথ পরিবার
রামগরুড়ের ছানা – গোমড়ামুখো লোক
রাম রাজত্ব – শান্তিশৃঙ্খলাযুক্ত রাজ্য
রাশ টানা – নিয়ন্ত্রণ করা, সংযত করা
রাশভারী – গুরুগম্ভীর
রাষ্ট্র করা – প্রচার করা, ঘোষণা করা। রটনা করা
রাস্তা দেখানো – উপায় বাতলানো
রাস্তা ধরা – চলতে আরম্ভ করা। পদাঙ্ক অনুসরণ করা
রাহুগ্রস্ত – অত্যন্ত বিপন্ন। অসাধু লোকের কবলে পড়েছে এমন
রাহুমুক্ত – দুর্ভাগ্যের কবল থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত
রাহুর দশা – দুঃসময়, অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা
রায়বাঘিনি – বড়ো বাঘিনি। অতিশয় উগ্র ও তেজস্বী নারী
রুইকাতলা – সমাজের বিত্তবান ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিবর্গ, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, ক্ষমতাশালী লোকজন
রুটিরুজি – খাদ্য ও জীবিকা
রুপালি পর্দা – চলচ্চিত্র, সিনেমা
রেখে ঢেকে – সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ না করে, কিছুটা গোপন বা অপ্রকাশিত রেখে
লক্ষ্মীর বরযাত্রী – সুসময়ের বন্ধু
লগন চাঁদ
লঙ্কাকাণ্ড – হুলুস্থুল কাণ্ড, বিপর্যস্ত অবস্থা, তুমুল কাণ্ড (রামায়ণে বর্ণিত লঙ্কা ধ্বংসের অধ্যায়)
লঙ্কা পায়রা – কুচক্রী
লজ্জাবতী লতা – লাজুক
লবঙ্গলতিকা – কোমর স্বভাবের গুণবতী নারী
লম্বা করা – প্রসারিত করা, দীর্ঘায়িত করা, বাড়ানো
লম্বা চাল – অতিরিক্ত আড়ম্বর প্রদর্শন
লম্বা দেওয়া – চম্পট দেওয়া
লম্বা দৌড় – বিরতিহীন দৌড়
ললাটলিখন – ভাগ্যলিপি, অদৃষ্টলিপি
ললাটের লিখন, কপালের লিখন – ভাগ্যলিপি
লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন – চাওয়ামাত্র যার কাছে টাকা পাওয়া যায়, বেহিসাবি খরচের জোগানদার
লাল ফিতে – সরকারি অফিসের দীর্ঘসূত্রতা (লাল ফিতের দৌরাত্ম্য)
লাল বাতি জ্বালানো – অসফল হয়ে ব্যাবসা গুটিয়ে ফেলা, ধ্বংস করা
লীলাখেলা সাঙ্গ হওয়া – মানবজীবনের সমাপ্তি ঘটা
লেগে যাওয়া – হঠাৎ ব্যথা পাওয়া। (কাজে) নেমে করা। ফলে যাওয়া
লেজে পা পড়া – স্বার্থে আঘাত লাগা
লেফাফাদুরস্ত – বাহ্যিক সাজসজ্জা ও আদব-কায়দায় নিখুঁত হওয়া সত্ত্বেও আসল কাজে ফাঁকিবাজ, কপট
লোকায়ত রাষ্ট্র – ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র
ল্যাজকাটা, লেজকাটা – মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে এমন
ল্যাজ গুটানো – পরাজয় মেনে নেওয়া
ল্যাজ মোটা হওয়া, লেজ মোটা হওয়া – অহংকারে লেজ ফুলে ওঠা
ল্যাজেগোবরে করা, লেজেগোবরে করা – অক্ষমতার জন্য বিপর্যস্ত অবস্থায় উপনীত হওয়া, বিতিকিচ্ছিরি অবস্থাযুক্ত
ল্যাং মারা – অন্যায়ভাবে অন্যকে পেছনে ঠেলে নিজে অগ্রসর হওয়া, অন্যকে বেকায়দায় ফেলা
শকুনি মামা – কুচক্রী লোক, কূটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি
শতমুখে বলা – পুনঃপুন বলা, বাচালের মতো বারবার বলা
শনির দশা – অতিশয় দুঃসময় বা অশুভকাল, দুর্দশা
শনির দৃষ্টি – শনির দশা দ্রষ্টব্য
শরতের শিশির – সুসময়ের বন্ধু
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা – দোষ গোপনের বৃথা চেষ্টা
শাঁখের করাত – যা থেকে সহজে নিস্তার পাওয়া যায় না, উভয়সংকট (শঙ্খ কাটার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত ঘূর্ণ্যায়মান করাত যার দাঁতগুলো এমনভাবে বিন্যস্ত যে দুই দিকে ঘুরিয়েই কাটা যায়)
শাপে বর – অনিষ্টে ইষ্ট লাভ
শিকেয় তোলা – অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত বা মুলতুবি রাখা
শিক্ষা দেওয়া – জব্দ করা, মজা দেখানো (মজা দেখানো ভুক্তিতে রয়েছে)
শিখণ্ডী খাড়া করা – কারও আড়ালে থেকে অন্যায় কাজ করা (শিখণ্ডী = ময়ূর)
শিঙা ফোঁকা – শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা
শিব গড়তে বাঁদর গড়া – খুব ভালো কিছু করতে গিয়ে খুব খারাপ কিছু করে ফেলা
শিবত্বপ্রাপ্তি – মৃত্যু, পরলোকগমন
শিবরাত্রির সলতে – একমাত্র সন্তান, একমাত্র জীবিত বংশধর
শিরদাঁড়াভাঙা – মেরুদণ্ডহীন, মনোবলহীন
শিরে সংক্রান্তি – আসন্ন বিপদ, মহাবিপদ
শিয়রে শমন – মরণ সন্নিকটে এমন অবস্থা (শিয়র = শয়নকারীর মাথার দিক)
শিয়ালফাঁকি – মৃত্যুর ভান করে প্রতারণা
শিয়ালের যুক্তি – অকেজো যুক্তি
শুভঙ্করের ফাঁকি – ধোঁকা দিয়ে ফায়দা হাসিল
শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়া
শেষ কথা – চূড়ান্ত করা
শেষ করা – সমাপ্ত করা। ধ্বংস বা বিকল করা
শোনা কথা – কেবল লোকমুখে শ্রুত কিন্তু তার সত্যাসত্য জানা নেই এমন কথা
শ্বেতহস্তী পোষা – অপ্রয়োজনীয় ও ব্যয়সাপেক্ষ পদক্ষেপ করা
শ্যাম রাখি না কুল রাখি – উভয়সংকট
শ্যেনদৃষ্টি – বাজপাখির মতো প্রখর দৃষ্টিশক্তি (শ্যেন = বাজপাখি)
শ্রাদ্ধ গড়ানো – বিশৃঙ্খল ও অবাঞ্ছিত ব্যাপার দীর্ঘায়িত হওয়া
শ্রীঘর – জেলখানা, কারাগার
ষণ্ডামর্ক – বলিষ্ঠ ও গোঁয়ার প্রকৃতির ব্যক্তি, অতি দুর্বৃত্ত ব্যক্তি
ষষ্ঠীভাগ্য – সন্তানভাগ্য
ষষ্ঠীর বাহন – বিড়াল
ষাঁড়ের গোবর – অকোজো/অকর্মণ্য মানুষ
ষোলো আনা – সম্পূর্ণ, পুরোপুরি
ষোলোকলা – সম্পূর্ণভাবে, পুরোপুরি
সকাল সকাল – অবিলম্বে, দেরি না করে। বেলা থাকতে থাকতে
সপ্তমে চড়া – প্রবল উত্তেজনা
সব শেয়ালের এক রা
সবুজ সংকেত – অগ্রসর হওয়ার অনুমোদন বা সংকেত
সবুরে মেওয়া ফলে – ধৈর্য ধরলে যথাসময়ে ফল পাওয়া যায়
সবে ধন নীলমণি – একমাত্র সন্তান। সর্বস্ব ধন, একমাত্র ভরসা
সম্মার্জনী – ঝাঁটা
সরফরাজি চাল – অনাবশ্যক মাতব্বরি
সস্তার তিন অবস্থা – অল্প দামে কেনা নিম্নমানের পণ্য, সস্তার জিনিস প্রায়ই খারাপ থাকে
সংসার পাতা – বিবাহ ও ঘরকন্না শুরু করা
সাক্ষীগোপাল – নিষ্ক্রিয় দর্শক (মূল অর্থ যার উপস্থিতিই সাক্ষীর কাজ করে)
সাতকথা – নানা কথা
সাত কাণ্ড রামায়ণ – বিরাট ব্যাপার, এলাহি কাণ্ড
সাতকাহন – অসংখ্য, অন্তহীন
সাতখুন মাপ/মাফ – গুরুতর অপরাধ সত্ত্বেও শাস্তির পরিবর্তে অতিরিক্ত প্রশ্রয়দান
সাত তাড়াতাড়ি – ব্যতিব্যস্ত হয়ে। অতি দ্রুত, খুব শীঘ্র
সাতপাঁচ ভাবা – অগ্রপশ্চাৎ নানা বিষয়ে ভাবা, নানারকম চিন্তা করা
সাতসতেরো – নানারকম কথা। বিবিধ উপকরণ
সাতসমুদ্র, সাতসমুদ্দুর – অত্যন্ত দূরবর্তী
সাতেও না পাঁচেও না – নির্লিপ্ত
সাদাকথা – সরল এবং স্পষ্ট কথা
সাধু সাবধান – ভবিষ্যৎ বিপদ সম্পর্কে সাবধান থাকার সতর্কবাণী
সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে – উভয় কুল রক্ষা
সাপে নেউলে – সাপ আর নেউলের সম্পর্কের মতো চিরবৈরিতার সম্পর্ক, পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন
সাপের ছুঁচো গেলা – উভয়সংকটে পড়া
সাপের ছুঁচো পা দেখা – গর্বে অন্ধ হওয়া
সাপের পাঁচ পা দেখা – দর্প বা অহংকারের বাড়াবাড়ি
সাফাই গাওয়া – নিরপরাধ প্রমাণের জন্য যুক্তি প্রদর্শন করা
সিজিল মিছিল – সাজানো-গোছানো ভাব
সুখে থাকতে ভূতে কিলায় – স্বেচ্ছায় দুঃখ বরণকারী
সুখের পায়রা – সুসময়ের বন্ধু
সুবর্ণ সুযোগ, স্বর্ণসুযোগ – বিরল সুযোগ, অতি উৎকৃষ্ট সুযোগ, golden opportunity
সুর বদলানো – কথার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া
সুলুক সন্ধান – ছিদ্রান্বেষণ। খোঁজখবর, খোঁজ, গুপ্ত বিষয়ের সন্ধান
সোনার কাঠি রূপার কাঠি – বাঁচা-মরার বস্তু
সোনার পাথরবাটি – অসম্ভব বস্তু
সোনায় সোহাগা – মানানসই হওয়া, মণিকাঞ্চন যোগ
স্বখাতসলিল – স্বীয় কৃতকর্মের ফল, নিজ বিপদ ডাকা (সলিল = পানি)
স্বোদরপূরক – স্বার্থপর (উদর = পেট)
হদ্দ হওয়া – নাকাল হওয়া, জেরবার হওয়া, হিমশিম খাওয়া
হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী – নির্বোধের পরামর্শে চলা নির্বোধ ব্যক্তি
হযবরল (উচ্চারণ হ-য-ব-র-ল) – বিশৃঙ্খলা, গোঁজামিল। বিপর্যস্ত, এলোমেলো
হরিঘোষের গোয়াল – অনেক লোকের কোলাহল
হরিষে বিষাদ – আনন্দঘন পরিবেশের অপ্রত্যাশিত দুঃখজনক সমাপ্তি, আনন্দে বিষাদ
হরিহর-আত্মা – অভিন্ন-হৃদয়। গভীর বন্ধুত্ব
হস্তীমূর্খ – অতিশয় মূর্খ, অত্যন্ত নির্বোধ
হয়কে নয় করা – যা ঘটে বা সংঘটিত হয় তাকে ঘটেনি বলে প্রতিপন্ন করা, সত্যকে মিথ্যারূপে প্রতিপন্ন করা
হাওয়া খাওয়া – বেড়ানো। কিছু না খাওয়া
হাওয়া বদল – স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য ভিন্ন স্থানে গমন (যে স্থানের বাতাস দূষণমুক্ত সেখানে গমন)
হাওয়া হওয়া – নিরুদ্দেশ হওয়া, চম্পট দেওয়া
হাজার হাজার – অসংখ্য, অগণিত
হাট করা – উন্মুক্ত করা, খোলা। বিশৃঙ্খলা বা এলোমেলো করা, হট্টগোল করা
হাট বসা – বহুজনের সমাবেশ হওয়া। হট্টগোল করা
হাঁটুর বয়সি – বয়সে অনেক ছোটো
হাটে হাঁড়ি ভাঙা – গোপন কথা প্রকাশ করা (হাঁড়ি ভাঙা ভুক্তিতে রয়েছে)
হাত আসা – অভ্যাস বা রপ্ত হওয়া
হাত ওঠানো – প্রহার করতে উদ্যত হওয়া
হাত কচলানো – ক্রমাগত দুই হাত রগড়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করা
হাত করা – বশে আনা, আয়ত্ত করা। হস্তগত করা
হাতকষা – কৃষণ
হাত কামড়ানো – বঞ্চিত হয়ে আফসোস করা
হাতখরচ – বিবিধ ব্যক্তিগত ব্যয়
হাতখালি – নিঃস্ব
হাতখালি করা – রিক্তহস্ত বা নিঃস্ব হওয়া
হাতখোলা – মুক্তহস্ত। দাতা, দানশীল
হাত গুটানো – নিরস্ত হওয়া, নিজেকে যুক্ত না করা
হাত গোনা – হাতের রেখা দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করা
হাত চলা – প্রহার করা
হাত চালা – চোর ধরার জন্য কল্পিত মন্ত্রবলে হাত চালনা করা
হাত চালানো – তাড়াতাড়ি করা
হাতচিঠা – প্রাপ্তিস্বীকারপত্র, রসিদ
হাত চুলকানো – কোনো কিছু করার জন্য আস্থিরতা প্রকাশ করা
হাতছানি – হাত নেড়ে ইঙ্গিত প্রদান। আহ্বান
হাতছাড়া – অধিকারচ্যুত, বেহাত
হাত জুড়ানো – স্বস্তি লাভ করা
হাতজোড় করা – মিনতি করা।
হাত জোড়া থাকা – কর্মব্যস্ত থাকা
হাতটান – কৃপণতা, কিপটেমি। ছিঁচকে চুরির অভ্যাস
হাততোলা – প্রহার করতে উদ্যত হওয়া
হাত দিয়ে হাতি ঠেলা – অসম্ভকে সম্ভব করতে চেষ্টা করা
হাত দেওয়া – সূচনা করা
হাত দেখা – হাতের তালুর রেখা দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করা
হাত ধরা – নির্ভর করা
হাতধরা – বশীভূত, অধীন, বশবর্তী
হাত ধুয়ে বসা – আশা ত্যাগ করা। নিশ্চিত বোধ করা
হাত ধোয়া – সংস্রব ত্যাগ করা
হাত পাকানো – অভ্যাসদ্বারা দক্ষতা অর্জন করা
হাত-পা ছেড়ে দেওয়া – নিশ্চেষ্ট হওয়া, হতাশ হওয়া
হাত পাতা – সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা চাওয়া
হাতবদল – হস্তান্তর
হাত বাড়ানো – লোভ করা
হাতভারী – কৃপণ, ব্যয়কুণ্ঠ
হাত লাগানো – কাজে প্রবৃত্ত হওয়া
হাতসাফাই – চুরি। হাতের ছলাকলা, হাতের পটুতা
হাতি পোষা – অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য কাজ করা
হাতির খোরাক – ব্যয়সাধ্য দ্রব্যসামগ্রীর জোগান। বিরাট খরচ
হাতির পাঁচ পা দেখা – অহংকার বোধ করা। দুঃসাহসী হওয়া
হাতেকলমে – নিজ হাতে বা প্রত্যক্ষভাবে
হাতেখড়ি – কোনো কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা
হাতেখোলা – সর্বস্বান্ত হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন
হাতে গড়া – হাতে তৈরি করা
হাতে ধরা – বিশেষভাবে অনুরোধ বা মিনতি করা
হাতেনাতে – অপরাধের প্রমাণ-সহ
হাতে পাওয়া – আয়ত্তে পাওয়া
হাতের পাঁচ – শেষ সম্বল
হাতের পুতুল – যাকে দিয়ে ইচ্ছামতো কাজ করানো যায়
হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা – হেলায় সুযোগ হারানো
হাতে হাতে – সঙ্গে সঙ্গে, তৎক্ষণাৎ
হাঁপ ছেড়ে বাঁচা – শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়া
হাঁপাহাঁপি – অতিশয় ব্যস্ততা
হালে পানি পাওয়া – সুবিধা করা, বিপদমুক্ত হওয়া
হাড় কালি হওয়া – অত্যন্ত দুঃখকষ্ট ভোগ করা। অতিরিক্ত পরিশ্রমে নির্জীব হয়ে পড়া
হাড়কিপটে – অতি কৃপণ স্বভাববিশিষ্ট, হাড়কৃপণ
হাড়কৃপণ – অতি কৃপণ স্বভাববিশিষ্ট, হাড়কিপটে
হাড়জিরজিরে – কঙ্কালসার
হাড় জুড়ানো – স্বস্তি লাভ করা, শান্তি পাওয়া
হাড় জ্বালানো – ক্রমাগত জ্বালাতন করা
হাড়জ্বালানো – সারাক্ষণ জ্বালাতন বা উপদ্রব করে এমন
হাড়পাকা – পাকামিতে সিদ্ধহস্ত
হাড়ভাঙা – কঠোর ও শ্রমসাধ্য
হাড়হদ্দ – আগাগোড়া। নাড়িনক্ষত্র
হাড়হাভাতে – সম্পূর্ণ নিঃস্ব, লক্ষ্মীছাড়া
হাঁড়ি ঠ্যালা – রান্নাবান্নার মতো একঘেয়ে ও ক্লান্তিকর সাংসারিক দায়িত্ব পালন করা
হাঁড়ি ভাঙা – গোপন কথা প্রকাশ করা (হাটে হাঁড়ি ভাঙা)
হাঁড়ির খবর – ভেতরের খবর
হাড়ে দূর্বা গজানো – অত্যন্ত কুঁড়ে
হাড়ে বাতাস লাগা – শান্তি পাওয়া
হাড়ে হাড়ে চেনা – ভালোভাবে চেনা
হিমশিম খাওয়া – নাকাল হওয়া, নাজেহাল হওয়া
হিসাব করা – বিচারবিবেচনা করা
হিসাব দেওয়া – কৈফিয়ত দেওয়া
হীরার টুকরা – অতিশয় সৎস্বভাব বা প্রতিভাবান, অতি গুণবান
হেস্তনেস্ত – শেষ মীমাংসা, এসপার-ওসপার
হোমরাচোমরা – প্রভাব ও প্রতিপত্তিশালী, প্রবল ক্ষমতাসম্পন্ন। উচ্চপদস্থ ব্যক্তি